প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
গতকাল শনিবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিনিয়োগ বোর্ডের (বিওআই) প্রধান কার্যালয় ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনকালে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমার প্রশ্ন হলো, কে বেশি দেশপ্রেমিক এবং দেশের স্বার্থের বিষয়টি আমার চেয়ে কে বেশি ভাবে?’ খবর ইউএনবি ও বাসসের।
গৃহায়ণ ও গণপূর্ত বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সচিব খন্দকার শওকত হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন গৃহায়ণ ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী আব্দুল মান্নান খান ও বিনিয়োগ বোর্ডের নির্বাহী চেয়ারম্যান এস এ সামাদ।
তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির প্রতি ইঙ্গিত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দেশের স্বার্থের কথা বলে তারা প্রায়ই উচ্চবাচ্য করে। দেশে যখন কোনো নতুন বিদ্যুৎ উৎপাদন ও গ্যাস অনুসন্ধান করা হচ্ছিল না, তখন তারা কোথায় ছিল? গ্যাস ও বিদ্যুতের অভাবে উৎপাদন শুরুর জন্য বিনিয়োগকারীদের বছরের পর বছর অপেক্ষা করতে হয়েছে।’
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘দেশের উন্নয়নের জন্য আগের সরকার কিছুই করেনি। অথচ এরা তখন চুপ ছিল। আর আমরা যখন কিছু করতে যাচ্ছি, তখনই তারা বিরোধিতা শুরু করেছে।’ দেশের স্বার্থ ও দেশের মানুষের কল্যাণের বিপক্ষে বর্তমান সরকার কোনো কিছুই করবে না বলে জানান শেখ হাসিনা।
শেখ হাসিনা বলেন, তাঁর দল কিছু বিদেশি কোম্পানির কাছে গ্যাস বিক্রি করতে চায়নি বলে ২০০১ সালের নির্বাচনে বেশি ভোট পেয়েও ক্ষমতায় যেতে পারেনি। তিনি বলেন, ‘বিদেশিদের সঙ্গে যেকোনো চুক্তিতে যাওয়ার আগে আমরা জাতীয় স্বার্থকেই অগ্রাধিকার দিয়ে থাকি।’
বঙ্গোপসাগরের দুটি ব্লকে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানের জন্য গত বৃহস্পতিবার মার্কিন কোম্পানি কনোকো ফিলিপসের সঙ্গে চুক্তি করেছে সরকার। এই চুক্তির সমালোচনা করে তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি বলেছে, এতে জাতীয় স্বার্থ রক্ষিত হয়নি। এর প্রতিবাদে আগামী ৩ জুলাই আধা বেলা হরতাল ডেকেছে কমিটি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে ক্ষমতা নেওয়ার পরপরই তাঁর সরকার দেশে বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টির বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে কাজ শুরু করেছে। তিনি বলেন, তাঁর সরকার বাংলাদেশকে দক্ষিণ এশিয়ার বিনিয়োগবান্ধব গন্তব্যস্থানে পরিণত করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়ায় বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দা সত্ত্বেও দেশে প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) ক্রমেই বাড়ছে।
প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগের বিস্তারিত বিবরণ তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, উন্নত দেশগুলোর অর্থনৈতিক মন্দার কারণে কয়েক বছর ধরে বিশ্বব্যাপী প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ-প্রবাহ কমে গেছে। এর পরও ২০০৯ সালে বাংলাদেশ ৭০ কোটি ডলারেরও বেশি এফডিআই পেয়েছে এবং ২০১০ সালে ৯১ কোটি ডলারের বেশি এফডিআই এসেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের ভৌগোলিক অবস্থান, সাশ্রয়ী ও সহজে প্রশিক্ষণযোগ্য শ্রমশক্তি, সহজ আঞ্চলিক যোগাযোগব্যবস্থা, ক্রমবর্ধমান অভ্যন্তরীণ বাজার ও আকর্ষণীয় বিনিয়োগ প্রণোদনা বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করছে। তাঁর সরকার এবার দায়িত্ব গ্রহণের পর বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টিকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে। এ ছাড়া বিদেশি বিনিয়োগকারীদের উৎসাহিত করতে বিনিয়োগ খাতে কর অবকাশ-সুবিধা ঘোষণা করেছে সরকার।
দেশে বিদ্যমান বিদ্যুৎ পরিস্থিতির জন্য বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারকে দায়ী করে শেখ হাসিনা বলেন, ২০০১ সাল-পরবর্তী জোট সরকার পাঁচ বছরে জাতীয় গ্রিডে এক মেগাওয়াট বিদ্যুৎও যোগ করতে পারেনি। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় এসে ইতিমধ্যে এক হাজার ৯২২ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত করেছে। আরও ২৬টি বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের মধ্য দিয়ে শিগগিরই আরও প্রায় তিন হাজার ৩০৩ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ যুক্ত হবে।
প্রথম আলো
Posted in: Funny,উক্তি-২০১১,প্রধানমন্ত্রী,মজাদার,স্মরনীয় বানী
0 comments:
Post a Comment