সরকার বাধ্য করলে জামায়াতে ইসলামী তাদের শরিকদের নিয়ে আসন্ন রমজান মাসেও হরতালের ডাক দেবে। দলটির ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল এ টি এম আজহারুল ইসলাম গতকাল শুক্রবার দলীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন।
আজহারুল ইসলাম আরও বলেন, ‘সরকার দেশকে পাকিস্তান বানানোর পাঁয়তারা করছে। হরতালে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে দলের নেতা-কর্মীদের সাজা দেওয়া হচ্ছে। এমন দৃষ্টান্ত একমাত্র পাকিস্তান আমলে স্বৈরাচার আয়ুব খানই দেখিয়েছিল। স্বাধীন বাংলাদেশে আয়ুবের পদাঙ্ক অনুসরণ লজ্জাজনক। অথচ তারা সব সময় বলে, আমরা নাকি দেশকে পাকিস্তান বানাচ্ছি।’
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনর্বহাল, সংবিধানে আল্লাহর প্রতি পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস পুনর্বহাল, হরতালে গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের মুক্তি এবং ভ্রাম্যমাণ আদালতে সাজাপ্রাপ্ত নেতা-কর্মীদের সাজা মওকুফের দাবিতে আজ শনিবার দেশব্যাপী বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্টিত হবে। এ ছাড়া আগামী ১৩ জুলাই জুলুম-দুঃশাসনের হাত থেকে মুক্তির জন্য দেশবাসীর প্রতি নফল রোজা রাখার আহ্বান জানানো হয়। একই সঙ্গে ১২টি ধর্মভিত্তিক দলের ডাকা ১০ ও ১১ জুলাইয়ের হরতালের প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানানো হয়।
রমজানে হরতাল ডাকার যৌক্তিকতা সম্পর্কে আজহারুল ইসলাম বলেন, অতীতে জামায়াত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আওয়ামী লীগকে সঙ্গে নিয়ে তৎকালীন বিএনপি সরকারের বিরুদ্ধে রমজান মাসেও হরতাল ডেকেছিল। এবারও সরকার অসহিষ্ণু আচরণ করলে প্রয়োজনে রমজানে হরতালের ডাক দেওয়া হবে।
হরতালকে রাজনৈতিক ও গণতান্ত্রিক কর্মসূচি উল্লেখ করে আজহারুল ইসলাম বলেন, ‘সদ্য শেষ হওয়া ৪৮ ঘণ্টার হরতালে সরকার নজিরবিহীন সন্ত্রাস চালিয়েছে। বিএনপির কেন্দ্রীয় অফিস ঘেরাও করে রাখা হয়েছিল। নেতা-কর্মীদের দলীয় কার্যালয়ে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। আন্দোলন দমানোর জন্য হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেছে ভ্রাম্যমাণ আদলতকে। মিছিল-সমাবেশ করার কারণে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে তাৎক্ষণিক সাজা দেওয়ার বিধান দুনিয়ার আর কোথাও আছে বলে আমাদের জানা নেই।’
আজহারুল ইসলাম জানান, হরতালে ১০টি ভ্রাম্যমাণ আদালত সক্রিয় ছিল। এসব আদালত রাজধানীতে জামায়াতের নেতা-কর্মীদের বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়েছেন। এ ছাড়া দেশের বিভিন্ন এলাকায় দুই শতাধিক নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি গ্রেপ্তার করা নেতা-কর্মীদের মুক্তি এবং ভ্রাম্যমাণ আদলতে সাজাপ্রাপ্তদের সাজা মওকুফের দাবি জানান।
সরকার চারদলীয় জোটের হরতাল বানচালের জন্য পুলিশ বহিনীর সঙ্গে ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও আওয়ামী লীগকে মাঠে নামিয়েছে বলে মন্তব্য করেন আজহারুল ইসলাম। তিনি বলেন, পুলিশ বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ জয়নুল আবদিন ফারুককে পিটিয়ে সংসদীয় গণতন্ত্রের পিঠে ছুরিকাঘাত করেছে। অথচ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন সংসদে যে বক্তব্য দিয়েছেন, তাতে তিনি ফারুককে হামলাকারী হিসেবে চিহ্নিত করার চেষ্টা করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে মহানগর জামায়াতের আমির রফিকুল ইসলাম, সাংসদ হামিদুর রহমান আযাদ, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সদস্য ইজ্জত উল্লাহ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
prothom-alo
0 comments:
Post a Comment