বাংলাদেশে যেকোনো সময় রাজনৈতিক পটপরিবর্তন হতে পারে বলে ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং যে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, তাঁর সেই বক্তব্য নাকচ করে দিয়েছেন ভারতের কয়েকজন সাবেক কূটনীতিক।
বাংলাদেশে ভারতের সাবেক হাইকমিশনার দেব মুখার্জি বলেন, ‘মনমোহনের এই আশঙ্কা ভিত্তিহীন এবং তা বাংলাদেশের বর্তমান রাজনীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। তিনি কেন এটা বলেছেন, তা তো আমি বলতে পারি না। আমি শুধু আমার অভিমত জানাতে পারি। আমি মনে করি, এগুলো ভিত্তিহীন, দুঃখজনক।’
দেব মুখার্জি গতকাল শুক্রবার বিবিসিকে বলেন, ‘উনি (মনমোহন) যা বলেছেন, তার কোনো ভিত্তি আমি খুঁজে পাই না। তিনি বাংলাদেশের ব্যাপারে, জামায়াতের ব্যাপারে, বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিবর্তনের ব্যাপারে যে দুটো-তিনটে মন্তব্য করেছেন, আমি বলি এগুলো ভিত্তিহীন। ভারত-বিরোধিতা ছেড়ে দিলাম, যদি আমরা বাংলাদেশে জামায়াতের অবস্থান দেখি, তাহলে দেখতে পাব, ১৯৮৬ সালের নির্বাচনে প্রথমবার জামায়াত পেয়েছিল ১ শতাংশ ভোট, ১৯৯৬ সালে পেয়েছিল ৮ শতাংশের কিছু বেশি, আর গতবার পেয়েছিল ৪ শতাংশ ভোট।’
দেব মুখার্জি আরও বলেন, ‘কাজেই দুঃখের সঙ্গে বলতে হয় যে ভারতের প্রধানমন্ত্রী তথ্যের ওপর ভিত্তি করে কথাগুলো বলেননি। আমি মনে করি, মন্তব্যগুলো দুর্ভাগ্যজনক।’
মনমোহনের মন্তব্যে কোনো সুদূরপ্রসারী প্রভাব পড়বে কি না, এ প্রসঙ্গে দেব মুখার্জি বলেন, ‘আমার মনে হয় না, এই মন্তব্যের কারণে কোনো সুদূরপ্রসারী প্রভাব পড়বে। আবার ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের ভালো সম্পর্ক—এ কথাও বলেছেন তিনি। কিন্তু বাংলাদেশের অভ্যন্তরে জামায়াতের কতটা প্রভাব, বা সেখানে হঠাৎ পরিবর্তনের যে সম্ভাবনার কথা তিনি বলেছেন, এটা বলা মনে হয় খুব সমীচীন ছিল না।’
দেব মুখার্জি বলেন, ‘বাংলাদেশে অতীতে পরিবর্তন এসেছে, তবে সাম্প্রতিক কালে তো এ রকম কোনো আশঙ্কা আমরা দেখি না। গত নির্বাচনে বাংলাদেশের মানুষ নিজেদের অভিমত খুব পরিষ্কারভাবে জানিয়েছে। মাঝে একটা সময় গিয়েছিল, দুই বছর বিভিন্ন কারণে রাজনীতিবিদদের পারস্পরিক অবিশ্বাসের কারণে সামরিক শক্তি সরকারে “ইনভলভ” হয়েছিল। তবে এখন এ ধরনের আশঙ্কার কথা ব্যক্ত করা সমীচীন ছিল না ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে।’
অপ্রাসঙ্গিক মন্তব্য—মতিয়া চৌধুরী: ভারতের প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্যের বিষয়ে কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী গতকাল বিবিসিকে বলেন, ‘মনমোহন বিস্তারিত কী বলেছেন, তা আমাদের জানা নেই।’ তবে গণমাধ্যমে যেটুকু খবর তিনি দেখেছেন, তাতে তাঁর কাছে এই মন্তব্য অপ্রাসঙ্গিক বলে মনে হয়েছে।
মতিয়া চৌধুরী বলেন, ‘ভারতের প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য যেটুকু কাগজে এসেছে, তাতে প্রাথমিকভাবে বলতে পারি, এটা অপ্রাসঙ্গিক (আউট অব কনটেক্সট)। আমার মনে হয়, এটার ব্যাখ্যা ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় দিতে পারবে।’
এ ব্যাপারে ব্যাখ্যা চাওয়া হবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘নিশ্চয়ই, যোগাযোগ করে জানতে চাওয়া হবে। এটাই স্বাভাবিক প্রতিবেশীর কাছে জানতে চাওয়া।’
ভুল-বোঝাবুঝির সৃষ্টি—ললিত মানসিংহ: নয়াদিল্লি প্রতিনিধি জানান, ভারতের সাবেক পররাষ্ট্রসচিব ললিত মানসিংহ বলেছেন, মনমোহনের বক্তব্য একটি সাধারণ মন্তব্য, যা ভুল-বোঝাবুঝির সৃষ্টি করেছে। তিনি বলেন, এ ধরনের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া হয়তো প্রত্যাশিত ছিল। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে ক্ষমতাসীন শেখ হাসিনা সরকারের সঙ্গে ভারত সরকারের বন্ধুত্বপূর্ণ এবং দুই দেশের মধ্যে গভীর সম্পর্ক রয়েছে।
অপ্রয়োজনীয় মন্তব্য—শ্রীরাধা: দিল্লিতে ইনস্টিটিউট ফর ডিফেন্স স্টাডিজ অ্যান্ড অ্যানালাইসিসের রিসার্চ ফেলো এবং বাংলাদেশ বিষয়ে বিশেষজ্ঞ শ্রীরাধা দত্ত বলেছেন, একটি নির্দিষ্টসংখ্যক বাংলাদেশি সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী মনমোহন যে মন্তব্য করেছেন, তা নিতান্ত অপ্রয়োজনীয়, বাস্তবতাবিবর্জিত। তিনি বলেন, দুই দেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক স্বাভাবিক রয়েছে। যখন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রী নিজে বাংলাদেশে সফর করতে যাচ্ছেন, ঠিক তার আগে এ ধরনের মন্তব্য করার কোনো প্রয়োজন ছিল না।
শ্রীরাধা বলেন, দুই দেশ সীমান্ত প্যাকেজ ও তিস্তার পানি বণ্টন নিয়ে চুক্তি করার লক্ষ্যে কাজ করছে। এমন পরিস্থিতিতে এ ধরনের মন্তব্য বাস্তব অবস্থার প্রতিফলন ঘটায় না।
এ মন্তব্যে বিস্মিত—বীনা সিক্রি: ইউএনবি জানায়, ঢাকায় ভারতের সাবেক হাইকমিশনার বীনা সিক্রি বলেছেন, ‘অন্য দেশের জনগণ সম্পর্কে এভাবে মন্তব্য করাকে আমি উচিত বলে মনে করি না।’ বাংলাদেশের এক-চতুর্থাংশ মানুষ জামায়াতে ইসলামীর সমর্থক বলে মনমোহন যে মন্তব্য করেছেন, সে প্রসঙ্গে বীনা সিক্রি বিস্ময় প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, কোত্থেকে এমন হিসাব পাওয়া গেল, তা তাঁর কাছে বিস্ময়ের বিষয়।
দ্য হিন্দু পত্রিকাকে বীনা সিক্রি বলেন, বাংলাদেশের মোট ভোটারের এক-তৃতীয়াংশ বিএনপির সমর্থক, এক-তৃতীয়াংশ আওয়ামী লীগের সমর্থক। বাকি ৩৩ শতাংশ ভোটার থাকেন সিদ্ধান্তহীন (ভাসমান ভোটার)। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের ২৫ শতাংশ মানুষ ভারতবিরোধী—আমি মনে করি এ কথা আপনি বলতে পারেন না। এর মানে কি এই দাঁড়ায় যে বেশির ভাগ বিএনপি-সমর্থক সেই দলের?’
বাংলাদেশে ভারতের সাবেক হাইকমিশনার দেব মুখার্জি বলেন, ‘মনমোহনের এই আশঙ্কা ভিত্তিহীন এবং তা বাংলাদেশের বর্তমান রাজনীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। তিনি কেন এটা বলেছেন, তা তো আমি বলতে পারি না। আমি শুধু আমার অভিমত জানাতে পারি। আমি মনে করি, এগুলো ভিত্তিহীন, দুঃখজনক।’
দেব মুখার্জি গতকাল শুক্রবার বিবিসিকে বলেন, ‘উনি (মনমোহন) যা বলেছেন, তার কোনো ভিত্তি আমি খুঁজে পাই না। তিনি বাংলাদেশের ব্যাপারে, জামায়াতের ব্যাপারে, বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিবর্তনের ব্যাপারে যে দুটো-তিনটে মন্তব্য করেছেন, আমি বলি এগুলো ভিত্তিহীন। ভারত-বিরোধিতা ছেড়ে দিলাম, যদি আমরা বাংলাদেশে জামায়াতের অবস্থান দেখি, তাহলে দেখতে পাব, ১৯৮৬ সালের নির্বাচনে প্রথমবার জামায়াত পেয়েছিল ১ শতাংশ ভোট, ১৯৯৬ সালে পেয়েছিল ৮ শতাংশের কিছু বেশি, আর গতবার পেয়েছিল ৪ শতাংশ ভোট।’
দেব মুখার্জি আরও বলেন, ‘কাজেই দুঃখের সঙ্গে বলতে হয় যে ভারতের প্রধানমন্ত্রী তথ্যের ওপর ভিত্তি করে কথাগুলো বলেননি। আমি মনে করি, মন্তব্যগুলো দুর্ভাগ্যজনক।’
মনমোহনের মন্তব্যে কোনো সুদূরপ্রসারী প্রভাব পড়বে কি না, এ প্রসঙ্গে দেব মুখার্জি বলেন, ‘আমার মনে হয় না, এই মন্তব্যের কারণে কোনো সুদূরপ্রসারী প্রভাব পড়বে। আবার ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের ভালো সম্পর্ক—এ কথাও বলেছেন তিনি। কিন্তু বাংলাদেশের অভ্যন্তরে জামায়াতের কতটা প্রভাব, বা সেখানে হঠাৎ পরিবর্তনের যে সম্ভাবনার কথা তিনি বলেছেন, এটা বলা মনে হয় খুব সমীচীন ছিল না।’
দেব মুখার্জি বলেন, ‘বাংলাদেশে অতীতে পরিবর্তন এসেছে, তবে সাম্প্রতিক কালে তো এ রকম কোনো আশঙ্কা আমরা দেখি না। গত নির্বাচনে বাংলাদেশের মানুষ নিজেদের অভিমত খুব পরিষ্কারভাবে জানিয়েছে। মাঝে একটা সময় গিয়েছিল, দুই বছর বিভিন্ন কারণে রাজনীতিবিদদের পারস্পরিক অবিশ্বাসের কারণে সামরিক শক্তি সরকারে “ইনভলভ” হয়েছিল। তবে এখন এ ধরনের আশঙ্কার কথা ব্যক্ত করা সমীচীন ছিল না ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে।’
অপ্রাসঙ্গিক মন্তব্য—মতিয়া চৌধুরী: ভারতের প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্যের বিষয়ে কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী গতকাল বিবিসিকে বলেন, ‘মনমোহন বিস্তারিত কী বলেছেন, তা আমাদের জানা নেই।’ তবে গণমাধ্যমে যেটুকু খবর তিনি দেখেছেন, তাতে তাঁর কাছে এই মন্তব্য অপ্রাসঙ্গিক বলে মনে হয়েছে।
মতিয়া চৌধুরী বলেন, ‘ভারতের প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য যেটুকু কাগজে এসেছে, তাতে প্রাথমিকভাবে বলতে পারি, এটা অপ্রাসঙ্গিক (আউট অব কনটেক্সট)। আমার মনে হয়, এটার ব্যাখ্যা ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় দিতে পারবে।’
এ ব্যাপারে ব্যাখ্যা চাওয়া হবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘নিশ্চয়ই, যোগাযোগ করে জানতে চাওয়া হবে। এটাই স্বাভাবিক প্রতিবেশীর কাছে জানতে চাওয়া।’
ভুল-বোঝাবুঝির সৃষ্টি—ললিত মানসিংহ: নয়াদিল্লি প্রতিনিধি জানান, ভারতের সাবেক পররাষ্ট্রসচিব ললিত মানসিংহ বলেছেন, মনমোহনের বক্তব্য একটি সাধারণ মন্তব্য, যা ভুল-বোঝাবুঝির সৃষ্টি করেছে। তিনি বলেন, এ ধরনের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া হয়তো প্রত্যাশিত ছিল। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে ক্ষমতাসীন শেখ হাসিনা সরকারের সঙ্গে ভারত সরকারের বন্ধুত্বপূর্ণ এবং দুই দেশের মধ্যে গভীর সম্পর্ক রয়েছে।
অপ্রয়োজনীয় মন্তব্য—শ্রীরাধা: দিল্লিতে ইনস্টিটিউট ফর ডিফেন্স স্টাডিজ অ্যান্ড অ্যানালাইসিসের রিসার্চ ফেলো এবং বাংলাদেশ বিষয়ে বিশেষজ্ঞ শ্রীরাধা দত্ত বলেছেন, একটি নির্দিষ্টসংখ্যক বাংলাদেশি সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী মনমোহন যে মন্তব্য করেছেন, তা নিতান্ত অপ্রয়োজনীয়, বাস্তবতাবিবর্জিত। তিনি বলেন, দুই দেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক স্বাভাবিক রয়েছে। যখন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রী নিজে বাংলাদেশে সফর করতে যাচ্ছেন, ঠিক তার আগে এ ধরনের মন্তব্য করার কোনো প্রয়োজন ছিল না।
শ্রীরাধা বলেন, দুই দেশ সীমান্ত প্যাকেজ ও তিস্তার পানি বণ্টন নিয়ে চুক্তি করার লক্ষ্যে কাজ করছে। এমন পরিস্থিতিতে এ ধরনের মন্তব্য বাস্তব অবস্থার প্রতিফলন ঘটায় না।
এ মন্তব্যে বিস্মিত—বীনা সিক্রি: ইউএনবি জানায়, ঢাকায় ভারতের সাবেক হাইকমিশনার বীনা সিক্রি বলেছেন, ‘অন্য দেশের জনগণ সম্পর্কে এভাবে মন্তব্য করাকে আমি উচিত বলে মনে করি না।’ বাংলাদেশের এক-চতুর্থাংশ মানুষ জামায়াতে ইসলামীর সমর্থক বলে মনমোহন যে মন্তব্য করেছেন, সে প্রসঙ্গে বীনা সিক্রি বিস্ময় প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, কোত্থেকে এমন হিসাব পাওয়া গেল, তা তাঁর কাছে বিস্ময়ের বিষয়।
দ্য হিন্দু পত্রিকাকে বীনা সিক্রি বলেন, বাংলাদেশের মোট ভোটারের এক-তৃতীয়াংশ বিএনপির সমর্থক, এক-তৃতীয়াংশ আওয়ামী লীগের সমর্থক। বাকি ৩৩ শতাংশ ভোটার থাকেন সিদ্ধান্তহীন (ভাসমান ভোটার)। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের ২৫ শতাংশ মানুষ ভারতবিরোধী—আমি মনে করি এ কথা আপনি বলতে পারেন না। এর মানে কি এই দাঁড়ায় যে বেশির ভাগ বিএনপি-সমর্থক সেই দলের?’
0 comments:
Post a Comment