Total Pageviews

Feedjit Live

Wednesday, July 13, 2011

দখল-পুনর্দখলের খেলা

ছিল নদীর তীর, দখলের মাধ্যমে হলো ব্যক্তিগত সম্পত্তি, দখল উচ্ছেদের পর জায়গাটি এখন সরকারের হাতে। রাজধানীর শ্যামপুরের কদমতলী এলাকায় এ রকম উদ্ধার করা সাত একর জমি শেষ পর্যন্ত কার হাতে থাকবে, তা নিয়ে চলছে টানাটানি। কেউ গুদাম করতে চায়, কেউ চায় ডকইয়ার্ড বানাতে, কারও ইচ্ছা শিল্প স্থাপন; অথচ এঁরা কেউ মালিক নন। নদীর কথা কেউ ভাবছে কি? ঢাকা শহরের অন্যতম ঘিঞ্জি একটি এলাকায় একটু সবুজ উদ্যান ও মাঠের জায়গা দেওয়ার কথা ভাবছে কি কেউ?
জায়গাটি এখন অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) এখতিয়ারে। নদীবিষয়ক টাস্কফোর্সের পরামর্শ, সেখানে একটি উদ্যান সৃষ্টি করা হোক। কিন্তু সাবেক ও হবু দখলদারেরা বসে নেই, তারা মন্ত্রী-সাংসদদের মাধ্যমে জায়গাটি হাত করতে ব্যস্ত। সম্প্রতি প্রথম আলোয় এ-বিষয়ক প্রতিবেদনে পার্ক বনাম বাণিজ্যিক দখলের প্রতিযোগিতার খবরটি প্রকাশিত হয়েছে।
দখল হওয়া জায়গা আবার বেদখলে যাওয়ার অজস্র নজির রয়েছে। বুড়িগঙ্গার তীরের একাধিক স্থানে অবৈধ দখল উচ্ছেদের পরও একাধিকবার দখলের ঘটনা ঘটেছে। কর্তৃপক্ষের মদদ ছাড়া এগুলো যেমন চলতে পারত না, তেমনি বিআইডব্লিউটিএর সঙ্গে যোগসাজশ ছাড়াও লোক দেখানো দখলের পর পুনর্দখলের আয়োজন সম্পন্ন হতে পারত না। নদী বাঁচাতে তাই সরষের মধ্যে ঘাপটি মেরে থাকা ভূতগুলো চিহ্নিত করা দরকার। বিআইডব্লিউটিএ যে দৃষ্টিভঙ্গি থেকে উদ্ধার করা জমিতে পার্ক করার চিন্তা করছে, সেটি সমর্থনীয়। বাড়ি আর সড়কে ভরা এই শহরে সবুজ চত্বর ও খেলার মাঠ অনেক কম। তা ছাড়া নদীতীরে বেড়ানোর সুযোগও অপ্রতুল। এসব বিষয় বিবেচনা করে ওই সাত একর জমিতে কোনোভাবেই যাতে নতুন দখল বা বাণিজ্যিক স্থাপনা তৈরি করা না হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে। আবার পার্ক নির্মাণ করে তাকে আবার ইজারা দেওয়াও বাঞ্ছিত নয়। 
ঢাকার চারপাশের প্রধান প্রধান চারটি নদীর বেলায়ই এ রকমটা ঘটছে। প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন সময় নদীর অপদখলীয় এলাকা উদ্ধারের জন্য নির্দেশ দিয়েছিলেন। ঢাকার চার নদী রক্ষা এবং দূষণ বন্ধে আছে উচ্চ আদালতের নির্দেশনা। সে সব আদেশ-নির্দেশ কতটা পালিত হয়েছে, তা-ও খতিয়ে দেখা দরকার। দখলদারদের কাছ থেকে উদ্ধার করা জমি যাতে আবার দখল না হয়, সেই নিশ্চয়তা বিআইডব্লিউটিএসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকেই দিতে হবে।

0 comments:

Post a Comment

Twitter Delicious Facebook Digg Stumbleupon Favorites More