সাত বছরের গৃহবন্দী অবস্থা থেকে গত বছরের ১৩ নভেম্বর মুক্তি পান সু চি (৬৬)। সেই থেকে তিনি ইয়াঙ্গুনেই অবস্থান করছেন।
ইয়াঙ্গুন থেকে ৬৯০ কিলোমিটার দূরে মিয়ানমারের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত পর্যটননগর বাগানের বিমানবন্দরে সু চিকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানানো হয়। ভিড় পড়ে যায় সাংবাদিকদের। এ সময় সাদা পোশাকে পুলিশ সদস্যদের কড়া সতর্ক অবস্থায় দেখা যায়।
বাগানে পৌঁছানোর পর সু চি কোনো মন্তব্য করেননি। বিমানবন্দর থেকে সোজা তিনি হোটেলে চলে যান। তবে সু চির ছেলে অ্যারিস বলেন, বাগানে আসতে পেরে তিনি ‘খুবই খুশি’।
৩৩ বছর বয়সী ব্রিটিশ বংশোদ্ভূত অ্যারিস বলেছেন, ‘১৩ বছরের মধ্যে এই প্রথম আমি ছুটি কাটাতে এসেছি। তাঁরও (সু চি) অবসর দরকার। আমরা এখানে চার দিন অবস্থান করব। এখানে আসতে পেরে আমি খুবই খুশি।’
প্রায় এক দশক ধরে বিচ্ছিন্ন থাকার পর গত বছর মা ও ছেলের মধ্যে প্রথম সাক্ষাৎ হয়।
নোবেলজয়ী এই নেত্রী এর আগে গোটা দেশে রাজনৈতিক সফর করার পরিকল্পনা করেছিলেন। কিন্তু এতে খেপে যায় দেশটির সেনা-সমর্থিত সরকার। তারা সু চির দলকে রাজনীতির বাইরে থাকার আহ্বান জানিয়ে এই বলে সতর্ক করে দেয় যে সু চি রাজনীতির ব্যাপারে অগ্রসর হলে ‘বিশৃঙ্খলা ও দাঙ্গা’ ছড়িয়ে পড়তে পারে।
এদিকে অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী কেভিন রাড সু চির এ সফরকালে তাঁর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের কাছে আহ্বান জানিয়েছেন। গত শনিবার সিঙ্গাপুরে যাত্রাবিরতিকালে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, সু চিকে কেমন নিরাপত্তা দেওয়া হচ্ছে, তা সারা বিশ্ব খুবই সতর্কতার সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করবে।’ কেভিন গত সপ্তাহে সু চির সঙ্গে দেখা করেন।
২০০৩ সালে এক রাজনৈতিক সফরকালে সু চির গাড়িবহর ভয়াবহ হামলার শিকার হয়। সেই থেকে তাঁর নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন শুভাকাঙ্ক্ষী, ভক্তরা। ধারণা করা হচ্ছে, সু চির জনপ্রিয়তায় যারা ভীতসন্ত্রস্ত, তারাই ওই হামলা চালায়। এতে তাঁর দলের প্রায় ৭০ জন কর্মী-সমর্থক মারা যান।
সু চির রাজনৈতিক দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি) ১৯৯০ সালের নির্বাচনে বিশাল ব্যবধানে জয়ী হয়। কিন্তু ওই নির্বাচন ও নির্বাচনের ফলকে কখনোই স্বীকৃতি দেয়নি সামরিক জান্তা সরকার।
গত ২০ বছরের মধ্যে ২০১০ সালের নভেম্বরে মিয়ানমারে প্রথম সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে এনএলডি অংশ না নেওয়ায় দলটিকে ভেঙে দেয় ক্ষমতাসীনেরা।
বিতর্কিত এ নির্বাচনে জান্তা-সমর্থিত রাজনৈতিক দলগুলো নিজেদের জয়ী ঘোষণা করে। এএফপি ও রয়টার্স।
0 comments:
Post a Comment