Total Pageviews

Feedjit Live

Sunday, September 18, 2011

গাদ্দাফি-ব্লেয়ার গোপন বৈঠক ফাঁস

লিবিয়ার ক্ষমতাচ্যুত নেতা মুয়াম্মার গাদ্দাফি এবং ব্রিটেনের সাবেক প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ার গোপনে বৈঠক করেছিলেন। ব্লেয়ারকে লিবিয়ায় নিতে ব্রিটেনে উড়ে আসে গাদ্দাফির বিলাসবহুল ব্যক্তিগত বিমান। এর কিছুদিন পরই মুক্তি পান লকারবি বোমা হামলায় সাজাপ্রাপ্ত লিবীয় নাগরিক আবদেলবাসেত আল-মেগরাহি।
ব্লেয়ারের ডাউনিং স্ট্রিটের কার্যালয়, ত্রিপোলির ব্রিটিশ দূতাবাস এবং লন্ডনে লিবীয় দূতাবাসের মধ্যে চালাচালি হওয়া চিঠি ও ই-মেইল বার্তার মাধ্যমে ব্লেয়ার ও গাদ্দাফির গোপন বৈঠকের বিষয়টি ফাঁস হয়। এতে গাদ্দাফির সঙ্গে ব্লেয়ারের সম্পর্ক এবং মেগরাহির মুক্তির ব্যাপারে তাঁর ভূমিকা নিয়ে নতুন প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। ব্রিটেনের দ্য সানডে টেলিগ্রাফ ওই চিঠি ও ই-মেইল বার্তা হাতে পেয়েছে বলে জানিয়েছে।
দ্য টেলিগ্রাফের খবরে বলা হয়, লিবিয়ায় তাঁদের বৈঠকের আগে ব্লেয়ারের জন্য গাদ্দাফি তাঁর ব্যক্তিগত বিমান পাঠান। গাদ্দাফির খরচেই ব্লেয়ার ২০০৮ সালের জুন এবং ২০০৯ সালের এপ্রিলে লিবিয়া সফর করেন। যদিও ওই সময় দুই দেশের সম্পর্কে টানাপোড়েন চলছিল। লিবিয়া তখন হুমকি দিয়ে বলেছিল, মেগরাহিকে মুক্তি না দিলে যুক্তরাজ্যের সঙ্গে তারা সব ধরনের ব্যবসায়িক সম্পর্ক ছিন্ন করবে।
ব্লেয়ারের ওই বৈঠক সম্পর্কে সরকারি কোনো ওয়েবসাইটে তথ্যপ্রমাণ নেই। তবে লকারবি হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত একজনের পরিবারের ফোন কলের সূত্র ধরে বিষয়টি ফাঁস হয়। ক্ষতিগ্রস্ত ওই ব্যক্তি গাদ্দাফির সঙ্গে ব্লেয়ার শাসনামলে করা সব গোপন চুক্তি প্রকাশ করার আহ্বান জানান।
ফাঁস হওয়া তথ্যে জানা যায়, ওই বৈঠকে ব্লেয়ারের সঙ্গী হয়েছিলেন একজন মার্কিন ধনকুবের। শুধু তা-ই নয়, তাঁদের জন্য লিবিয়ার উপকূলে অবকাশযাপনকেন্দ্র নির্মাণ করতে বলেছিলেন গাদ্দাফি।
ওই সফরের ব্যাপারে কঠোর গোপনীয়তা রক্ষা করে ব্লেয়ারের ব্যক্তিগত কার্যালয়। ব্লেয়ার সরকার লিবিয়া সফরের আলাপ-আলোচনায় গাদ্দাফির নাম উল্লেখ করেননি। গাদ্দাফিকে তারা ‘দ্য লিডার’ বা নেতা হিসেবে অভিহিত করেছেন।
গাদ্দাফির সঙ্গে ব্লেয়ারের গোপন বৈঠকের বিষয়টি ফাঁস হওয়ায় লকারবি বোমা হামলায় নিহত লোকজনের পরিবারে তীব্র ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। ১৯৮৮ সালের ওই হামলায় নিহত হয়েছিলেন প্যান ডিক্সের ভাই। ব্লেয়ারের সফর সম্পর্কে ডিক্স টেলিগ্রাফকে বলেন, ‘ব্লেয়ারের সফরের খরচ বহন করেছেন গাদ্দাফি। এটা জেনে আমি হতভম্ব হয়েছি। এ সুযোগ গ্রহণ করে ব্লেয়ার অপরাধ করেছেন। আর তাঁরা ওই বৈঠকে যেসব গোপন চুক্তি করেছেন, সেগুলো জনগণের সামনে প্রকাশ করা উচিত।’
লিবিয়ায় নিযুক্ত সাবেক ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূত অলিভার মাইলস এ প্রসঙ্গে বলেন, ব্লেয়ার তাঁর ডাউনিং স্ট্রিটের যোগাযোগকে ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করেছেন।
মেগরাহির মুক্তির ব্যাপারে ব্লেয়ার তাঁর সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি বরাবরই অস্বীকার করে আসছেন। তিনি বলেছেন, স্কটল্যান্ডের নির্বাহী কর্মকর্তারাই এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
প্রসঙ্গত, ব্লেয়ার ও গাদ্দাফির ওই গোপন বৈঠকের সময় মেগরাহির মুক্তি নিয়ে দুই দেশের সম্পর্কে টানাপোড়েন চলছিল। মেগরাহি প্যান অ্যাম বিমানের ফ্লাইটে বোমা হামলা চালিয়ে ২৭০ জনকে হত্যা করেছিলেন। ওই ঘটনায় মেগরাহি দোষী সাব্যস্ত হন। এরপর মেগরাহি ক্যানসারে আক্রান্ত হলে ২০০৯ সালে তাঁকে যুক্তরাজ্যের কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হয়। যদিও মেগরাহি আর তিন মাস বাঁচবেন বলে তখন চিকিত্সকেরা জানিয়েছিলেন।

0 comments:

Post a Comment

Twitter Delicious Facebook Digg Stumbleupon Favorites More