Total Pageviews

Feedjit Live

Tuesday, July 5, 2011

পরিচালকের স্ত্রীকে ৫ লাখ টাকা জরিমানা

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বস্ত্র খাতের কোম্পানি ম্যাকসন্স স্পিনিং মিলস লিমিটেডের স্বতন্ত্র পরিচালকের স্ত্রীর বিরুদ্ধে সুবিধাভোগী বা ইনসাইডার লেনদেনের অভিযোগের প্রমাণ পাওয়া গেছে। তিনি পুঁজিবাজারের আইন অনুযায়ী কোম্পানির স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের জন্য লেনদেন নিষিদ্ধ সময়ে শেয়ার কেনাবেচা করেছেন। আর বিধিবহির্ভূত এ লেনদেনের মাধ্যমে কোটি টাকা মুনাফা করেন তিনি।
পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (এসইসি) সম্প্রতি সুবিধাভোগী এ লেনদেনের ঘটনায় অভিযুক্ত ব্যক্তিকে পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা করেছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ওয়েব সাইটে গতকাল সোমবার এ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।
এসইসি সূত্রে জানা গেছে, অভিযুক্ত ব্যক্তিকে জরিমানা করার দিন থেকে পরবর্তী ১৫ কর্মদিবসের মধ্যে জরিমানার অর্থ পরিশোধ করতে হবে। নির্ধারিত সময়ে অর্থ পরিশোধ না করলে বিধি অনুযায়ী তাঁর বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা করা হবে।
সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (সুবিধাভোগী লেনদেন নিষিদ্ধকরণ) বিধিমালায় তালিকাভুক্ত কোম্পানির পরিচালক, উদ্যোক্তা শেয়ারধারী, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও তাঁদের স্ত্রী-পুত্র-কন্যার শেয়ার কেনাবেচায় কিছু নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।
এ নিষেধাজ্ঞা অনুযায়ী হিসাব-বছর শেষ হওয়ার দুই মাস আগে থেকে পরিচালনা পর্ষদের সভায় আর্থিক বিবরণী অনুমোদন না হওয়া পর্যন্ত তাঁরা নিজ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার লেনদেন করতে পারেন না। একই নিয়ম সংশ্লিষ্ট কোম্পানির নিরীক্ষক ও আইন পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং তাঁদের স্ত্রী-পুত্র-কন্যাদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।
কোম্পানির বিভিন্ন মূল্য সংবেদনশীল তথ্য জনসাধারণের জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করার আগেই এসব ব্যক্তির তা জানার সুযোগ রয়েছে। আর এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে তাঁরা যাতে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের চেয়ে বাড়তি সুবিধা না নিতে পারেন, সে জন্যই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।
কিন্তু সুবিধাভোগী লেনদেন নিষিদ্ধকরণ বিধিমালা লঙ্ঘন করে ম্যাকসন্সের স্বতন্ত্র পরিচালক মঈন উদ্দিন চৌধুরীর স্ত্রী জেবুন নাহার মঈন ওই কোম্পানির শেয়ার লেনদেন করেন বলে এসইসির অনুসন্ধানে প্রমাণিত হয়েছে।
এসইসি সূত্র জানায়, পরিচালক স্বামীর মাধ্যমে তিনি কোম্পানির গোপন আর্থিক তথ্য আগেভাগে জেনে লভ্যাংশ ঘোষণার আগের চার দিনে শেয়ার কেনেন। এর এক মাসের মাথায় কোম্পানিটির রাইট শেয়ার ছাড়ার ঘোষণা আসে।
জানা গেছে, ম্যাকসন্স স্পিনিং মিলের হিসাব-বছর ১ অক্টোবর শুরু হয়ে শেষ হয় ৩০ সেপ্টেম্বর। ২০১০ সালের ২৫ জানুয়ারি কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ ২০০৯ সমাপ্ত হিসাব-বছরের আর্থিক বিবরণী অনুমোদন করে। এ সময় শেয়ারধারীদের জন্য ২০ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ ঘোষণা করা হয়। এই হিসেবে কোম্পানির ইনসাইডারদের ১ আগস্ট থেকে ২০১০ সালের ২৫ জানুয়ারি পর্যন্ত শেয়ার লেনদেনে অংশ নিতে পারার কথা নয়। কিন্তু নিষেধাজ্ঞা থাকার পরও জেবুন নাহার মঈন ম্যাকসন্স স্পিনিং মিলের শেয়ার লেনদেনে অংশ নেন।
এসইসি বলছে, বোনাস ও রাইট শেয়ার ছাড়ার তথ্য আগে থেকে জেনেই জেবুন নাহার শেয়ার লেনদেন করেছেন। এ সময় তিনি কোম্পানিটির দুই লাখ শেয়ার কেনেন। আবার লভ্যাংশ ঘোষণার দুই দিন পর থেকে তা বিক্রি শুরু করেন, যার মাধ্যমে তিনি প্রায় কোটি টাকা মুনাফা করতে সক্ষম হন।
বিষয়টি নজরে এলে গত বছরের ২ অক্টোবর জেবুন নাহার মঈনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় এসইসি। একই সঙ্গে তাঁকে শুনানিতে ডাকা হয়। কিন্তু নিয়ন্ত্রক সংস্থার কাছে তাঁর কোনো জবাবই গ্রহণযোগ্য মনে হয়নি।
অবশ্য এর আগে স্ত্রীকে সহযোগিতা করার জন্য স্বতন্ত্র পরিচালক মঈন উদ্দিন চৌধুরীকে পরিচালনা পর্ষদ থেকে অপসারণ করতে ম্যাকসন্স স্পিনিং মিল কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছিল এসইসি। গত ২১ জুন জারি করা ওই নির্দেশ অনুযায়ী কোম্পানি মঈন উদ্দিন চৌধুরীকে অপসারণ করেছে বলে জানা গেছে।

0 comments:

Post a Comment

Twitter Delicious Facebook Digg Stumbleupon Favorites More