Total Pageviews

Feedjit Live

Monday, June 20, 2011

তত্ত্বাবধায়ক বাতিলের সুপারিশ অনুমোদন



তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থার বিধান বিলুপ্ত করার সুপারিশ-সংবলিত প্রতিবেদনটি মন্ত্রিসভার বৈঠকে চূড়ান্ত অনুমোদন পেয়েছে। সংবিধান সংশোধনে গঠিত বিশেষ কমিটি এই প্রতিবেদন তৈরি করেছিল।
গতকাল সোমবার সচিবালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকে এই অনুমোদন দেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এতে সভাপতিত্ব করেন। বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ সাংবাদিকদের জানান, বিশেষ কমিটির সুপারিশ কোনো পরিবর্তন ছাড়াই মন্ত্রিসভা অনুমোদন দিয়েছে।
বৈঠকে ‘রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম’ এবং সংবিধানের প্রস্তাবনায় ‘বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম’ রাখা নিয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী এ কে খন্দকার আপত্তি করলেও তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা রাখা না-রাখার বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়নি। বিশেষ কমিটি তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বিলুপ্তির যে সুপারিশ করেছে, মন্ত্রিসভা তা বিনা বাক্যে অনুমোদন দেয়।
এ বিষয়ে আইনমন্ত্রী শফিক আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের রায়ের আলোকেই বিশেষ কমিটি সুপারিশ করেছে। সেই সুপারিশ মন্ত্রিসভা অনুমোদন দিয়েছে।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারবিষয়ক সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল করে সম্প্রতি রায় দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। সংবিধান সংশোধনবিষয়ক সংসদীয় বিশেষ কমিটিও তত্ত্বাবধায়ক সরকার-ব্যবস্থা বাতিলের সুপারিশ করেছে।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বিলুপ্তিসহ ৫১টি সুপারিশ-সংবলিত প্রতিবেদন ৮ জুন সংসদে উপস্থাপন করে বিশেষ কমিটি। বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম, রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম ও ধর্মভিত্তিক রাজনীতি রাখার বিষয়ে আপত্তি জানান কমিটির দুই সদস্য রাশেদ খান মেনন ও হাসানুল হক ইনু। স্পিকার প্রতিবেদনটি পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠান। আইন মন্ত্রণালয় গতকাল তা মন্ত্রিসভায় পেশ করে।
বৈঠক সূত্র জানায়, মন্ত্রিসভার বৈঠকে প্রতিবেদনের প্রতিটি সুপারিশ আইনমন্ত্রী পড়ে শোনান। অন্য কোনো সুপারিশ নিয়ে আপত্তি না উঠলেও রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম ও বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম রাখা নিয়ে আপত্তি তোলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এ কে খন্দকার। তবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই আপত্তি গ্রহণ করেননি। তিনি বলেন, বাস্তবতার নিরিখেই এ সুপারিশ করা হয়েছে। পরিকল্পনামন্ত্রী এ বিষয়ে জোরালো আপত্তি করলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করা হয় এইচ এম এরশাদের আমলে। তখন তো আপনি মন্ত্রী ছিলেন। আপত্তি করেননি কেন?’
বিশেষ কমিটি ২৭টি বৈঠক করে প্রতিবেদন চূড়ান্ত করে। এর আগে পাঁচজন সাবেক প্রধান বিচারপতি, মূল সংবিধানের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট গণপরিষদ সদস্যসহ আইন ও সংবিধান বিশেষজ্ঞ, বুদ্ধিজীবী, জাতীয় দৈনিকের সম্পাদক, সংসদে প্রতিনিধিত্বকারী রাজনৈতিক দল ও সেক্টর কমান্ডারদের মতামত নেয় বিশেষ কমিটি। তবে প্রধান বিরোধী দল বিএনপি কমিটিতে যায়নি, মতামতও দেয়নি।
বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি ও বিশেষ কমিটির সদস্য রাশেদ খান মেনন প্রথম আলোকে বলেন, সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বিলুপ্ত হয়ে গেছে। এটা রাখার কোনো সুযোগ নেই। তবে রাজনৈতিক বাস্তবতায় আগামী দুই মেয়াদ এটা রাখার প্রয়োজন আছে। সে ক্ষেত্রে সবাইকে সুনির্দিষ্ট ফর্মুলা বের করতে হবে। এ জন্য বিএনপিকে আলোচনায় আসতে হবে।
কমিটির আরেক সদস্য জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু বলেন, মন্ত্রিসভার বৈঠকে সংসদীয় বিশেষ কমিটির সুপারিশ অনুমোদনের সঙ্গে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বিলুপ্তির কোনো সম্পর্ক নেই। কারণ, সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পরই তা বিলুপ্ত হয়ে গেছে। কিন্তু মন্ত্রিসভায় অনুমোদনের পরও অন্তর্বর্তী সময়ে কী পন্থায় নির্বাচন হবে, সে ব্যাপারে সমঝোতার সুযোগ আছে। আলোচনার পথ বন্ধ হয়ে যায়নি।
মন্ত্রিসভায় অন্য বিষয়: মন্ত্রিসভার গতকালের বৈঠকে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১১-এর খসড়া নীতিগত অনুমোদন এবং ইউএন কনভেনশন অ্যাগেইনস্ট ট্রান্সন্যাশনাল অরগানাইজড ক্রাইম (পালের্মো কনভেনশন) অ্যাক্সেশন-এর প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
মানি লন্ডারিং আইনের খসড়া নীতিগত অনুমোদন প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব বলেন, অর্থপাচার রোধে ২০০২ সালে প্রথম একটি আইন প্রণয়ন করা হয়। এটি ২০০৯ সালে সংশোধন করা হয়। কিন্তু এ সংশোধনী বর্তমান পরিপ্রেক্ষিতে আরও সংশোধনের প্রয়োজন দেখা দেয়। এ জন্য আইনটি নতুন করে সংশোধনের উদ্যোগ নেওয়া হয়। আইনটি অনুমোদন ও পাস হলে অর্থপাচার রোধে এটি কার্যকর ভূমিকা রাখবে।
প্রথম আলো

0 comments:

Post a Comment

Twitter Delicious Facebook Digg Stumbleupon Favorites More