রাজনৈতিক
দলগুলোর কিছু নেতা সামরিক বাহিনীর সহায়তায় দুই নেত্রীকে রাজনৈতিকভাবে
নির্বাসনে পাঠানোর পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছেন—এমন তথ্যে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া
দেখিয়েছিলেন খালেদা জিয়া। আর শেখ হাসিনা বিষয়টিকে রসিকতা করে উড়িয়ে দেন।
তিনি বলেন, খালেদা জিয়া আবার ক্ষমতায় আসার চেয়ে সেনাবাহিনী আসাই বরং ভালো।
২০০৭ সালের ৭ জানুয়ারি ঢাকায় নিযুক্ত তখনকার মার্কিন রাষ্ট্রদূত প্যাট্রিসিয়া এ বিউটেনিস ও ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরী খালেদা জিয়ার সঙ্গে বৈঠক করেন। এর আগের দিন তাঁরা বসেন শেখ হাসিনার সঙ্গে। উইকিলিকসের ফাঁস করা ঢাকার মার্কিন দূতাবাসের তারবার্তায় এ তথ্য পাওয়া গেছে।
দুই কূটনীতিক খালেদাকে জানান, রাজনৈতিক দলগুলো থেকেই কিছু নেতা তাঁদের কাছে গিয়ে সামরিক বাহিনীর সহায়তায় দুই নেত্রীকে রাজনৈতিকভাবে নির্বাসনে পাঠানোর পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন। তারবার্তায় বলা হয়েছে, বিষয়টি শুনে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখান খালেদা। তিনি যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও সুশীল সমাজকে এ ধরনের গুঞ্জনে উৎসাহ দেওয়ার দায়ে অভিযুক্ত করেন। উভয় কূটনীতিক এই অভিযোগ স্পষ্ট ভাষায় নাকচ করে দেন।
তারবার্তার ওই বৈঠকের উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়, বিরোধী দলের সঙ্গে রাজনৈতিক সমঝোতার জন্য আন্তর্জাতিক মহলের পরামর্শ সত্ত্বেও ২০০৭ সালের ২২ জানুয়ারি সংসদ নির্বাচন করতে অটল ছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। তবে তিনি ক্ষমতায় গেলে নির্বাচনী আইন সংস্কার করে ১২ থেকে ১৫ মাসের মধ্যে নতুন নির্বাচনের প্রস্তাব দিয়েছিলেন তাঁদের কাছে।
তারবার্তায় বলা হয়েছে, খালেদা জিয়া কূটনীতিকদের কাছে স্বীকার করেন, তাঁর দলের অনেক নেতা ক্ষুব্ধ হয়ে থাকতে পারেন, কিন্তু তিনি তাঁদের দলের মধ্যকার ‘বাজে উপাদান’ বলে নাকচ করে দেন।
সামরিক অভ্যুত্থান ও সহিংসতা এড়াতে দুই প্রধান রাজনৈতিক দলের বড় ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন বলে খালেদাকে জানানো হয়। বিউটেনিস ও আনোয়ার চৌধুরী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠকের প্রস্তাব দেন খালেদাকে। কিন্তু নির্বাচনের আগে শেখ হাসিনার সঙ্গে কোনো ধরনের আলোচনার সম্ভাবনা নাকচ করে দেন খালেদা জিয়া। একই সঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমরা সব সময় আওয়ামী লীগের সঙ্গে আলোচনায় প্রস্তুত, কিন্তু আওয়ামী লীগ আলোচনায় বসতে চায় না।’
খালেদা বলেন, তাঁরা সব সময় চেয়েছেন আওয়ামী লীগ নির্বাচনে অংশ নিক, কিন্তু এখন অনেক দেরি হয়ে গেছে। ২২ জানুয়ারিতেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
বিউটেনিস ও আনোয়ার চৌধুরী আগের দিন ৬ জানুয়ারি শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠক করেন। অভ্যুত্থান ও নির্বাসনে পাঠানোর আশঙ্কার তথ্য জানালে শেখ হাসিনাও তা নাকচ করে দেন, তবে ব্যক্তিগত নিরাপত্তার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন তিনি। যুক্তরাষ্ট্রে নির্বাসনে পাঠানো হতে পারে, এমন কথা শুনে রসিকতা করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘সেখানে আমি আমার নাতনিকে দেখতে পাব।’
শেখ হাসিনা দুই কূটনীতিককে বলেন, সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপে যদি ‘বর্তমান পরিস্থিতি ঠিক হয়ে যায়’ তা-ও ভালো। মার্কিন রাষ্ট্রদূতের এক প্রশ্নের জবাবে হাসিনা বলেন, এখন সামরিক অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়ার মতো ক্ষমতা কোনো সেনা কর্মকর্তার নেই। তা ছাড়া সেনাবাহিনী এলেও রাজনৈতিক সমস্যা সমাধানে প্রয়োজনের চেয়ে বেশি সময় ক্ষমতায় থাকলে জনগণ তা মেনে নেবে না। সেনাবাহিনী ক্ষমতা ছাড়তে না চাইলে সহিংসতা ও রক্তপাত হবে, দেশ ধ্বংস হয়ে যাবে।
শেখ হাসিনা মার্কিন রাষ্ট্রদূত ও ব্রিটিশ হাইকমিশনারকে জানান, বিএনপি নির্বাচনে জেতার জন্য সব পরিকল্পনা করেছে। সেই পরিকল্পনামতো তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন রাষ্ট্রপতি ইয়াজউদ্দিন আহম্মেদ। এ বিষয়টি আওয়ামী লীগ তথা মহাজোটকে নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য করেছে। শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিএনপি চায় না আওয়ামী লীগ নির্বাচনে অংশ নিক। কারণ, তারা জানে, নির্বাচনে আমরাই জয়ী হব।’
শেখ হাসিনা অভিযোগ করেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও রাষ্ট্রপতি ইয়াজউদ্দিন আহম্মেদ উপদেষ্টাদের কথা শুনছেন না, তিনি বিএনপির কথামতো চলছেন। রাষ্ট্রপতি শুধু একটি নির্বাচন করে খালেদা জিয়ার কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে চান। এ অবস্থায় নির্বাচন বর্জন করা ছাড়া মহাজোটের বিকল্প কোনো পথ নেই।
বিএনপির প্রস্তাবমতো ২২ জানুয়ারি নির্বাচন হওয়ার পর নির্বাচনী সংস্কার শেষে এক বছরের মধ্যে নতুন নির্বাচনের সম্ভাবনার কথা জানানো হলে শেখ হাসিনা তা নাকচ করে দেন। শেখ হাসিনা বলেন, খালেদা জিয়ার ক্ষমতায় ফিরে আসার চেয়ে তিনি সেনাবাহিনীর সংশ্লিষ্টতায় বর্তমান সমস্যা সমাধানকে সমর্থন করবেন। সাবেক রাষ্ট্রপতি ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদকে নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণার জন্য মহাজোট নির্বাচন বর্জন করেছে—এমন কথা নাকচ করে দেন শেখ হাসিনা।
শেখ হাসিনা বলেন, রাষ্ট্রপতি ইয়াজউদ্দিন আহম্মেদকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে প্রথমে মেনে নেওয়ায় দলের সমর্থকেরা তাঁকে দোষারোপ করেছেন।
এর আগে শেখ হাসিনা নির্বাচন পর্যবেক্ষণের আহ্বান জানিয়ে জাতিসংঘের মহাসচিবের কাছেও চিঠি লিখেছিলেন। prothom-alo.com
২০০৭ সালের ৭ জানুয়ারি ঢাকায় নিযুক্ত তখনকার মার্কিন রাষ্ট্রদূত প্যাট্রিসিয়া এ বিউটেনিস ও ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরী খালেদা জিয়ার সঙ্গে বৈঠক করেন। এর আগের দিন তাঁরা বসেন শেখ হাসিনার সঙ্গে। উইকিলিকসের ফাঁস করা ঢাকার মার্কিন দূতাবাসের তারবার্তায় এ তথ্য পাওয়া গেছে।
দুই কূটনীতিক খালেদাকে জানান, রাজনৈতিক দলগুলো থেকেই কিছু নেতা তাঁদের কাছে গিয়ে সামরিক বাহিনীর সহায়তায় দুই নেত্রীকে রাজনৈতিকভাবে নির্বাসনে পাঠানোর পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন। তারবার্তায় বলা হয়েছে, বিষয়টি শুনে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখান খালেদা। তিনি যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও সুশীল সমাজকে এ ধরনের গুঞ্জনে উৎসাহ দেওয়ার দায়ে অভিযুক্ত করেন। উভয় কূটনীতিক এই অভিযোগ স্পষ্ট ভাষায় নাকচ করে দেন।
তারবার্তার ওই বৈঠকের উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়, বিরোধী দলের সঙ্গে রাজনৈতিক সমঝোতার জন্য আন্তর্জাতিক মহলের পরামর্শ সত্ত্বেও ২০০৭ সালের ২২ জানুয়ারি সংসদ নির্বাচন করতে অটল ছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। তবে তিনি ক্ষমতায় গেলে নির্বাচনী আইন সংস্কার করে ১২ থেকে ১৫ মাসের মধ্যে নতুন নির্বাচনের প্রস্তাব দিয়েছিলেন তাঁদের কাছে।
তারবার্তায় বলা হয়েছে, খালেদা জিয়া কূটনীতিকদের কাছে স্বীকার করেন, তাঁর দলের অনেক নেতা ক্ষুব্ধ হয়ে থাকতে পারেন, কিন্তু তিনি তাঁদের দলের মধ্যকার ‘বাজে উপাদান’ বলে নাকচ করে দেন।
সামরিক অভ্যুত্থান ও সহিংসতা এড়াতে দুই প্রধান রাজনৈতিক দলের বড় ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন বলে খালেদাকে জানানো হয়। বিউটেনিস ও আনোয়ার চৌধুরী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠকের প্রস্তাব দেন খালেদাকে। কিন্তু নির্বাচনের আগে শেখ হাসিনার সঙ্গে কোনো ধরনের আলোচনার সম্ভাবনা নাকচ করে দেন খালেদা জিয়া। একই সঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমরা সব সময় আওয়ামী লীগের সঙ্গে আলোচনায় প্রস্তুত, কিন্তু আওয়ামী লীগ আলোচনায় বসতে চায় না।’
খালেদা বলেন, তাঁরা সব সময় চেয়েছেন আওয়ামী লীগ নির্বাচনে অংশ নিক, কিন্তু এখন অনেক দেরি হয়ে গেছে। ২২ জানুয়ারিতেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
বিউটেনিস ও আনোয়ার চৌধুরী আগের দিন ৬ জানুয়ারি শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠক করেন। অভ্যুত্থান ও নির্বাসনে পাঠানোর আশঙ্কার তথ্য জানালে শেখ হাসিনাও তা নাকচ করে দেন, তবে ব্যক্তিগত নিরাপত্তার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন তিনি। যুক্তরাষ্ট্রে নির্বাসনে পাঠানো হতে পারে, এমন কথা শুনে রসিকতা করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘সেখানে আমি আমার নাতনিকে দেখতে পাব।’
শেখ হাসিনা দুই কূটনীতিককে বলেন, সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপে যদি ‘বর্তমান পরিস্থিতি ঠিক হয়ে যায়’ তা-ও ভালো। মার্কিন রাষ্ট্রদূতের এক প্রশ্নের জবাবে হাসিনা বলেন, এখন সামরিক অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়ার মতো ক্ষমতা কোনো সেনা কর্মকর্তার নেই। তা ছাড়া সেনাবাহিনী এলেও রাজনৈতিক সমস্যা সমাধানে প্রয়োজনের চেয়ে বেশি সময় ক্ষমতায় থাকলে জনগণ তা মেনে নেবে না। সেনাবাহিনী ক্ষমতা ছাড়তে না চাইলে সহিংসতা ও রক্তপাত হবে, দেশ ধ্বংস হয়ে যাবে।
শেখ হাসিনা মার্কিন রাষ্ট্রদূত ও ব্রিটিশ হাইকমিশনারকে জানান, বিএনপি নির্বাচনে জেতার জন্য সব পরিকল্পনা করেছে। সেই পরিকল্পনামতো তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন রাষ্ট্রপতি ইয়াজউদ্দিন আহম্মেদ। এ বিষয়টি আওয়ামী লীগ তথা মহাজোটকে নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য করেছে। শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিএনপি চায় না আওয়ামী লীগ নির্বাচনে অংশ নিক। কারণ, তারা জানে, নির্বাচনে আমরাই জয়ী হব।’
শেখ হাসিনা অভিযোগ করেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও রাষ্ট্রপতি ইয়াজউদ্দিন আহম্মেদ উপদেষ্টাদের কথা শুনছেন না, তিনি বিএনপির কথামতো চলছেন। রাষ্ট্রপতি শুধু একটি নির্বাচন করে খালেদা জিয়ার কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে চান। এ অবস্থায় নির্বাচন বর্জন করা ছাড়া মহাজোটের বিকল্প কোনো পথ নেই।
বিএনপির প্রস্তাবমতো ২২ জানুয়ারি নির্বাচন হওয়ার পর নির্বাচনী সংস্কার শেষে এক বছরের মধ্যে নতুন নির্বাচনের সম্ভাবনার কথা জানানো হলে শেখ হাসিনা তা নাকচ করে দেন। শেখ হাসিনা বলেন, খালেদা জিয়ার ক্ষমতায় ফিরে আসার চেয়ে তিনি সেনাবাহিনীর সংশ্লিষ্টতায় বর্তমান সমস্যা সমাধানকে সমর্থন করবেন। সাবেক রাষ্ট্রপতি ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদকে নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণার জন্য মহাজোট নির্বাচন বর্জন করেছে—এমন কথা নাকচ করে দেন শেখ হাসিনা।
শেখ হাসিনা বলেন, রাষ্ট্রপতি ইয়াজউদ্দিন আহম্মেদকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে প্রথমে মেনে নেওয়ায় দলের সমর্থকেরা তাঁকে দোষারোপ করেছেন।
এর আগে শেখ হাসিনা নির্বাচন পর্যবেক্ষণের আহ্বান জানিয়ে জাতিসংঘের মহাসচিবের কাছেও চিঠি লিখেছিলেন। prothom-alo.com
0 comments:
Post a Comment