তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি সই করতে বাংলাদেশের কাছে ১৯৯৫-৯৬ সাল থেকে পরবর্তী ১০-১৫ বছরের পানিপ্রবাহের উপাত্ত চেয়েছে ভারত।
পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব শেখ মো. ওয়াহিদ-উজ-জামান গতকাল মঙ্গলবার প্রথম আলোকে বলেন, ভারতের অনুরোধে সাড়া দিয়ে বাংলাদেশ শিগগিরই পানিপ্রবাহের উপাত্ত পাঠাবে।
ঢাকা ও দিল্লির কূটনৈতিক সূত্র অনুযায়ী, বাংলাদেশের ডালিয়ায় অবস্থিত তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টের ’৯৫-৯৬ সাল থেকে পরবর্তী ১০ থেকে ১৫ বছরের ১০ দিন অন্তর পানিপ্রবাহের উপাত্ত চেয়েছে ভারত। ১৫ সেপ্টেম্বর ভারতের পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম কমিশনার-১ (গঙ্গা) টি এস মেহরা যৌথ নদী কমিশনের সদস্য (জেআরসি) মীর সাজ্জাদ হোসেনকে এ ব্যাপারে চিঠি লেখেন।
তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, নতুন করে নদীর পানিপ্রবাহ বিনিময় হলে তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি সইয়ের প্রক্রিয়া দীর্ঘায়িত হবে।
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শেষ মুহূর্তে বেঁকে বসায় মনমোহনের সফরে বহুল প্রতীক্ষিত চুক্তিটি সই হয়নি। মমতার ভাষ্য অনুযায়ী, খসড়া চুক্তি সম্পর্কে কেন্দ্রীয় সরকার তাঁকে জানায়নি। খসড়ায় বাংলাদেশকে যে পরিমাণ পানি দেওয়ার প্রস্তাব রয়েছে, তাতে বঞ্চিত হবে পশ্চিমবঙ্গ। তাই তিনি এ চুক্তির পক্ষে নন।
চিঠিতে টি এস মেহরা লিখেছেন, ‘৬-৭ সেপ্টেম্বর ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের বাংলাদেশ সফরে তিস্তা ও ফেনীর অন্তর্বর্তীকালীন পানিচুক্তি সই হয়নি। যত শিগগির সম্ভব চুক্তি দুটি সইয়ের প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করতে যৌথ বিবৃতিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’
বাংলাদেশের জেআরসির সদস্যকে লেখা চিঠিতে ভারতের পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, ‘আপনি জানেন যে, চুক্তিটি বাস্তবায়ন করবে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সরকার। তাই এ প্রক্রিয়ায় তাদের আস্থায় নেওয়াটা জরুরি। এই প্রেক্ষাপটে যত শিগগির সম্ভব ডালিয়া পয়েন্টে ’৯৫-৯৬ সাল থেকে পরবর্তী ১০-১৫ বছরের পানিপ্রবাহের উপাত্ত জানাটা জরুরি। তাই ওই সময়ে প্রতি ১০ দিন পরপর ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি কতটা প্রত্যাহার করা হয়েছে, তা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব জানালে খুশি হব।’
টি এস মেহরার চিঠির অনুলিপি ভারতের পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের একাধিক কর্মকর্তা, ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনে পাঠানো হয়েছে।
ভারতের এ চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে জেআরসির সদস্য মীর সাজ্জাদ হোসেন ১৯ সেপ্টেম্বর পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিবকে চিঠি লেখেন। ভারতের চিঠির সাড়া দেওয়ার অনুমতি চেয়ে তিনি ওই চিঠি লেখেন।
গতকাল সন্ধ্যায় মুঠোফোনে জানতে চাইলে ভারতের চিঠি পাওয়ার বিষয়টি এড়িয়ে যান মীর সাজ্জাদ হোসেন। তবে তিনি বলেন, ‘ভারত যেহেতু অনুরোধ জানিয়েছে, আমরা ডালিয়া পয়েন্টে পানিপ্রবাহের উপাত্ত তাদের পাঠাব।’
তিস্তার অন্তর্বর্তী চুক্তির খসড়া চূড়ান্ত হয়েছে—দুই সরকারের পক্ষ থেকেই এমন দাবি করা হয়েছে সব সময়। তবে কি পানিপ্রবাহের উপাত্ত নিয়ে কথা হয়নি? এ প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা বলেন, পানিপ্রবাহের উপাত্তের ওপর আগে খুব একটা জোর দেওয়া হয়নি। কারণ চুক্তি হবে এটা ভারত বেশ জোর দিয়েই বলছিল। তাই ভারতের কথায় ভরসা করা ছাড়া তো উপায় ছিল না।
যোগাযোগ করা হলে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আইনুন নিশাত প্রথম আলোকে বলেন, তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তির আলোচনায় দুটি অংশ রয়েছে। একটি হচ্ছে কারিগরি, অন্যটি রাজনৈতিক। কারিগরি বিষয়টি হচ্ছে কীভাবে, কোথায় ও কখন মানে কোন সময় ধরে পানির ভাগ হবে। দুই পক্ষ থেকে ধারণা দেওয়া হয়েছিল, কারিগরি বিষয়গুলো চূড়ান্ত হয়েছে। বাকি ছিল পানির হিস্যা, যা রাজনৈতিক পর্যায়ে চূড়ান্ত হওয়ার কথা। এ পর্যায়ে পানিপ্রবাহের উপাত্ত বিনিময়ের অর্থ হচ্ছে, আবার প্রথম থেকেই আলোচনা শুরু করা। ফলে স্বাভাবিকভাবেই চুক্তি সইয়ের প্রক্রিয়া দীর্ঘায়িত হবে।
তিস্তা চুক্তি চূড়ান্ত করতে মনমোহনের সফরের মাত্র দুই দিন আগে ঢাকায় সংক্ষিপ্ত সফরে আসেন ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা শিবশংকর মেনন। তিনি ওই দিন পানিসম্পদমন্ত্রী রমেশ চন্দ্র সেন এবং প্রধানমন্ত্রীর দুই উপদেষ্টা মসিউর রহমান ও গওহর রিজভীর সঙ্গে বৈঠক করেন। ওই বৈঠকে সংশ্লিষ্ট কয়েকজন কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে উপস্থিত একজন এ প্রতিবেদককে ৩ সেপ্টেম্বর জানান, খসড়া অনুযায়ী ভারত গজালডোবা বাঁধের সামনে থেকে ৫০ ভাগ পানি তুলে নিয়ে বাকি পানি বাংলাদেশের জন্য ছেড়ে দেবে। প্রথমে ১৫ বছর মেয়াদি অন্তর্বর্তীকালীন চুক্তি হবে। পরে পানিপ্রবাহ পর্যবেক্ষণ করে একটি দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি সই হবে।
পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব শেখ মো. ওয়াহিদ-উজ-জামান গতকাল মঙ্গলবার প্রথম আলোকে বলেন, ভারতের অনুরোধে সাড়া দিয়ে বাংলাদেশ শিগগিরই পানিপ্রবাহের উপাত্ত পাঠাবে।
ঢাকা ও দিল্লির কূটনৈতিক সূত্র অনুযায়ী, বাংলাদেশের ডালিয়ায় অবস্থিত তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টের ’৯৫-৯৬ সাল থেকে পরবর্তী ১০ থেকে ১৫ বছরের ১০ দিন অন্তর পানিপ্রবাহের উপাত্ত চেয়েছে ভারত। ১৫ সেপ্টেম্বর ভারতের পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম কমিশনার-১ (গঙ্গা) টি এস মেহরা যৌথ নদী কমিশনের সদস্য (জেআরসি) মীর সাজ্জাদ হোসেনকে এ ব্যাপারে চিঠি লেখেন।
তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, নতুন করে নদীর পানিপ্রবাহ বিনিময় হলে তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি সইয়ের প্রক্রিয়া দীর্ঘায়িত হবে।
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শেষ মুহূর্তে বেঁকে বসায় মনমোহনের সফরে বহুল প্রতীক্ষিত চুক্তিটি সই হয়নি। মমতার ভাষ্য অনুযায়ী, খসড়া চুক্তি সম্পর্কে কেন্দ্রীয় সরকার তাঁকে জানায়নি। খসড়ায় বাংলাদেশকে যে পরিমাণ পানি দেওয়ার প্রস্তাব রয়েছে, তাতে বঞ্চিত হবে পশ্চিমবঙ্গ। তাই তিনি এ চুক্তির পক্ষে নন।
চিঠিতে টি এস মেহরা লিখেছেন, ‘৬-৭ সেপ্টেম্বর ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের বাংলাদেশ সফরে তিস্তা ও ফেনীর অন্তর্বর্তীকালীন পানিচুক্তি সই হয়নি। যত শিগগির সম্ভব চুক্তি দুটি সইয়ের প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করতে যৌথ বিবৃতিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’
বাংলাদেশের জেআরসির সদস্যকে লেখা চিঠিতে ভারতের পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, ‘আপনি জানেন যে, চুক্তিটি বাস্তবায়ন করবে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সরকার। তাই এ প্রক্রিয়ায় তাদের আস্থায় নেওয়াটা জরুরি। এই প্রেক্ষাপটে যত শিগগির সম্ভব ডালিয়া পয়েন্টে ’৯৫-৯৬ সাল থেকে পরবর্তী ১০-১৫ বছরের পানিপ্রবাহের উপাত্ত জানাটা জরুরি। তাই ওই সময়ে প্রতি ১০ দিন পরপর ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি কতটা প্রত্যাহার করা হয়েছে, তা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব জানালে খুশি হব।’
টি এস মেহরার চিঠির অনুলিপি ভারতের পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের একাধিক কর্মকর্তা, ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনে পাঠানো হয়েছে।
ভারতের এ চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে জেআরসির সদস্য মীর সাজ্জাদ হোসেন ১৯ সেপ্টেম্বর পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিবকে চিঠি লেখেন। ভারতের চিঠির সাড়া দেওয়ার অনুমতি চেয়ে তিনি ওই চিঠি লেখেন।
গতকাল সন্ধ্যায় মুঠোফোনে জানতে চাইলে ভারতের চিঠি পাওয়ার বিষয়টি এড়িয়ে যান মীর সাজ্জাদ হোসেন। তবে তিনি বলেন, ‘ভারত যেহেতু অনুরোধ জানিয়েছে, আমরা ডালিয়া পয়েন্টে পানিপ্রবাহের উপাত্ত তাদের পাঠাব।’
তিস্তার অন্তর্বর্তী চুক্তির খসড়া চূড়ান্ত হয়েছে—দুই সরকারের পক্ষ থেকেই এমন দাবি করা হয়েছে সব সময়। তবে কি পানিপ্রবাহের উপাত্ত নিয়ে কথা হয়নি? এ প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা বলেন, পানিপ্রবাহের উপাত্তের ওপর আগে খুব একটা জোর দেওয়া হয়নি। কারণ চুক্তি হবে এটা ভারত বেশ জোর দিয়েই বলছিল। তাই ভারতের কথায় ভরসা করা ছাড়া তো উপায় ছিল না।
যোগাযোগ করা হলে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আইনুন নিশাত প্রথম আলোকে বলেন, তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তির আলোচনায় দুটি অংশ রয়েছে। একটি হচ্ছে কারিগরি, অন্যটি রাজনৈতিক। কারিগরি বিষয়টি হচ্ছে কীভাবে, কোথায় ও কখন মানে কোন সময় ধরে পানির ভাগ হবে। দুই পক্ষ থেকে ধারণা দেওয়া হয়েছিল, কারিগরি বিষয়গুলো চূড়ান্ত হয়েছে। বাকি ছিল পানির হিস্যা, যা রাজনৈতিক পর্যায়ে চূড়ান্ত হওয়ার কথা। এ পর্যায়ে পানিপ্রবাহের উপাত্ত বিনিময়ের অর্থ হচ্ছে, আবার প্রথম থেকেই আলোচনা শুরু করা। ফলে স্বাভাবিকভাবেই চুক্তি সইয়ের প্রক্রিয়া দীর্ঘায়িত হবে।
তিস্তা চুক্তি চূড়ান্ত করতে মনমোহনের সফরের মাত্র দুই দিন আগে ঢাকায় সংক্ষিপ্ত সফরে আসেন ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা শিবশংকর মেনন। তিনি ওই দিন পানিসম্পদমন্ত্রী রমেশ চন্দ্র সেন এবং প্রধানমন্ত্রীর দুই উপদেষ্টা মসিউর রহমান ও গওহর রিজভীর সঙ্গে বৈঠক করেন। ওই বৈঠকে সংশ্লিষ্ট কয়েকজন কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে উপস্থিত একজন এ প্রতিবেদককে ৩ সেপ্টেম্বর জানান, খসড়া অনুযায়ী ভারত গজালডোবা বাঁধের সামনে থেকে ৫০ ভাগ পানি তুলে নিয়ে বাকি পানি বাংলাদেশের জন্য ছেড়ে দেবে। প্রথমে ১৫ বছর মেয়াদি অন্তর্বর্তীকালীন চুক্তি হবে। পরে পানিপ্রবাহ পর্যবেক্ষণ করে একটি দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি সই হবে।
0 comments:
Post a Comment