ঘটনার সূত্রপাত কয়েক দিন আগে। মার্কিন গোপন তারবার্তা ফাঁস করে মায়াবতীর ব্যাপারে উইকিলিকস একটা বোমাই ফাটিয়েছিল। অভিযোগ গুরুতর। ২০০৮ সালের ২৩ অক্টোবরের এক তারবার্তায় বলা হয়, যখন মায়াবতীর নতুন স্যান্ডেলের দরকার হয়, তখন তাঁর পছন্দের ব্র্যান্ডের স্যান্ডেল আনতে মায়াবতীর ব্যক্তিগত বিমান মুম্বাইয়ে উড়ে যায়।
শুধু তা-ই নয়; ২০০৭ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত মার্কিন কূটনৈতিক তারবার্তায় বহুজন সমাজ পার্টির (বিএসপি) প্রধান মায়াবতীকে (৫৫) প্রধানমন্ত্রী হওয়ার ভাবনায় আচ্ছন্ন ‘প্রথম শ্রেণীর অহং-সর্বস্ব’ হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে।
উইকিলিকসে প্রকাশিত তারবার্তায় বলা হয়, দলের সদস্য, সরকারি চাকরিজীবী ও ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে লাখ লাখ ডলার উপহার নেওয়ার মাধ্যমে প্রতিবছর জন্মদিন পালন করেন দলিত সম্প্রদায়ের মায়াবতী। জন্মদিন পালনের সময় তাঁকে কেক খাওয়ানোর জন্য প্রতিযোগিতা শুরু হয় কর্মকর্তাদের মধ্যে। তারবার্তায় বলা হয়, মায়াবতী নিজের বাড়ি থেকে অফিস পর্যন্ত একটি ব্যক্তিগত সড়ক নির্মাণ করেছেন।
উইকিলিকসে প্রকাশিত ওই তারবার্তার তথ্যের প্রতিক্রিয়ায় মায়াবতী ক্ষুব্ধ হয়ে গতকাল মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে উইকিলিকসের প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জকে মানসিক পুনর্বাসন কেন্দ্র পাঠানো উচিত বলে মন্তব্য করেন। মায়াবতী উইকিলিকসের এ অভিযোগকে নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র বলে উল্লেখ করেছেন। মায়াবতী বলেন, ‘উইকিলিকসপ্রধান হয় পাগল হয়ে গেছেন, অথবা আমাদের বিরোধীদের সমর্থন করছেন।’ তিনি অ্যাসাঞ্জকে আগ্রার মানসিক পুনর্বাসন কেন্দ্রে ভর্তিরও প্রস্তাব দেন।
মায়াবতীর এ মন্তব্যের কয়েক ঘণ্টা পরই উইকিলিকস প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ এ ব্যাপারে গণমাধ্যমে একটি বিবৃতি পাঠান। অ্যাসাঞ্জ বলেছেন, ‘মায়াবতী যুক্তিসংগত বিচারবুদ্ধির সঙ্গে প্রতারণা করেছেন। প্রশ্ন হলো, তিনি কি দলিতদের সঙ্গেও প্রতারণা করেছেন? কোনো সন্দেহ নেই যে এই দলিলগুলো মার্কিন দূতাবাসের। এই দলিল বিশ্বব্যাপী প্রমাণিত। এমনকি ওয়াশিংটন কর্তৃকও।’
মায়াবতী উদ্দেশে অ্যাসাঞ্জ বলেন, ‘হিলারির সঙ্গে মার্কিন রাষ্ট্রদূতদের যোগাযোগে এ অভিযোগ করা হয়েছে। তাঁর যদি এ বিষয়ে কোনো অভিযোগ থাকে, তা নিয়ে হিলারির সঙ্গে কথা বলা উচিত। আমি তাঁকে তাঁর ভুল স্বীকার করে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানাই।’
অ্যাসাঞ্জ আরও বলেন, ‘তিনি যদি তা করতে ব্যর্থ হন, তবে আমাকে যুক্তরাজ্য থেকে নিয়ে যেতে তাঁর ব্যক্তিগত বিমান পাঠানোকে স্বাগত জানাই, আমি যেখানে আমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে গত ২৭২ দিন ধরে গৃহবন্দী আছি। ভারতে আশ্রয় গ্রহণ করে আমি আনন্দিত হব, দেশটিকে আমি ভালোবাসি। ভারতে যাওয়ার সময় আমি মায়াবতীর জন্য যুক্তরাজ্যের সবচেয়ে ভালো জুতা নিয়ে যাব।
0 comments:
Post a Comment