Total Pageviews

Feedjit Live

This is default featured post 1 title

Go to Blogger edit html and find these sentences.Now replace these sentences with your own descriptions.This theme is Bloggerized by Lasantha Bandara - Premiumbloggertemplates.com.

This is default featured post 2 title

Go to Blogger edit html and find these sentences.Now replace these sentences with your own descriptions.This theme is Bloggerized by Lasantha Bandara - Premiumbloggertemplates.com.

This is default featured post 3 title

Go to Blogger edit html and find these sentences.Now replace these sentences with your own descriptions.This theme is Bloggerized by Lasantha Bandara - Premiumbloggertemplates.com.

This is default featured post 4 title

Go to Blogger edit html and find these sentences.Now replace these sentences with your own descriptions.This theme is Bloggerized by Lasantha Bandara - Premiumbloggertemplates.com.

This is default featured post 5 title

Go to Blogger edit html and find these sentences.Now replace these sentences with your own descriptions.This theme is Bloggerized by Lasantha Bandara - Premiumbloggertemplates.com.

Friday, December 30, 2011

উত্তর কোরিয়ার সেনাবাহিনীর সর্বোচ্চ নেতা উন

undefined
উত্তর কোরিয়ার নতুন নেতা কিম জং-উনকে আনুষ্ঠানিকভাবে সেনাবাহিনীর সর্বোচ্চ নেতা ঘোষণা করা হয়েছে। রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে এ খবর জানানো হয়েছে।
দেশটির প্রয়াত নেতা কিম জং-ইলের মৃত্যুর পরপরই তাঁর ছোট ছেলে কিম জং-উনকে উত্তরসূরি হিসেবে ঘোষণা করা হয়। গতকাল শুক্রবার উত্তর কোরিয়ার ক্ষমতাসীন ওয়ার্কার্স পার্টির এক সভায় নতুন নেতা উনকে দেশটির সেনাবাহিনীর সর্বোচ্চ নেতা হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়।
রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা কেসিএনএ নিউজ জানিয়েছে, গতকাল শুক্রবার ওয়ার্কার্স পার্টির সভায় কিম জং-উনকে কোরিয়ার পিপলস আর্মির সর্বোচ্চ কমান্ডার পদ দেওয়া হয়। বাবা কিম জং-ইলের লিখিত ইচ্ছা অনুসারে কিম জং-উনকে এই পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। গত ৮ অক্টোবর প্রয়াত কিম জং-ইল এই দলিল লিখে যান।
বিশ্লেষকদের মতে, এই পদক্ষেপের মধ্য দিয়ে তরুণ নেতা কিম জং-উন উত্তর কোরিয়ার ক্ষমতায় নিজের অবস্থান সুসংহত করলেন।
১৭ ডিসেম্বর কিম জং-ইল হূদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। গত বৃহস্পতিবার তাঁর অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন হয়।

আলোচনায় গাদ্দাফি-ওসামা-মোবারক

আন্তর্জাতিক নানা ঘটনায় ঘটনাবহুল ছিল ২০১১ সালটি। আরব বসন্ত নামে যে গণজাগরণ শুরু হয় তার ঢেউ লাগে আরববিশ্ব ছাড়িয়ে বিশ্বজুড়ে। যুক্তরাষ্ট্রে শুরু হয় ওয়াল স্ট্রিটবিরোধী আন্দোলন।
পরবর্তীকালে অন্যান্য দেশেও পুঁজিবাদবিরোধী বিক্ষোভ শুরু হয়। ওসামা বিন লাদেন হত্যা, জাপানের ভূমিকম্প ও সুনামিও ছিল আলোচনায়। এ ছাড়া বিশ্ব মানচিত্রে অভ্যুদয় ঘটে দক্ষিণ সুদান নামে নতুন একটি রাষ্ট্রের। মানুষের মুখে মুখে থাকা বছরের আলোচিত কিছু ঘটনা নিয়ে সালতামামি।

তিউনিসিয়ার প্রেসিডেন্টের পলায়ন
২৩ বছর ক্ষমতায় থাকার পর এ বছরের ১৪ জানুয়ারি আন্দোলনের মুখে পদত্যাগে বাধ্য হন তিউনিসিয়ার প্রেসিডেন্ট বেন আলী। আরব বসন্তের প্রথম শিকার তিনি। প্রেসিডেন্ট বেন আলীর অত্যাচারে প্রতিবাদ জানাতে ২০১০ সালের ১৭ ডিসেম্বর নিজের শরীরে আগুন ধরিয়ে আত্মাহুতি দেন দেশটির সবজি বিক্রেতা মোহাম্মদ বুয়াজিজি। বুয়াজিজির প্রতিবাদ থেকেই ‘আরব বসন্ত’ নামে গণজাগরণের সূচনা। দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হন তিউনিসিয়ার প্রেসিডেন্ট বেন আলী। এরপর এই গণজাগরণের জোয়ার একে একে মিসর, লিবিয়া, ইয়েমেন, সিরিয়া ও বাহরাইনে ছড়িয়ে পড়ে।

আন্দোলনের মুখে হোসনি মোবারকের পদত্যাগ
গণ-অভ্যুত্থানের মুখে ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হওয়া আরব বিশ্বের দ্বিতীয় নেতা মিসরের প্রেসিডেন্ট হোসনি মোবারক। এতে অবসান ঘটে দীর্ঘ ৩০ বছরের শাসনের। গণবিক্ষোভ শুরু হওয়ার কয়েক দিনের মাথায় সরকার ভেঙে দিয়ে ২৯ জানুয়ারি তানতাওয়িকে উপপ্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করেন মোবারক। কিন্তু এর পরও আন্দোলন থেমে থাকেনি। ১৮ দিন টানা আন্দোলনে চলতে থাকে। অবশেষে ১১ ফেব্রুয়ারি দিনব্যাপী লাখো মানুষের বিক্ষোভের মুখে ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হন মোবারক। কায়রোর প্রেসিডেন্ট প্রাসাদ ছেড়ে যান তিনি। কায়রোর তাহেরির স্কয়ারে উল্লাসে ফেটে পড়ে বিক্ষোভকারীরা।
মোবারকের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, তিনি মিসরে স্বৈরশাসন চালিয়েছেন দীর্ঘ ৩০ বছর। এই পুরো সময়ই তিনি জারি করে রাখেন জরুরি অবস্থা, নিষিদ্ধ করেছেন বিরোধী সব রাজনৈতিক দল। গড়ে তোলেনে অবৈধ সম্পদের পাহাড়।

প্রেসিডেন্ট সালেহর ক্ষমতার অবসান
ইয়েমেনে প্রায় ৩৩ বছর ধরে ক্ষমতাসীন ছিলেন প্রেসিডেন্ট আলী আবদুল্লাহ সালেহ। তাঁকে হটানোর দাবিতে গত জানুয়ারিতে আন্দোলন শুরু হয়। দেশটির পার্লামেন্টর বিরোধী জোট দ্য কমন ফোরাম প্রেসিডেন্ট সালেহর নিপীড়ন, জুলুম আর দুর্নীতির অভিযোগ এনে এ আন্দোলনের নেতৃত্ব দেয়।
আন্দোলনের মুখে গত ২৩ নভেম্বর প্রতিবেশী দেশগুলোর মধ্যস্থতায় শর্তসাপেক্ষে ক্ষমতা ছাড়তে রাজি হন প্রেসিডেন্ট সালেহ। চুক্তি অনুযায়ী প্রেসিডেন্ট সালেহ ভাইস প্রেসিডেন্ট আবদ্রবুহ মানসুর হাদির কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন। মধ্যপ্রাচ্যের চতুর্থ শাসক হিসেবে গণদাবির মুখে পদ ছাড়তে বাধ্য হচ্ছেন তিনি। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমতা ছাড়েননি। দেশটিতে সম্প্রতি জাতীয় ঐকমত্যের সরকার গঠিত হয়েছে।
সালেহ-বিরোধী আন্দোলনের সময় সালেহর বাহিনীর দমন পীড়নে অনেক বিক্ষোভকারী নিহত হয়। ইয়েমেনে শান্তি প্রতিষ্ঠায় আন্দোলনের জন্য এ বছর শান্তিতে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন তাওয়াক্কুল কারমেল। নতুন বছরের ১২ ফেব্রুয়ারি দেশটির নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

গৃহযুদ্ধের হুমকিতে সিরিয়া
জাতিসংঘের তথ্যমতে, আট মাস ধরে চলা এই আসাদ-বিরোধী আন্দোলনে সরকারি বাহিনীর হাতে নিহত ব্যক্তির সংখ্যা তিন হাজার ছাড়িয়ে গেছে। যদিও সিরিয়ার সরকারের দাবি, তাদের এক হাজার ১০০ নিরাপত্তাকর্মী নিহত হয়েছে।
সিরিয়ায় অধিকার প্রতিষ্ঠার এ আন্দোলন দেশটিতে গৃহযুদ্ধের আশঙ্কা জাগিয়ে তুলেছে। সিরিয়ায় চলমান দমন-পীড়ন এবং হত্যাযজ্ঞের ফলে দেশটি পূর্ণমাত্রায় গৃহযুদ্ধের দিকে মোড় নিচ্ছে। ক্রমেই সশস্ত্র সংগ্রামের দিকে ধাবিত হচ্ছে এ আন্দোলন। আন্দোলনকারীরা এখন বিক্ষোভের পরিবর্তে প্রেসিডেন্ট আল-আসাদ সরকারের বিরুদ্ধে সশস্ত্র সংগ্রামে অংশ নিতে হন্য হয়ে অস্ত্র খুঁজছে। অন্যদিকে সপক্ষ ত্যাগ করা বিদ্রোহী সেনারাও বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে যোগ দিয়েছে। এর মধ্যেই অনেক নিরাপত্তাকর্মী সপক্ষ ত্যাগ করেছেন। আসাদের অনুগত বাহিনী সপক্ষ ত্যাগ করে বিদ্রোহীদের সঙ্গে যোগ দেওয়ায় দেশটির পরিস্থিতি আরও জটিল আকার ধারণ করেছে।

ওসামা বিন লাদেনের মৃত্যু
গত ২ মে পাকিস্তানে মার্কিন সশস্ত্র বাহিনীর একটি চৌকস দল মাত্র ৪০ মিনিটের অভিযানে হত্যা করে ওসামা বিন লাদেনকে। ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বরে সন্ত্রাসী হামলায় ধসে পড়ে যুক্তরাষ্ট্রের গর্বের প্রতীক নিউইয়র্কের বিশ্ব বাণিজ্য কেন্দ্র। এ ঘটনার পরই ওসামা হয়ে ওঠেন যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় শত্রু। এরপর ১০ বছর লাদেনের টিকিটিও ছুঁতে পারেনি যুক্তরাষ্ট্র।
মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থার নজরদারি এড়িয়ে পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদ থেকে ৬০ কিলোমিটার উত্তরে অ্যাবোটাবাদের বিশাল একটি বাড়িতে বসবাস করতেন তিনি। বাড়িটি থেকে কয়েক গজ দূরে পাকিস্তান মিলিটারি একাডেমি। আশপাশের বাড়িগুলোতে থাকেন অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তারা। তিনতলা বাড়িটির চারপাশে ১০ থেকে ১২ ফুট উচ্চতার সীমানা প্রাচীর।
গোপন সূত্রের কাছে খবর পেয়ে লাদেনের অবস্থানের ব্যাপারে তদন্ত শুরু করেন মার্কিন গোয়েন্দা বাহিনী। লাদেনের অবস্থান নিশ্চিত হওয়ার পর পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ২ মে পাকিস্তানের স্থানীয় সময় রাত পৌনে দুইটার দিকে ওই বাড়িতে অভিযান চালায় মার্কিন নেভি সিলের ছোট্ট একটি দল। চারটি হেলিকপ্টার নিয়ে সেখানে তারা অবতরণ করে। এরপর মার্কিন বাহিনী ঢুকে পড়ে বাড়িটির নিরাপত্তা বলয়ের মধ্যে। মার্কিন কর্তৃপক্ষের দাবি অনুযায়ী, লাদেন ও তাঁর সঙ্গীরা গুলি ছোড়ে মার্কিন সেনাদের লক্ষ্য করে। ৪০ মিনিটের মতো দুই পক্ষে গোলাগুলি চলে। এতেই নিহত হন যুক্তরাষ্ট্রের আতঙ্ক আল-কায়েদা নেতা ওসামা বিন লাদেন। মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান তিনি।
শেষ পর্যন্ত লাদেনকে হত্যার মাধ্যমে শত্রুর বিরুদ্ধে লড়াইয়ের অবসান ঘটায় যুক্তরাষ্ট্র। লাদেনকে হত্যার পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভাষ্য ছিল—ন্যায়বিচার করেছে তারা। অন্যদিকে লাদেনের মৃত্যু সত্ত্বেও লড়াই চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার করে আল-কায়েদা।

ভূমিকম্প ও সুনামিতে বিধ্বস্ত জাপান
১১ মার্চ আঘাত হানা প্রচণ্ড ভূমিকম্পের মধ্যে দিয়ে শুরু হয়েছিল জাপানের সাম্প্রতিক সময়ের সবচেয়ে ভয়াবহ সংকট। ভূমিকম্পের আঘাতে হতবিহ্বল মানুষ দুর্যোগের ব্যাপকতা বুঝে ওঠার আগেই সুনামির ঢেউ, ভাসিয়ে নিয়ে যায় বাড়িঘর, গাছপালা, যানবাহন, দৈনন্দিন ব্যবহারের নানা জিনিসপত্রসহ উপকূল এলাকায় বসবাসরত কয়েক হাজার নারী-পুরুষ আর শিশুকে। ক্ষয়ক্ষতির দিক থেকে সুনামির ব্যাপকতা ছিল ভূমিকম্পের চেয়েও অনেক বেশি।
জাপানে উত্তর-পূর্ব উপকূলে স্মরণকালের শক্তিশালী নয় দশমিক এক মাত্রার ভূমিকম্পের পর আঘাত হানে ভয়াবহ সুনামি। এ সময় প্রায় ৩৩ ফুট উচ্চতার ঢেউয়ে তছনছ হয়ে যায় উপকূলীয় অঞ্চল। ফুকুশিমা-১, ফুকুশিমা-২ পারমাণবিক বিদ্যুেকন্দ্রে বিস্ফোরণে বেশ কয়েকটি চুল্লিতে আগুন ধরে যায়। এর ফলে তেজস্ক্রিয়াতা ছড়িয়ে পড়ে বিভিন্ন এলাকায় । মোট ২০ হাজারের মতো মানুষ মারা যায় এ দুর্যোগে।
জাপানের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থার হিসাব মতে, ভূমিকম্প ও সুনামিতে আংশিক ও সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত ঘর-বাড়ির সংখ্যা ছিল প্রায় ৬৩ হাজার। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় মিয়াগি, ফুকুশিমা, ইওয়াতে অঞ্চলে। বিদ্যুত্হীন হয়ে পড়ে ২০ লাখ ঘর-বাড়ি।

লৌহমানব গাদ্দাফির মৃত্যু
৪২ বছর দেশ শাসনের পর ২০ অক্টোবর বিদ্রোহীদের গুলিতে নিহত হন লিবিয়ার লৌহমানব কর্নেল মুয়াম্মার গাদ্দাফি। ক্ষমতা ছাড়তে রাজি না হওয়ায় এ বছরের ২০ মার্চ গাদ্দাফি-শাসিত লিবিয়ায় হামলা চালায় ন্যাটো বাহিনী। তবে পিছু না হটে তিনি ঘোষণা দিয়েছিলেন, ‘আমি যোদ্ধা, লড়তে লড়তে যুদ্ধ ক্ষেত্রেই মরতে চাই।’ শেষ পর্যন্ত যুদ্ধরত অবস্থায় মারা যান তিনি।
১৯৬৯ সালে রক্তপাতহীন একটি অভ্যুত্থানের মাধ্যমে দেশের ক্ষমতা দখল করেন সেনাবাহিনীর তত্কালীন ক্যাপ্টেন মুয়াম্মার গাদ্দাফি। তখন তাঁর বয়স ছিল মাত্র ২৭ বছর। ক্রমে সমাজতন্ত্র ও ইসলামি আদর্শের মিশেলে এক নিজস্ব রাজনৈতিক মতবাদ গড়ে তোলেন তিনি। টানা ৪২ বছর শাসন করেন গাদ্দাফি। এ বছরের প্রথম দিকে আরব বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো লিবিয়ায়ও সরকারবিরোধী আন্দোলন শুরু হয়। কয়েক মাসের আন্দোলন ও সশস্ত্র যুদ্ধের পর অবশেষে গত ২৩ আগস্ট ত্রিপোলির পতন ঘটে। এরপর আত্মগোপনে চলে যান ৬৯ বছর বয়সী গাদ্দাফি। এ বছরের ২০ অক্টোবর তাঁর অনুগত বাহিনীসহ গাড়িবহর নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় তাঁর গাড়িবহরে বিমান হামলা চালায় ন্যাটো বাহিনী। এ সময় তিনি মারা যান। কিন্তু কীভাবে কিংবা কার হাতে তিনি মারা যান, সে বিষয় নিয়ে এখনো বিতর্ক রয়েছে। মৃত্যুর পর গোপন স্থানে তাঁর লাশ দাফন করা হয়।

দক্ষিণ সুদানের স্বাধীনতা লাভ
গত ৯ জুলাই পৃথিবীর বুকে একটি স্বাধীন দেশ হিসেবে জন্ম নেয় দক্ষিণ সুদান। ১৯৩তম স্বাধীন দেশ হিসেবে জাতিসংঘের স্বীকৃতি লাভ করে দেশটি। দেশটির আয়তন দুই লাখ ৩৯ হাজার ২৮৫ মাইল। রাজধানী জুবা। দেশটির সরকারি ভাষা ইংরেজি। এ ছাড়া জুবার আশপাশে ‘জুবা আরবি’ ভাষা প্রচলিত। দেশটির মুদ্রা সুদানি পাউন্ড। দেশটির ২০০৮ সালের আদমশুমারি তথ্য অনুযায়ী দক্ষিণ সুদানের জনসংখ্যা ৮২ লাখ ৬০ হাজার ৪৯০ জন। জুবা দেশটির সবচেয়ে বড় শহর।
কয়েক দশক ধরে উত্তরের সঙ্গে গৃহযুদ্ধ চলে দক্ষিণ সুদানের। ২০০৫ সালে শান্তি চুক্তিতে সই করে দক্ষিণ সুদান। এরপর ২০০৫ সালের ৯ জুলাই স্বায়ত্তশাসন লাভ করে। দেশটির পূর্বে ইথিওপিয়া, দক্ষিণে কেনিয়া, উগান্ডা ও কঙ্গো। পশ্চিমে সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিকান ও উত্তরে সুদান। দক্ষিণ সুদানের অর্থনীতি বর্তমানে অনেকাংশে তেলের ওপর নির্ভরশীল। অবিভক্ত সুদানের ৭৫ শতাংশ তেলের মজুদই দক্ষিণ সুদানে আছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ ছাড়া দেশটি আন্তর্জাতিক বাজারে কাঠ রপ্তানি করে থাকে। prothom-alo

Sunday, December 25, 2011

পরাশক্তির দেশে ক্ষমতা বদলের হাওয়া

বিশ্ব রাজনীতির জন্য ২০১২ সাল বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। জাতিসংঘের পাঁচটি স্থায়ী সদস্য রাষ্ট্রের মধ্যে চারটিতেই ক্ষমতাকেন্দ্রে বদলের হাওয়া বইছে। পরাশক্তির দেশে নেতৃত্বের আসন্ন এই পরিবর্তনে বদলে যেতে পারে বিশ্ব রাজনীতি ও অর্থনীতি।
আগামী বছরের ৬ নভেম্বর যুক্তরাষ্ট্রে, ২২ এপ্রিল ও ৬ মে ফ্রান্সে এবং ৪ মে রাশিয়ায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এ ছাড়া চীনে আগামী বছরের অক্টোবরে অনুষ্ঠিত হবে ক্ষমতাসীন দলের পার্টি কংগ্রেস। ওই কংগ্রেসের মাধ্যমে চীনের প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রী পদে পরিবর্তনের পাশাপাশি বেইজিংয়ের ক্ষমতা কাঠামোতে আসবে এক ঝাঁক নতুন নেতৃত্ব।
পরিবর্তনের এই হাওয়ায় কার ভরাডুবি ঘটবে, কে হবেন নতুন নেতা, নতুনদের নীতি কেমন হবে, বিশ্ব রাজনীতি ও অর্থনীতিতে সম্ভাব্য এই পরিবর্তনের প্রভাব কী হবে—এসব নিয়ে চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ।
বিশ্লেষকদের মতে, আগামী বছর যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, রাশিয়া ও চীনের নেতৃত্ব তাঁদের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি নিয়ে ব্যস্ত থাকবেন। ফলে অর্থনৈতিক সংকট ও জলবায়ু পরিবর্তনের মতো গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক ইস্যুতে এই রাষ্ট্রগুলোর ভূমিকা হবে সংকীর্ণ। এতে করে আন্তর্জাতিক রাজনীতি, অর্থনীতি ও বৈশ্বিক স্থিতিশীলতার অগ্রগতিতে অচলাবস্থা দেখা দিতে পারে। এ কারণেই বিশ্লেষকেরা একে একটি উদ্বেগ হিসেবে বিবেচনা করছেন।
বিশ্লেষকদের মতে, ২০১২ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে সামনে রেখে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ব্যস্ত সময় কাটাবেন। ফলে তাঁর পক্ষে বাণিজ্য বা জলবায়ু বিষয়ে কোনো নতুন আন্তর্জাতিক চুক্তিতে অবতীর্ণ হওয়াটা কঠিন হয়ে পড়বে। তা ছাড়া এসব বিষয় নিয়ে তিনি প্রতিপক্ষের বিরোধিতার মুখেও পড়বেন।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান দলের সম্ভাব্য মনোনয়নপ্রত্যাশী মিট রমনে ইতিমধ্যে ঘোষণা দিয়েছেন, ক্ষমতায় গেলে এবং চীন তাদের মুদ্রানীতিতে পরিবর্তন না করলে, বেইজিংয়ের ব্যাপারে তিনি কঠোর হবেন।
বর্তমানে ওয়াশিংটন ও বেইজিংয়ের মধ্যে বিভিন্ন বিষয়ে মতপার্থক্য থাকলেও চীনের বর্তমান নেতৃত্বের ওপর ওবামার কিছুটা হলেও আস্থা আছে। তবে দেশটির বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ও প্রেসিডেন্ট ২০১২ সালের শেষ নাগাদ নতুনদের কাছে তাঁদের দায়িত্ব ছেড়ে দেবেন। শুধু তা-ই নয়, এই সময়ে চীনের প্রায় ৭০ শতাংশ নেতৃত্বে পরিবর্তন আসবে। চীনের ক্ষমতা কাঠামোতে আসন্ন এই পরিবর্তন পশ্চিমাদের ভাবিয়ে তুলেছে। কারণ, আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নতুন নেতৃত্ব যেমন পরিচিত নয়, তেমনি তাঁরা অধিক জাতীয়তাবাদী ও রক্ষণশীল বলেই পরিচিত।
রাশিয়ার ক্ষমতায়ও পরিবর্তন আসন্ন। সেখানে আসছে পুতিনবাদ। আগামী মার্চে দেশটিতে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ভ্লাদিমির পুতিন আবারও ক্রেমলিনে ফিরে আসার স্বপ্নে বিভোর। বর্তমান প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভ আগেই ঘোষণা দিয়েছেন, তিনি ওই নির্বাচনে প্রার্থী হচ্ছেন না। ফলে দেশটির ক্ষমতায় পরিবর্তন নিশ্চিত। রাশিয়ার ক্ষমতায় পরিবর্তন আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে বড় ধরনের প্রভাব ফেলবে বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।
মেদভেদেভের পররাষ্ট্রনীতি বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি তাঁর মনোভাব অপেক্ষাকৃত নমনীয়। ন্যাটোর নেতৃত্বাধীন লিবিয়া অভিযানের ব্যাপারে প্রেসিডেন্ট মেদভেদেভের বিরোধিতা ছিল অপেক্ষাকৃত নরম প্রকৃতির। তবে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পুতিন এ অভিযানের তীব্র বিরোধিতা করেছেন।
প্রেসিডেন্ট হিসেবে বিশ্ববাসীর কাছে মেদভেদেভ এটা পরিষ্কার করেছেন যে তিনি আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়তে আগ্রহী। তবে স্পষ্টত এ ব্যাপারে পুতিনের অবস্থান পুরোপুরি বিপরীত।
চলমান ইউরো সংকট সমাধানের ক্ষেত্রে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট নিকোলাস সারকোজি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন। আগামী বছরই দেশটিতে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। দেশের রাজনীতিতে সারকোজির অবস্থান খুব একটা সুবিধাজনক নয়। নির্বাচনে সারকোজির ভরাডুবি ঘটলে ইউরোপের রাজনীতি ও অর্থনীতিতেও তার প্রভাব পড়বে।
জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের আরেক স্থায়ী সদস্য ব্রিটেনের পার্লামেন্ট নির্বাচনের এখনো অনেক দেরি। তবে দেশটির বর্তমান ক্ষমতাসীন জোটের ঐক্য খুব একটা মজবুত নয়। সেখানেও অঘটন ঘটতে পারে যেকোনো সময়। সব মিলিয়ে সামনে বিশ্ব রাজনীতির জন্য অপেক্ষা করছে এক অনিশ্চয়তার বছর।—দ্য ইকনোমিস্ট অবলম্বনে। প্রথম আলো

Wednesday, December 14, 2011

একাত্তরের চিঠিগুলোর কী উত্তর দেব আমরা?

মৃত্যুর আগে কেউই জানে না জীবনের মূল্য ও পরিণতি। কিন্তু শহীদ মুক্তিযোদ্ধারা জেনেছিলেন। চিঠিটা পড়ুন:

‘‘প্রিয় আব্বাজান! টেকেরঘাট হইতে
তাং-৩০/৭/৭১
আমার সালাম নিবেন। আশা করি খোদার কৃপায় ভালই আছেন। বাড়ির সকলের কাছে আমার শ্রেণীমত সালাম ও স্নেহ রইলো। বর্তমানে যুদ্ধে আছি। আলীরাজা, মাহতাব, রওশন, রুনু, ফুলমিয়া, ইব্রাহিম সকলেই একত্রে আছি। দেশের জন্য আমরা সকলেই জান কোরবান করিয়াছি। আমাদের জন্য ও দেশ স্বাধীন হওয়ার জন্য দোয়া করবেন। আমি জীবনকে তুচ্ছ মনে করি, কারণ দেশ স্বাধীন না হইলে জীবনের কোন মূল্য থাকিবে না। তাই যুদ্ধকে জীবনের পাথেয় হিসাবে নিলাম।
আমার অনুপস্থিতিতে মাকে কষ্ট দিলে আমি আপনাদের ক্ষমা করিব না। পাগলের সব জ্বালা সহ্য করিতে হইবে। চাচা-মামাদের ও বড় ভাইদের নিকট আমার ছালাম। বড় ভাইকে চাকুরীতে যোগ দিতে নিষেধ করিবেন। জীবনের চেয়ে চাকুরী বড় নয়। দাদুকে দোয়া করিতে বলিবেন। মৃত্যুর মুখে আছি। যে কোন সময় মৃত্যু হইতে পারে এবং মৃত্যুর জন্য সর্বদা প্রস্তুত আছি। দোয়া করিবেন মৃত্যু হইলেও যেন দেশ স্বাধীন হয়। তখন দেখবেন লাখ লাখ ছেলে বাংলার বুকে পুত্র হারাকে বাবা বলে ডাকবে। এই ডাকের অপেক্ষায় থাকুন। আর আমার জন্য চিন্তার কোন কারণ নাই। আপনার দুই মেয়েকে পুরুষের মত শিক্ষায় শিক্ষিত করে তুলবেন। তবেই আপনার সকল সাধ মিটে যাবে।
দেশবাসী! স্বাধীন বাংলা কায়েমের জন্য দোয়া কর। মীরজাফরী করিও না, কারণ মুক্তিফৌজ তোমাদেরকে মাফ করিবে না এবং এই বাংলায় তোমাদের জায়গা দেবে না।
সালাম! দেশবাসী সালাম!
ইতি, মোঃ সিরাজুল ইসলাম, ৩০-৭-৭১ ইং’’

এর আট দিন পর কিশোরগঞ্জের গুরুদয়াল কলেজের ছাত্র সিরাজ সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জের যুদ্ধের কমান্ডার হিসেবে জয়ী হন; কিন্তু সেটাই ছিল তাঁর শেষ যুদ্ধ। জয়ের উচ্ছ্বাসে স্লোগান দিতে গিয়ে অসাবধানে পজিশন ছেড়ে দাঁড়িয়ে পড়েন, ঠিক তখনই পলায়মান শত্রুর ‘কাভারিং ফায়ারের’ একটি বুলেট এসে লাগল তাঁর চোখে। চিকিৎসার জন্য মিত্র বাহিনীর হেলিকপ্টারে ভারতে নেওয়ার পথেই শেষ নিঃশ্বাস নির্গত হয়। সন্ধ্যায় খাসিয়া পাহাড়ের কোলে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের ‘নো ম্যান্স ল্যান্ড’-এর কাছাকাছি টেকেরঘাটে পূর্ণ সামরিক মর্যাদায় তাঁকে সমাহিত করা হয়। পরাধীন দেশের মাটি তিনি পাননি, কিন্তু স্বাধীনতার পরও কেন এক শহীদ বীরপ্রতীককে পড়ে থাকতে হবে সীমান্তের ওপারের নো ম্যান্স ল্যান্ডে?
প্রাণের চেয়ে বড় দান আর হয় না। তবে সাহিত্যিক বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় মনে করতেন, প্রাণের চেয়ে বড় দান আছে, তা হলো দেশভক্তি। সিরাজ দেশের জন্য প্রাণ ও ভক্তি দুটোই দিয়েছিলেন। তাই তো বলতে পারেন, ‘আমি জীবনকে তুচ্ছ মনে করি, কারণ দেশ স্বাধীন না হইলে জীবনের কোন মূল্য থাকিবে না। তাই যুদ্ধকে জীবনের পাথেয় হিসাবে নিলাম।’ সে সময় তাঁরা আত্মদানের মতো বিমূর্ত ভাষা বলতেন না, বলতেন ‘জান কোরবান’ করার কথা।
ছোট্ট একটি চিঠি, কিন্তু কেবল নিষ্ঠার শুদ্ধতাতেই নয়, নীতির শক্তিতেও অসামান্য। একাত্তরের চিঠির বেশির ভাগ চিঠিই মাকে সম্বোধন করা (প্রথমা প্রকাশন, ২০০৯)। সেই মা কেবল ব্যক্তিগত মা নন, যোদ্ধা ছেলে নিজে যেমন দেশের সন্তান হয়ে ওঠে, তেমনি জননীকেও ভাবে দেশমাতৃকার আদলে। ১৯ নভেম্বর, ১৯৭১ ‘যুদ্ধখানা হইতে তোমার পোলা’ নুরুল হক মাকে লেখেন, ‘আমার মা, আশা করি ভালোই আছ। কিন্তু আমি ভালো নাই। তোমায় ছাড়া কীভাবে ভালো থাকি! তোমার কথা শুধু মনে হয়। আমরা ১৭ জন। তার মধ্যে ছয়জন মারা গেছে, তবু যুদ্ধ চালাচ্ছি। শুধু তোমার কথা মনে হয়, তুমি বলেছিলে, “খোকা মোরে দেশটা স্বাধীন আইনা দে,’’ তাই আমি পিছুপা হই নাই, হবো না, দেশটাকে স্বাধীন করবই। রাত শেষে সকাল হইব, নতুন সূর্য উঠব, নতুন একটা বাংলাদেশ হইব...।’ জাতীয়তাবাদী সংগ্রামে দেশমাতা আর জন্মদায়িনী যখন একাকার, তখন মায়ের ছেলেরাও অনায়াসে দেশের ছেলে হয়ে যায়।
কিন্তু সিরাজ মাকে সম্বোধন করে লিখতে পারেননি, কারণ মা ‘পাগল’। যোদ্ধা পুত্র তাই বাবাকে সম্বোধন করে লেখেন। তাতেও তাঁর উদ্বেল হূদয় তৃপ্ত হয় না; চিঠিটার শেষে তিনি দেশবাসীকেই ডাকেন:
‘দেশবাসী! স্বাধীন বাংলা কায়েমের জন্য দোয়া কর। মীরজাফরী করিও না, কারণ মুক্তিফৌজ তোমাদেরকে মাফ করিবে না এবং এই বাংলায় তোমাদের জায়গা দেবে না।’
পরিবারের দায়িত্ব হিসেবে বাবাকে যা বলেন, তা অসাধারণ।
‘আমার অনুপস্থিতিতে মাকে কষ্ট দিলে আমি আপনাদের ক্ষমা করিব না। পাগলের সব জ্বালা সহ্য করিতে হইবে।’
ভাইয়ের নিরাপত্তা নিয়ে এক বাক্যের উদ্বেগের পরই বোনদের বিষয়ে বলেন, ‘আপনার দুই মেয়েকে পুরুষের মত শিক্ষায় শিক্ষিত করে তুলবেন। তবেই আপনার সকল সাধ মিটে যাবে।’
একাত্তরের চেতনার দলিল ইতিহাসে যত না, তার থেকে বেশি মিলবে মুক্তিযোদ্ধাদের এসব চিঠিতে। চিঠিটা তিনি শেষ করেন জাতির প্রতি ডাক দিয়ে:
‘দেশবাসী! স্বাধীন বাংলা কায়েমের জন্য দোয়া কর। মীরজাফরী করিও না, কারণ মুক্তিফৌজ তোমাদেরকে মাফ করিবে না এবং এই বাংলায় তোমাদের জায়গা দেবে না।’
পরিবার ও দেশের জন্য তাঁর এই নির্দেশনার মধ্যেই স্বাধীন বাংলাদেশের সত্যিকার মুক্তির শর্ত নিহিত ছিল। কিন্তু একাত্তরের পরের ইতিহাস সেই সব নির্দেশনা অমান্য করারই ইতিহাস।
যে ‘যুদ্ধকে জীবনের পাথেয় করে’ নিয়েছিলেন সিরাজরা, সেই যুদ্ধ পেরিয়ে তাঁরা আসতে পারেননি বর্তমানে। কিন্তু তাঁদের কৃতকর্ম, তাঁদের স্মৃতি ও চিঠির অস্তিত্ব এক নিত্য বর্তমানে। যখনই পড়ি এই চিঠিগুলো, মনে ভাসে বাংকারে শায়িত, অথবা অন্ধকারে নদী পেরোনো অথবা প্রশিক্ষণ শিবিরের তাঁবুতে রাত জাগা কোনো যুবকের ছবি। জীবিতের ক্ষয় আছে, শহীদেরা অক্ষয়, তাঁদের বয়স কখনো বাড়ে না। একাত্তরের চল্লিশ বছর পরও তাঁরা যুবকই রয়ে যান আমাদের মনে।
দেশটা বধ্যভূমিময়। আজকের তরুণ, যে মাটিতেই পা রাখো, জানবে আশপাশে কোথাও নিশ্চয়ই আছে কোনো না কোনো শহীদের গায়েবি কবর। তাই মাটির দিকে তাকিয়ো, জানিয়ো তোমার বা তোমার চেয়ে কম বয়সী কারও রক্ত-অস্থি-মাংস-চক্ষু সেই মাটিতে মিশে আছে। এক তরুণ মুক্তিযোদ্ধার কবরের সামনে দাঁড়িয়ে এই ভাবনা আমাকে থরথর করে কাঁপিয়ে দিয়েছিল। মনে হলো, ওখানে যে শুয়ে আছে, সে তো আমার চেয়েও কম বয়সী! একাত্তরের জাতকেরা এখন স্বাধীনতার সমান কিংবা কিছু বেশি বয়সী। তাদের মনেও নিশ্চয়ই এই অনুভূতি জাগে, কবরে শায়িত তাদের বাবা তাদের চেয়ে কত ছোট! কেবল বয়স পেরোনোর যোগ্যতাতেই আমরা এগিয়ে, কিন্তু তাদের সমান অবদান রাখার সুযোগ আমাদের কি হবে! আমাদের সময়ের তরুণেরা কি পারবে মুক্তিযুদ্ধের ফেলে আসা রণাঙ্গনে, মাটিচাপা বধ্যভূমিগুলোতে, লাখ লাখ ধর্ষিতার পিঠের নিচের অন্ধকার বাংলাদেশে, গোপন বন্দিশালায়, এক কোটি শরণার্থীর দেশত্যাগের মর্মান্তিক যাত্রাপথে, আহত-পর্যুদস্ত মুক্তিযোদ্ধা আর ভুক্তভোগীদের স্মৃতির মণিকোঠায় কোনো দিন পৌঁছাতে? যেখানে যন্ত্রণার শিখা অনির্বাণ জ্বলে। যে জীবন একাত্তরের, তার সঙ্গে কি আমাদের হবে দেখা?
যদি দেখা হয়, যদি জানা হয়, তাহলে তারা প্রশ্ন করবে, মেহনতি মুক্তিযোদ্ধা নুরুল হকের ‘রাত শেষে সকাল হইব, নতুন সূর্য উঠব, নতুন একটা বাংলাদেশ হইব...’ এই বিশ্বাস কেন ব্যর্থ হয়েছে? শহীদ সিরাজের আকাঙ্ক্ষা মতো কেন বাংলাদেশের মেয়েরা পুরুষের সমান শিক্ষা ও অধিকার পায়নি? হত্যা, ধর্ষণ, শোষণ-লুণ্ঠনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ জিতেও কেন হত্যা-ধর্ষণ, শোষণ-লুণ্ঠন কমিয়ে আনা যায়নি? কেন মীরজাফররা এখনো বাংলার মাটিতে প্রতাপের সঙ্গে বিরাজ করছে? কেন শিশুরাষ্ট্র বাংলাদেশ রূপকথার পিটারপ্যানের মতো শিশুই রয়ে গেল; আর পরিণত হলো না। হিসাব মেলে না। একাত্তরের অসম্পূর্ণ হিসাব মেলানোর দায় আজকের তরুণদের সামনে।
প্রয়াত সেক্টর কমান্ডার বীরোত্তম কর্নেল (অব.) নুরুজ্জামানকে একদিন টিভিতে দেখি। দেশের ভেতরে যুদ্ধ থেকে ফিরে শরণার্থী-শিবিরে এক অন্ধ বৃদ্ধকে পেয়েছিলেন। বৃদ্ধটির সন্তান যুদ্ধে গেছে। অনেক দিন নিখবর। কমান্ডারকে কাছে পেয়ে তাঁর সে কী উচ্ছ্বাস। তিনি কর্নেলের হাত ছুঁলেন, চোখ ছুঁলেন। তারপর সেই স্পর্শ নিজের দৃষ্টিহীন চোখে মাখিয়ে নিয়ে বললেন, ‘বাবা, তোমার এই হাত যুদ্ধ করেছে, তোমার চোখ দেশের মাটি-গাছ-পাখি দেখেছে। বাবা, আমি চোখে দেখি না। তুমি তো দেশ থেকে এসেছ, তুমি বলো আমার দেশ কি এখনো তেমন সবুজ, আমার মাটি কি এখনো তেমন সজল? এখনো কি সেখানে পাখিরা ডাকে?’ অন্ধ বৃদ্ধ সন্তানের জন্য কাঁদেননি, কেঁদেছিলেন বিধ্বস্ত দেশের শোকে? ঘটনার ৩৬ বছর পর সেই কথা বলতে বলতে বৃদ্ধ কর্নেলের গাল ভেসে যাচ্ছিল অশ্রুতে। তিনি ফোঁপাচ্ছিলেন। একাত্তরের চিঠিগুলো পড়ে তেমন দমকানো কান্না আসে। অশ্রুও কখনো কখনো ক্ষারের মতো কাজ করে। আমাদের জাতীয় আত্মার ময়লা ধুতে এমন ক্ষার এখন অনেক প্রয়োজন।
ফারুক ওয়াসিফ: সাংবাদিক। প্রথম আলো
farukwasif@yahoo.com

 গোলাম আযমের নির্দেশে ৩৮ জনকে হত্যা

একাত্তরের ২১ নভেম্বর গভীর রাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া কারাগারের ৩৮ জনকে শহরের পৈরতলা রেলব্রিজের কাছে নিয়ে গুলি করে হত্যা করেছিল পাকিস্তানি সেনারা। এই গণহত্যা হয়েছে জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমির গোলাম আযমের নির্দেশে।
গোলাম আযমের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগে উল্লেখ করা মানবতাবিরোধী অপরাধের ৫২টির একটি হলো এই গণহত্যা। তাঁর বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইন, ১৯৭৩-এর ৩(২) ধারায় মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ, গণহত্যা এবং এ ধরনের অপরাধে নেতৃত্ব, সহায়তা, প্ররোচনা ও উসকানি দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে।
মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে মানবতাবিরোধী আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে গত সোমবার এই অভিযোগ দাখিল করা হয়। একই সঙ্গে তাঁকে গ্রেপ্তার বা আটকের জন্য পরোয়ানা জারিরও আবেদন জানায় রাষ্ট্রপক্ষ। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ আমলে নেওয়া হবে কি না, সে বিষয়ে আদেশের জন্য গতকাল মঙ্গলবার ট্রাইব্যুনাল ২৬ ডিসেম্বর দিন ধার্য করেন।
রাষ্ট্রপক্ষের প্রধান কৌঁসুলি গোলাম আরিফ গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, গোলাম আযমের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ ট্রাইব্যুনাল আমলে নিলে রাষ্ট্রপক্ষ পরবর্তী পদক্ষেপ নেবে।
জানতে চাইলে জামায়াতের আটক নেতাদের আইনজীবী দলের প্রধান আবদুর রাজ্জাক প্রথম আলোকে বলেন, ‘আনুষ্ঠানিক অভিযোগ ট্রাইব্যুনালে প্রক্রিয়াধীন থাকায় এ নিয়ে কোনো মন্তব্য করব না। তবে এটা বলা যায়, গোলাম আযম পাকিস্তানের অখণ্ডতা চেয়েছিলেন এটা যেমন এক শ ভাগ সত্য, তেমনি এটাও এক শ ভাগ সত্য যে মানবতাবিরোধী অপরাধের সঙ্গে তাঁর দূরতম কোনো সম্পর্ক ছিল না।’
ট্রাইব্যুনালে দাখিল করা অভিযোগে বলা হয়েছে, তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান জামায়াতের আমির গোলাম আযমের চেষ্টায় শান্তি কমিটি, রাজাকার, আলবদর, আলশামস, পাইওনিয়ার ফোর্স প্রভৃতি সহযোগী বাহিনী গঠিত হয়। তাঁর নেতৃত্বে ও নির্দেশে এসব বাহিনী সারা দেশে মানবতাবিরোধী অপরাধ করে এবং এসব অপরাধ করতে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীকে সহযোগিতা করে।
অভিযোগ অনুসারে, কুমিল্লার হোমনা থানার রামকৃষ্ণপুর গ্রামের সিরু মিয়া একাত্তরে ঢাকার মোহাম্মদপুর থানায় দারোগা (উপপরিদর্শক) হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ২৮ মার্চ তিনি স্ত্রী আনোয়ারা বেগম ও ১৪ বছরের ছেলে আনোয়ার কামালকে নিয়ে গ্রামের বাড়ি যান। সেখানে তিনি শরণার্থীদের ভারতে যাতায়াতে সাহায্য করতেন। ২৭ অক্টোবর সকাল ১০টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা থানার তন্তর চেকপোস্টের কাছে তিনি, তাঁর ছেলেসহ ছয়জন ভারতে যাওয়ার পথে রাজাকারদের হাতে ধরা পড়েন। তাঁদের বিভিন্ন রাজাকার ক্যাম্পে নিয়ে কয়েক দিন নির্যাতনের পর ব্রাহ্মণবাড়িয়া কারাগারে পাঠানো হয়। আনোয়ারা বেগমের ভগ্নিপতি খিলগাঁও সরকারি স্কুলের শিক্ষক মোহাম্মদ মুহসিন আলী খান সিরু ও আনোয়ারকে ছাড়াতে গোলাম আযমের সঙ্গে দেখা করেন। পরে আরেক দিন তিনি গোলাম আযমের কাছে গিয়ে ওই অনুরোধ জানান। গোলাম আযম ব্রাহ্মণবাড়িয়া শান্তি কমিটির নেতা পেয়ারা মিয়ার কাছে এ বিষয়ে তাঁদের মারফত একটি চিঠি পাঠান। ওই চিঠি পড়ার পর পেয়ারা মিয়া পত্রবাহককে গোলাম আযমের দেওয়া আরেকটি চিঠি দেখান, যাতে সিরু মিয়া ও তাঁর ছেলেকে হত্যার নির্দেশ ছিল। পেয়ারা মিয়া পত্রবাহককে জানান, তাঁর আনা চিঠিতে নতুন কিছু নেই। পরে ২১ নভেম্বর (পবিত্র ঈদুল ফিতরের দিন) রাতে সিরু মিয়া, আনোয়ার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র নজরুল ইসলামসহ ৩৯ জনকে পাকিস্তানি সেনারা রাজাকার ও আলবদরদের সহযোগিতায় কারাগার থেকে পৈরতলায় নিয়ে গুলি করে। এতে একজন ছাড়া বাকি ৩৮ জন মারা যান।
এ ঘটনায় গোলাম আযমের বিরুদ্ধে মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ, গণহত্যা ও এতে সহযোগিতার অভিযোগ আনা হয়েছে।
বাকি ৫১ অভিযোগ অনুসারে, পাকিস্তানি সেনাবাহিনী, রাজাকার ও সহযোগী বাহিনীগুলো মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে সারা দেশে যেসব মানবতাবিরোধী অপরাধ ঘটিয়েছে, নেতা হিসেবে গোলাম আযম এসব অপরাধ করার ক্ষেত্রে নেতৃত্ব ও নির্দেশ দিয়েছেন। এ ছাড়া তিনি পাকিস্তানের তৎকালীন শাসকগোষ্ঠীকে মানবতাবিরোধী অপরাধ ও গণহত্যা করতে উৎসাহ, প্ররোচনা ও উসকানি দিয়েছেন।
গণহত্যায় প্ররোচনা: আনুষ্ঠানিক অভিযোগ অনুসারে, একাত্তরের ২ মে জামায়াতের ঢাকার কার্যালয়ে কর্মিসভায় গোলাম আযম মানবতাবিরোধী অপরাধ ও গণহত্যা সংঘটনে দলের নেতা-কর্মী ও অনুসারীদের উদ্বুদ্ধ করেন। ১৭ মে ঢাকায় সাবেক এমএনএ আবুল কাসেমের বাসভবনে এক সভায় গোলাম আযম ২৫ মার্চ মধ্যরাতে নিরস্ত্র বাঙালির ওপর পাকিস্তানি বাহিনীর সামরিক অভিযানকে সর্বাত্মক সমর্থন জানান। তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের ‘বিশ্বাসঘাতক’ উল্লেখ করেন। ২ আগস্ট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শরীরচর্চা কেন্দ্রে এক সভায় তিনি গণহত্যাকে সমর্থন করেন। ১৪ আগস্ট কার্জন হলে এক সভায় তিনি ‘ঘরে ঘরে দুশমন খুঁজে বের করে তাঁদের উৎখাতের মাধ্যমে’ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য প্ররোচিত করেন।
শান্তি কমিটি ও রাজাকার বাহিনী গঠন: অভিযোগ অনুসারে, ৪ এপ্রিল গোলাম আযমসহ ১২ সদস্যের প্রতিনিধিদল তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের ‘খ’ অঞ্চলের সামরিক আইন প্রশাসক টিক্কা খানকে নাগরিক কমিটি গঠনের প্রস্তাব দেন। দুই দিন পর গোলাম আযম, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হামিদুল হক চৌধুরী, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের পূর্ব পাকিস্তানের সভাপতি পীর মোহসীনউদ্দিন আহমদ ও এ টি সাদী আবার টিক্কা খানের সঙ্গে দেখা করেন। ৯ এপ্রিল খাজা খয়েরউদ্দিনকে আহ্বায়ক ও গোলাম আযমকে সদস্য করে ১৪০ সদস্যের নাগরিক শান্তি কমিটি গঠিত হয়। ১৫ এপ্রিল নাগরিক শান্তি কমিটির নামকরণ করা হয় পূর্ব পাকিস্তানের জন্য কেন্দ্রীয় শান্তি কমিটি এবং ২১ সদস্যের কার্যকরী কমিটি গঠিত হয়, যার সদস্য ছিলেন গোলাম আযম। ২১ এপ্রিল একে আরও গতিশীল করতে ছয় সদস্যের একটি সাব-কমিটি গঠিত হয়, যার দুই নম্বর সদস্য ছিলেন গোলাম আযম।
অভিযোগ অনুসারে, ১৮ জুলাই ব্রাহ্মণবাড়িয়ার রিপাবলিক স্কয়ারে এক সভায় গোলাম আযম শান্তি কমিটি, রাজাকার, আলবদর, আলশামসদের কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান। ১৭ সেপ্টেম্বর তিনি ঢাকার মোহাম্মদপুরে শারীরিক শিক্ষা কেন্দ্রে রাজাকার শিবির পরিদর্শনকালে আলেম ও ইসলামি কর্মীদের প্রতি রাজাকার ও মুজাহিদ বাহিনীতে ভর্তি হয়ে সশস্ত্র হওয়ার আহ্বান জানান। তিনি ১ ডিসেম্বর রাওয়ালপিন্ডিতে প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের সঙ্গে বৈঠকে বলেন, তথাকথিত মুক্তিবাহিনীকে মোকাবিলা করতে রাজাকাররাই যথেষ্ট। এ জন্য রাজাকারের সংখ্যা বাড়াতে হবে।
রাজাকারদের অস্ত্র সরবরাহের আহ্বান: অভিযোগ অনুসারে, ১৯ জুন গোলাম আযম রাওয়ালপিন্ডিতে প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের সঙ্গে দেখা করে মুক্তিযোদ্ধাদের মোকাবিলার জন্য রাজাকার, আলবদর, আলশামস বাহিনীকে অস্ত্র সরবরাহের আহ্বান জানান। পরদিন লাহোরে জামায়াতের পশ্চিম পাকিস্তানের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, পূর্ব পাকিস্তানে দুষ্কৃতকারীরা সক্রিয় রয়েছে এবং তাদের প্রতিরোধের জন্য অস্ত্রসজ্জিত হওয়া উচিত। এমন কথা তিনি আরও একাধিক স্থানে বলেছেন।
আনুষ্ঠানিক অভিযোগের সঙ্গে দালিলিক সাক্ষ্য হিসেবে যেসব নথি সংযুক্ত করা হয়েছে, সেগুলোর মধ্যে রয়েছে: একাত্তরে স্পেশাল ব্রাঞ্চের প্রতিবেদন (জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী ছাত্র সংঘ ও শান্তি কমিটির কর্মকাণ্ড-সংক্রান্ত), গোয়েন্দা প্রতিবেদন, শান্তি কমিটির সঙ্গে রাজাকার, বেসামরিক ও সামরিক প্রশাসনের যোগাযোগের নথি ও ছবি, ভিডিওচিত্র এবং একাত্তরের বিভিন্ন পত্রিকা ও বিদেশি টিভি চ্যানেলের প্রতিবেদন। এসব বিষয়ে প্রকাশ ও প্রচারের তারিখ অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।

 প্রথম আলো পাঠক প্রতিক্রিয়া

 
Tayyip Rahman
Tayyip Rahman
২০১১.১২.১৪ ০৪:০০
Why Government is bothering a peace loving person? After all he was associated with peace committee in 1971. He wasn't pissing peace into pieces, was he?

Ismail Khan Chy(Titu)
Ismail Khan Chy(Titu)
২০১১.১২.১৪ ০৪:৫৪
He should be arrested soon.

Ismail Khan Chy(Titu)
Ismail Khan Chy(Titu)
২০১১.১২.১৪ ০৪:৫৭
He has been trying prove himself innocent on tv channels. be aware of him.

সুনন্দন বড়ুয়া (প্যারিস থেকে)
সুনন্দন বড়ুয়া (প্যারিস থেকে)
২০১১.১২.১৪ ০৬:৫৭
১৬ ডিসেম্বর ১ নম্বার রাজাকার গোলাম আযম কে গ্রেপ্তার করা হোক ।

Md.Monirul Islam Khan
Md.Monirul Islam Khan
২০১১.১২.১৪ ০৮:৩৫
গতকাল রাতে এ টি এন বাংলাই "৭১ এর গোলাম আযম" শীর্ষক একটি প্রতিবেদন দেখলাম, সাংবাদিকের প্রায় প্রশ্নের উত্তর তিনি সুন্দর ভাবে এড়িয়ে গেলেন। সবচেয়ে যে জিনিসটা আমার খারাপ লেগেছে একজন সাংবাদিক তাকে SIR বলে সম্বোধন করতে শুনে। একটা জিনিস আমি কিছুতেই বুঝলাম না তাকে এতটা সমীহ করে কথা বলার কি আছে। সে শুধু একজনের শত্রু নই পুরো জাতির শত্রু, কথাটা কি আমাদের সাংবাদিক ভাইয়েরা ভুলে গিয়েছলেন?

Nazmul Rubaiyat
Nazmul Rubaiyat
২০১১.১২.১৪ ০৯:২৬
পাকিস্তানি গোলাম মীরজাফার গোলাম আজমের ফাসির আগে জুতা পেটা করতে চাই।

Monika
Monika
২০১১.১২.১৪ ০৯:২৮
এসব কেচ্ছা কাহিনী আমরা ছোটবেলা থেকে শুনছি। সময় এসেছে এগুলো প্রমান করার।

Debu Sarkar
Debu Sarkar
২০১১.১২.১৪ ০৯:৩৩
বেশ কয়েকদিন ধরেই যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বিষয়ক খবর সম্পর্কে লেখা পাঠকের মন্তব্যগুলো মন দিয়ে পড়ছি; সত্যি বলতে কি মূল খবরের চেয়েও বেশি গুরুত্ব দিয়ে পড়ছি। তাতে দেখতে পাচ্ছি, অনেকেই এই বিচারের বিরোধিতা করছেন। আমার ধারণা আজও এমন অনেকগুলো মন্তব্য প্রকাশিত হবে, যেখানে গোলাম আজমের জন্য হাহাকার করা হবে। সেসব পড়তে পড়তে ভাবতে থাকবো, আজ ১৪ই ডিসেম্বর!!

২০১১.১২.১৪ ০৯:৪৮
I am a student of B.Pharm and also a Teacher.In my life i saw him,he is not bad at all.If you have prove, you will proved him as a Rajaker.After prove it, then our government can catch him.If there is no Prove about him,there is no Causes about him to arrest.I Honor our People Republic Bangladesh.

Apu kowsar
Apu kowsar
২০১১.১২.১৪ ০৯:৫৮
আর কত !!! এখন এদের ফাসি দেয়া হোক।

Md. Mohabbot Hossain
Md. Mohabbot Hossain
২০১১.১২.১৪ ১০:১৫
Md.Monirul Islam Khan, "৭১ এর গোলাম আযম" শীর্ষক প্রতিবেদনটটি প্রচার করার জন্য এ টি এন বাংলা ধন্যবাদ, আর আপনাকেও ধন্যবাদ কষ্ট করে অনুষ্ঠানটি দেখার জন্য। আর গোলাম আযম কে স্যার বলার কারন সে একজন শিক্ষিত অধ্যাপক।

Evan Hussain
Evan Hussain
২০১১.১২.১৪ ১০:২৭
...জামায়াতের অনেক নেতার বিরুদ্ধেই অকাট্য প্রমান নেই, কিন্তু গোলাম আযম.. এই লোকের বিরুদ্ধে এত প্রমাণ আছে যে একে ফাসিতে ঝোলাতে ৩দিনের বেশি কোর্টের কার্যদিবস লাগার কথা না। এখন দেখা যাক সরকার এই বিষয় নিয়ে কতটুকু রাজনীতি করে।

Sultana
Sultana
২০১১.১২.১৪ ১০:২৮
TV তে দেখলাম, উনি বলছেন, উনার বিরুদধে আনা একটা অভিযোগও কেউ পমান করতে পারবেনা। উনি তো এটা বললেননা যে উনি অভিযোগ আনা অপরাধগুলো করেননি। অপরাধ করে ইসলামকে বরম হিসেবে ব্যবহার করেছেন। আপনাদের বিচার তো দুই জায়গায় হবে। একটা এই পথিবীতে, আর একটা পরকালে। একটু ভয়ও নেই বুকে। নিজেদের উপর কি জুলুমটাই না করছেন শয়তানের পরোচনায়।

Sk. Arman Jahan
Sk. Arman Jahan
২০১১.১২.১৪ ১০:৩০
কালকে ATN News তার প্রতিবেদন দেখলাম ভাল লাগল ... তবে এই মানবতা বিরোধী যে আদালত এটি একটি বির্তকিত হয়ে গেছে তাই এইটা পরিবর্তন দরকার।

Abdullah Al-Mamun. রংপুর।
Abdullah Al-Mamun. রংপুর।
২০১১.১২.১৪ ১০:৩৭
গতকাল একটি বেসরকারী টিভি চ্যানেলে মুক্তিযুদ্ধের সময়কার চিহ্নিত অপরাধী গোলাম আযমের সাক্ষাত্‍কার দেখে বিস্মিত হলাম । তিনি নাকি মৃত্যুকে ভয় পাননা । যে ব্যাক্তি অসংখ্য মানুষকে হত্যা করতে পারে সেতো জল্লাদ । জল্লাদরা মৃত্যুকে ভয় না পাওয়ার কথা ।
স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় এদের বিচার করে জাতিকে কলঙ্ক মুক্ত করতে হবে ।

imtiaz ahmed chowdhury
imtiaz ahmed chowdhury
২০১১.১২.১৪ ১০:৫০
Md. Mohabbot Hossain কে বলতে চাই গোলাম আযম একজন শিক্ষিত ঘাতোক । সবাইকে আমি Sir বলতে পারি , তা সে চোর হউক ডাকাত হউক কিন্তু একজন ঘাতোক কে Sir বলতে পারবোনা , বলতে দিবোনা ।

Abdul Salam
Abdul Salam
২০১১.১২.১৪ ১০:৫১
গোলাম আযমের মুখে জনগন শুনতে চায়, তার কাহিনী, তাকে সরাসরি প্রশ্ন করুন এবং তাকে তার উত্তর দিতে বলুন।

২০১১.১২.১৪ ১১:০৫
গোলাম আজম (বাংলাদেশীদের জন্য গোলাম আজব) আপনি সময় থাকতে প্রকাশ্যে তওবা করেণ। কারণ আল্লাহ পাক প্রকাশ্য অপরাধের জন্য প্রকাশ্যে তওবা করার কথা বলেছেন।

T Alahee
T Alahee
২০১১.১২.১৪ ১১:১৬
ঘাতকদের বিচার ও দৃসটান্তমুলক শাসতি চাই। তবে তারা যেন আত্মপক্ক সমর্থনের সু্যোগ পায়। তারা বিদেশী আইনজীবী নিয়োগ করতে চাইলে সু্যোগ দেয়া উচিত। এতে করে বিচারটি বিতর্কমুক্ত থাকবে। আর বিচারটি টেলিভিশনে লাইভ দেখানোর ব্যবসথা থাকা উচিত। এতে করে এই বিচার রাজনইতিক বলয় থেকে বেরিয়ে পুরো দেশবাসীর সত:সফুর্ত সমর্থন পাবে।

শুভ্র
শুভ্র
২০১১.১২.১৪ ১১:১৭
তাকে মিডিয়ার সামনে আত্নপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেয়া উচিত।

nurul absar hussain
nurul absar hussain
২০১১.১২.১৪ ১১:২২
গত কালও বাংলাভিশনে গোলাম কে দেখিলাম উনার কথা শুনিয়া মনে হইতেছে উনি যুদ্ধকালীন দেশের রক্ষা কবচ ছিল . উনি আমাদের দেশবাসীকে যাহারা ভারতে যাইতে পারেনাই তাহাদের রক্ষা করিয়াছে. উনি গ্রেফতার হইবেন আর আমাদেরই দেশপ্রেমী দল উনার মুক্তিদাবি করিবে আর এক ধরনের সুধী জনেরা বিচারের স্বচ্ছতা চাহিয়া বিচার প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টাই নিউজিত থাকিবে. .

nur alam
nur alam
২০১১.১২.১৪ ১১:৩০
আবদুল সালাম ভাই চুর কি বলে আমি ..........................?

২০১১.১২.১৪ ১১:৫৯
The war criminals get the opportunity to become ministers in Bangladesh which is humiliating for our freedom fighters. Shame on those who patronize them. I hate them like Gen. Zia, Somsher Mobin Chow etc ....

২০১১.১২.১৪ ১২:০০
১৪০ সদস্যের নাগরিক শান্তিকমিটি, ২১ সদস্যের কার্যকরী কমিটি, ছয় সদস্যের একটি সাব-কমিটি গঠিত হয় ! সব কমিটিতেই গোলাম আজমের নাম আছে ! কমিটির বাকী সদস্যের নাম কি ভাবে জানতে পারবো, কেউ বলতে পারেন কি ? বড় ইচ্ছা হয় আমাদের চারপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা রাজাকারদের পরিচয় জানার ! তা ছাড়া এতো এতো সদস্য রেখে কেবল গোলাম আজমের বিচারই কেন হবে সেটাও বুঝতে চাই !

hafez sharif
hafez sharif
২০১১.১২.১৪ ১২:০৯
@ Mr Md. Mohabbot Hossainকে বলছি, দেখুন একজন মানুষকে সম্মন অসম্মন দেখানো হয় তার কৃত কর্মের দ্ধারা, তিনি শিক্ষিত অধ্যাপক বেশ ভাল কথা, অধ্যাপক হয়ে তিনি দেশের জন্য কি করেছেন ? কোরআনের অপব্যখ্যা দিয়েছেন যা বাংলাদেশের হক্কানি আলেমদের লিখায় ও বক্তব্যে অগনীত প্রকাশ। মুক্তিযুদ্ধের সময় নয় মাস তিনি দেশের জন্য কি করিয়াছেন ? এবং ১৯৭৮ সাল পর্যন্ত তিনি কোথায় ছিলেন ? ঐ সময় তিনি কি কি করেছেন ? তার জীবনের বেশী ভাগ সময় তিনি দেশকে ধংসের পথে নিতে চেয়েছেন, তার নেতৃত্বে দেশের অগনীত মুক্তিকামী মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। ইত্যাদী ..... এই ধরনের লোককে সম্মনীত শিক্ষিত অধ্যাপক বলাটা শোভা পায়না।

Hasan
Hasan
২০১১.১২.১৪ ১২:১২
আর কোনো specific প্রমান পাওয়া গেল না? পাকিস্তানের আর্মিরা কি গোলাম আযমের নিরদেশে মেনে চলতো যে তার কথামতো ৩৮ জনকে হত্যা করলো? যারা নিজ হাতে হত্যা করলো তাদের কি কোন বিচার হবে না?

monir
monir
২০১১.১২.১৪ ১২:১৮
গো আযম ও অন্যান্য জামাত নেতারা ১৯৭১ সালে যে অপরাধ গুলো করেছিলো এবং তারা যে অপরাধী এটা দিবা লোকের মত সত্য কিন্তু এত দিন পর এ গুলো প্রমান করা অত্যন্ত কঠিন। বস্তুত ১৯৭৫ এর পর হতে এ রাজাকারা রাষ্ট্রীয় পৃষ্টপোষকতা পেয়ে পেয়ে এখন সব বেমালুম অস্বীকার করছে। এ রাজাকারা পাকিস্তানের অখণ্ডতা চেয়েছিলেন এটা যেমন এক শ ভাগ সত্য এবং পাকিস্তানের অখণ্ডতা রক্ষায় যা যা করা প্রয়োজন তারা তাই সে সময় করেছিলো।

foyez ahmad
foyez ahmad
২০১১.১২.১৪ ১২:৩১
He should be arrested with appropriate proof.

lean
lean
২০১১.১২.১৪ ১২:৪৩
বুশের মত লোকে জুতা মারতে পারে আর গোলাম আযম এত এত মিথ্যা কথা বলল সব সাংবাদিক কিভাবে বসে থাকে বুঝলাম না ???? সাংবাদিকরা প্রচার করে আমরা সাহসী জাতি ...........................................

২০১১.১২.১৪ ১২:৪৬
গোলাম আযমের মতো একটা চিন্হিত যুদ্ধাপরাধীর পক্ষে সাফাই গাওয়ার মতো দেখি কিছু কিছু লোক আছে ! থাকতেই পারে, নিশ্চয় তারা বা তাদের আগের প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানের দালালি করেছিল। বাংলাভিশনে তার যে সাক্ষাতকার দেখলাম তাতে তো মনে হলো অনুষ্ঠানটা একদম প্রিপ্ল্যান করা, যে কারনে সে যেসব প্রশ্ন এড়িয়ে গেছে তা বারবার তুলে ধরে তাকে চেপে ধরা যেতো। কি করে বাংলাভিশন এটা করলো?

nurul absar hussain
nurul absar hussain
২০১১.১২.১৪ ১৩:০৭
দেশের অনেক টেলিভিশন চানেল আছে যেইগুলি দেখিয়া মনে হই ওই গুলি শুধু কোনো উদ্দেশ্য নিয়া করা হইয়াছে. তাহাদের প্রচার দেখিলে মনে হই তাহারা কোনো দলেদ প্রতিনিদিত্ত করিতেছে. যেমন বিটিভি সরকারের করে. গতকালের বাংলাভিশনে গোলাম আজোমের সাক্কাত্কার দেখিয়া মনে হয়তেছে ঐটা উনার পাপ হালকা করিবার জন্যই করা হইয়াছে. দিগন্ত আর ইসলামী টেলিভিশনের কথা নাইই বলিলাম. আরো অনেক হয়ত আছে বিদেশে অপারেটর গণ খুব বেশি চানেল আমাদের দিতে পারেনা.

Swapan Baidya
Swapan Baidya
২০১১.১২.১৪ ১৩:০৯
All of Bangladeshi Hate Gu. Azam. So immediate ..............

মো‌: হাফিজুর রহমান
মো‌: হাফিজুর রহমান
২০১১.১২.১৪ ১৩:১১
কাল রাতে বাংলাভিশনে গো আযম এর সাক্ষাতকার দেখলাম! তার বক্তব্য খুবই পরিষ্কার ছিল, অখন্ড পাকিস্তানের জন্য সে তখন সবকিছুই করেছে। মানবতাবিরোধী কোন অপরাধ সে করে নাই!! রাজাকার রা পুলিশ আনসারের মতই পাকিস্তানি আর্মির সহযোগী বাহিনী ছিল! তার কাছে কেউ কমপ্লেইন নিয়ে আসলে তিনি পাকিস্তান আর্মিকে বলে যথাসম্ভব সাহায্যই না-কি করেছে!!! তার গর্বভরে বলেছে যে সে বাংলাদেশ নয় অখন্ড পাকিস্তানই চেয়েছিল!!! মুক্তিযোদ্ধাদের বিদ্রোহী বলে আখ্যাতিয় করেছে!!!! তাকে রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমানে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) জনসম্মুখে পিটিয়ে মারা হোক.....।

a.m.yousuf
a.m.yousuf
২০১১.১২.১৪ ১৩:২৭
লগি দিয়ে মানুষ হত্যা কারিদের ও বিছার হওয়া উছিত '

শিপন মোল্লা
শিপন মোল্লা
২০১১.১২.১৪ ১৪:১১
গোলাম আজম কাল বাংলাভিসন টেলিভিশনে বলেছেন যৌদ্ধ অপরাধী অভিযোগ তার বিরুদে অপবাদ। সে আরো বলেছে তার বিরুদে এই অভিযোগ একটাও প্রমান করতে পারবেনা।

অর্ক
অর্ক
২০১১.১২.১৪ ১৪:৩৫
গোলাম আযম কে প্রকাশ্যে ফাসি দেয়া হোক!

২০১১.১২.১৪ ১৪:৫৯
তাকে সবার সামনে গুলি কর মার


Twitter Delicious Facebook Digg Stumbleupon Favorites More