মরক্কোর বাদশাহ মোহাম্মদের একচ্ছত্র ক্ষমতা কমানোর লক্ষ্যে খসড়া সংবিধান অনুমোদনের জন্য গতকাল শুক্রবার দেশটিতে গণভোট হয়েছে। আরব বিশ্বে গণতান্ত্রিক আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ার পরিপ্রেক্ষিতে রাজনৈতিক সংস্কারের জন্য এ গণভোটের আয়োজন করা হয়।
তিউনিসিয়া ও মিসরে গণ-অভ্যুত্থানে সরকার পতনের পর মরক্কোতেও সরকারবিরোধী বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনায় মোহাম্মদ তাঁর কিছু ক্ষমতা প্রধানমন্ত্রী ও পার্লামেন্টের কাছে হস্তান্তর করার লক্ষ্যে গত মাসে এ গণভোটের ঘোষণা দেন।
গতকাল মরক্কোর স্থানীয় সময় সকাল আটটায় ওই ভোট গ্রহণ শুরু হয়। চলে সন্ধ্যা সাতটা পর্যন্ত। ভোটের জন্য দেশটির প্রায় এক কোটি ৩০ লাখ ভোটার নিবন্ধন করা হয়। দেশটির মোট জনসংখ্যা তিন কোটি ২০ লাখ। খসড়া সংবিধান অনুসারে বাদশাহ মোহাম্মদই রাষ্ট্র ও সামরিক বাহিনীর প্রধান থাকবেন। এ ছাড়া পার্লামেন্টে নির্বাচিত প্রধান দল থেকে প্রধানমন্ত্রী বাছাই করা হবে। প্রধানমন্ত্রী হবেন মরক্কো সরকারের প্রধান।
রাজধানী রাবাতের নিকটবর্তী শহর সেলের একটি ভোটকেন্দ্র থেকে গতকাল এক সাংবাদিক জানান, ভোট দেওয়ার জন্য বেশ কিছু লোককে তিনি লাইনে দাঁড়াতে দেখেছেন। অবশ্য বিশ্লেষকেরা বলছেন, ভোটাররা যে খসড়া সংবিধান অনুমোদন করবেন, সে বিষয়ে সন্দেহ খুবই কম। তবে তাঁদের প্রশ্ন একটাই, ভোটের গ্রহণযোগ্যতা নিশ্চিত করার মতো পর্যাপ্ত ভোট পড়বে কি না?
১৯৯৯ সালে মোহাম্মদ ষষ্ঠ আরব বিশ্বের সবচেয়ে দীর্ঘ সময় ধরে চলে আসা রাজতন্ত্র মরক্কোর বাদশাহ হন। গত ফেব্রুয়ারি মাসে অধিকতর গণতন্ত্র, উন্নত অর্থনৈতিক অবস্থা ও দুর্নীতি বন্ধের দাবিতে দেশটিতে কয়েক সপ্তাহ ধরে বিক্ষোভ চলে। এরপর মোহাম্মদ রাজনৈতিক সংস্কারের ঘোষণা দেন।
এদিকে সম্পূর্ণ সাংবিধানিক রাজতন্ত্রের দাবিতে বিক্ষোভে অংশ নেওয়া কয়েকজন নেতা তাঁদের সমর্থকদের গতকালের ভোট প্রত্যাখ্যান করার আহ্বান জানিয়েছেন। তবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) বলেছে, মরক্কোর সংস্কারের পরিকল্পনা ‘গণতন্ত্রের প্রতি সুস্পষ্ট অঙ্গীকারের একটি ইঙ্গিত।’
সংক্ষিপ্ত প্রচারণার সময় মরক্কোর প্রধান প্রধান রাজনৈতিক দল, ইউনিয়ন, সুশীল সমাজ, ধর্মীয় নেতা ও সংবাদমাধ্যমগুলো খসড়া সংবিধানের পক্ষে ব্যাপক সমর্থন জানিয়েছে। তারা ‘হ্যাঁ’ ভোটের পক্ষে প্রচারণা চালিয়েছে। তবে একটি অংশ ‘না’ ভোটের পক্ষেও প্রচারণা চালিয়েছে।
হিলারির ঘোষণা: যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন গত বৃহস্পতিবার ঘোষণা দিয়েছেন, ওয়াশিংটন সীমিত পরিসরে মিসরের মুসলিম ব্রাদারহুডের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করবে। হোসনি মোবারকের শাসনামলে মিসরে মুসলিম ব্রাদারহুড নিষিদ্ধ ছিল। তবে মোবারক ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর কট্টরপন্থী ইসলামিক দলটি বড় ধরনের শক্তিতে পরিণত হয়েছে। এএফপি ও রয়টার্স।
প্রথম আলো
0 comments:
Post a Comment