Total Pageviews

Feedjit Live

Sunday, September 18, 2011

 খালেদার সঙ্গে যোগাযোগ: মওদুদকে দূত করতে চেয়েছিলেন হাসিনা

আড়াই লাখ মার্কিন তারবার্তা ফাঁস করেছে উইকিলিকস। মার্কিন কূটনীতিকদের ভাষ্যে এসব তারবার্তায় বেরিয়ে এসেছে বাংলাদেশের রাজনীতি ও ক্ষমতার অন্দরমহলের খবর

প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিকবিষয়ক উপদেষ্টা গওহর রিজভী মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে জানিয়েছিলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নেপথ্যে খালেদা জিয়ার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করছেন। এ জন্য সম্ভাব্য দূত হিসেবে বিএনপির নেতা মওদুদ আহমদের নাম উল্লেখ করেন তিনি।
উইকিলিকস প্রকাশিত মার্কিন কূটনৈতিক তারবার্তায় এ কথা বলা হয়েছে। বার্তায় বলা হয়, ২০০৯ সালের ২৬ মে মার্কিন রাষ্ট্রদূত মরিয়ার্টির সঙ্গে বৈঠক করেন রিজভী। বৈঠকের বিষয়বস্তু নিয়ে ২৮ মে ওয়াশিংটনে তারবার্তা পাঠান মরিয়ার্টি।
মার্কিন রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বৈঠকে গওহর রিজভী আরও বলেছিলেন, ২০০৯ সালের জানুয়ারি মাসে গঠিত মহাজোট সরকারের শুরুতে আমলাদের অদক্ষতা ও সিভিল-মিলিটারি সম্পর্কের সীমাবদ্ধতাসহ বিভিন্ন সমস্যা কাঙ্ক্ষিত পদক্ষেপ গ্রহণে বাধার সৃষ্টি করে।
তারবার্তায় বলা হয়, বৈঠকে আমলাদের অদক্ষতা বিষয়ে একটি উদাহরণ তুলে ধরেন রিজভী। তিনি বলেন, দরিদ্র জনগণের জন্য সামাজিক নিরাপত্তাবেষ্টনী গড়ে তুলতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিশ্বব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা একমত হয়েছিলেন। এ ব্যাপারে উদ্যোগ নিতে সরকারের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নির্দেশ দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু পরে জানা যায়, সরকারের জড়তার কারণে ওই প্রকল্পের উদ্যোগ ভেস্তে যায়।
রিজভী বলেন, প্রধানমন্ত্রী তাঁর আগের আমলের (১৯৯৬-০১) আমলাদের তুলনায় এ দফার আমলাদের দক্ষতার লক্ষণীয় অবনমনের কথা বলেছেন। তবে রিজভীর মন্তব্য, ‘আমলাদের অনিচ্ছা বা সহায়তা না করার মানসিকতা নেই। আসলে তাঁদের কাজ করার সামর্থ্য নেই।’
তারবার্তায় বলা হয়, রিজভী সরকারের একটি ইতিবাচক কার্যক্রম হিসেবে ইউএনডিপি ও বাংলাদেশ সরকারের যৌথ উদ্যোগে গৃহীত ই-গভর্নেন্সের বিষয়টির উল্লেখ করেন। তিনি জানান, বিদেশে পড়াশোনা করা তরুণ বাংলাদেশিদের একটি দল প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এ বিষয়ে দপ্তর স্থাপন করেছে। ইউএনডিপির সহায়তায় তাঁরা সরকারের সেবা দেওয়ার পথগুলোর উন্নতি করেছেন।
গওহর রিজভী বলেন, প্রধানমন্ত্রীকে সিভিল-মিলিটারি সম্পর্কের বিষয়টিও সতর্কতার সঙ্গে মোকাবিলা করতে হচ্ছে। রিজভীর পর্যবেক্ষণে ২০০৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে বিডিআর বিদ্রোহের সময়টি সিভিল-মিলিটারি সম্পর্কের সবচেয়ে কঠিন সময় ছিল।
বৈঠকে মার্কিন রাষ্ট্রদূত অর্থনৈতিক বিষয়ে জাতীয়করণ ধরনের কয়েকটি সরকারি পদক্ষেপে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। রিজভী বলেন, মার্কিন রাষ্ট্রদূতের উদ্বেগের বিষয়টি তিনি প্রধানমন্ত্রীকে জানাবেন।
বৈঠকে মরিয়ার্টি ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য বাংলাদেশ সরকারকে তাগিদ দেন। বাংলাদেশের প্রতি ভারতের আস্থা বাড়াতে উলফা নেতা অনুপ চেটিয়াকে নয়াদিল্লির কাছে হস্তান্তরের বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন তিনি। ২৮ মে রিজভী মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে জানান, অনুপ চেটিয়ার প্রসঙ্গ তিনি প্রধানমন্ত্রীর কাছে তুলেছেন। প্রধানমন্ত্রী দৃশ্যত আগ্রহী হলেও বলেছেন, অনুপ চেটিয়া কোথায় তা তিনি জানেন না। তবে জানার চেষ্টা করবেন।
তারবার্তায় বন্ধনীর মধ্যে টীকা দিয়ে বলা হয়, অনুপ চেটিয়া ১৯৯৭ সালে বাংলাদেশে গ্রেপ্তার হন। এরপর থেকে তিনি বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষের হেফাজতে আছেন বলে জানা যায়। তারবার্তার মন্তব্য অংশে বলা হয়, রিজভী স্বীকার করেন, সরকারের কিছু বড় ইস্যু ধীরগতিতে এগোচ্ছে। এর কারণ হিসেবে স্বামীর মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রীর মানসিক অবস্থা ও বিডিআর বিদ্রোহ মোকাবিলা নিয়ে ব্যস্ত থাকার কথা উল্লেখ করেন তিনি। তবে এর পরও রিজভীকে আশাবাদী মনে হয়েছে বলে লিখেছেন রাষ্ট্রদূত।
এ ব্যাপারে মন্তব্য জানার জন্য গওহর রিজভীর সঙ্গে ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়েছে। তবে তাঁকে পাওয়া যায়নি

0 comments:

Post a Comment

Twitter Delicious Facebook Digg Stumbleupon Favorites More