সাম্রাজ্যবাদী আগ্রাসন,
লুণ্ঠন, দখল ও অবরোধের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে ঢাকায়
শুরু হয়েছে তৃতীয় আন্তর্জাতিক সাম্রাজ্যবাদবিরোধী সম্মেলন। বিশ্বের ২৫টি
দেশের প্রতিনিধিরা এ সম্মেলনে অংশ নিচ্ছেন। গতকাল উদ্বোধনী অধিবেশনের ছবি
প্রথম আলো
দেশে
দেশে সাম্রাজ্যবাদী আগ্রাসন, লুণ্ঠন, দখলদারি ও অবরোধের বিরুদ্ধে
বিশ্ববাসীকে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানিয়ে শুরু হয়েছে ‘তৃতীয় আন্তর্জাতিক
সাম্রাজ্যবাদবিরোধী ঢাকা সম্মেলন-২০১১’।
সম্মেলনে বলা হয়, বিশ্বের মানুষ শান্তি চায়। আর সেই শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে হলে সাম্রাজ্যবাদী আগ্রাসনের বিরুদ্ধে সম্মিলিতভাবে লড়াই করতে হবে। লড়াই করেই পৃথিবীটা গড়তে হবে।
গতকাল রোববার দিনব্যাপী এই সম্মেলন শুরু হয়। বিশ্বের ২৫টি দেশের দেড় শতাধিক নেতাসহ ১০ হাজারেরও বেশি মানুষ এই সম্মেলনে যোগ দিয়েছেন।
ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্টি ইম্পেরিয়ালিস্ট অ্যান্ড পিপলস সলিডারিটি কো-অর্ডিনেটিং কমিটির (আইএপিএসসিসি) সঙ্গে যৌথভাবে এই সম্মেলনের আয়োজন করছে বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ)। এর আগে ২০০৭ সালে ভারতের কলকাতায় প্রথম এবং ২০০৯ সালে লেবাননের বৈরুতে দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
ঢাকা মহানগর নাট্যমঞ্চ থেকে গতকাল সকালে শোভাযাত্রার মাধ্যমে এই সম্মেলন শুরু হয়। বিকেলে নাট্যমঞ্চের খোলা ময়দানে সুবিশাল একটি মঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় উদ্বোধনী অধিবেশন। মুহুর্মুহ করতালি ও স্লোগানের মাধ্যমে এ সময় নাট্যমঞ্চ এলাকা মুখরিত হয়ে ওঠে।
উদ্বোধনী সমাবেশে বাসদের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান বলেন, ‘সাম্রাজ্যবাদী বহুজাতিক কোম্পানি ও সাম্রাজ্যবাদের কাছে নতজানু শাসকগোষ্ঠীর কবল থেকে তেল-গ্যাস-কয়লাসহ প্রাকৃতিক ও খনিজ সম্পদ রক্ষার দাবিতে আমরা লড়াই করছি। আর যুক্তরাষ্ট্রে মানুষ লড়ছে বিশ্ব পুঁজিবাদী-সাম্রাজ্যবাদী অর্থনীতির প্রাণকেন্দ্র ওয়াল স্ট্রিট দখল করার ডাক দিয়ে। এই দুই আন্দোলনের লক্ষ্য একটাই—শোষণ থেকে মুক্তি, সাম্রাজ্যবাদের যুদ্ধ-লুটতরাজ-দখলদারি থেকে মুক্তি।
আইএপিএসসিসির সভাপতি যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল রামজে ক্লার্কের লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান যুক্তরাষ্ট্রের ওয়ার্কার্স ওয়ার্ল্ড পার্টির সম্পাদক-মণ্ডলীর সদস্য সারা ফ্লাউন্ডার্স। তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র মানবতা, শান্তি ও সভ্যতার শত্রু। দেশের অভ্যন্তরেই আমরা মার্কিন শাসিতদের সাম্রাজ্যবাদী নীতির বিরুদ্ধে লড়ছি।’
আইএপিএসসিসির সাধারণ সম্পাদক ও সোশ্যালিস্ট ইউনিটি সেন্টার অব ইন্ডিয়ার (কমিউনিস্ট) পলিটব্যুরোর সদস্য মানিক মুখার্জি বলেন, এমন একটি সময়ে এই সম্মেলন হচ্ছে, যখন তিউনিসিয়া থেকে মিসর, ওয়াল স্ট্রিট—সর্বত্র পুঁজিবাদ-সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে মানুষ বিক্ষুব্ধ।
মানিক মুখার্জি বলেন, ‘সাম্রাজ্যবাদী শক্তি যত দিন টিকে থাকবে, তত দিন শান্তি প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়। কাজেই বিশ্বশান্তি চাইলে সাম্রাজ্যবাদবিরোধী লড়াই শুরু করতে হবে। তবে সেটি কেবল মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ নয়, ভারতীয় সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধেও লড়তে হবে। প্রয়োজনে সারা বিশ্বে সাম্রাজ্যবাদবিরোধী শক্তির ঐক্য গড়ে তুলতে হবে।
সম্মেলনে নেপালের ঐক্যবদ্ধ কমিউনিস্ট পার্টির (মাওবাদী) চেয়ারম্যান পুষ্প কমল দহল প্রচণ্ডের উপস্থিত থাকার কথা থাকলেও দেশটির সংবিধান প্রণয়নের শেষ মুহূর্তের কাজের জন্য তিনি আসতে পারেননি। তাঁর লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান মাওবাদী আরেক নেতা এবং দেশটির সাবেক উপপ্রধানমন্ত্রী কৃষ্ণ বাহাদুর মাহারা। প্রচণ্ডের লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ‘আমি এই সম্মেলনে এই বার্তাই পৌঁছে দিতে চাই, শোষণ-নিপীড়নের বিরুদ্ধে যেকোনো আন্দোলনে আমরা এক কাতারে থাকতে অঙ্গীকারবদ্ধ।’
উদ্বোধনী অধিবেশনে আরও বক্তব্য দেন ভেনেজুয়েলার শ্রমিক নেত্রী মারিয়া মারসেলা মাসপেরো ফার্নান্দেজ, আরব ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর কমিউনিটি অ্যান্ড সলিডারিটির সভাপতি মান বাছুর, পাকিস্তানের কমিউনিস্ট পার্টির নেতা মোহাম্মদ ইকবাল, কোরিয়ান কমিটি ফর আফ্রো-এশিয়ান সলিডারিটির সাধারণ সম্পাদক রি ছং, ফিলিস্তিনের আলদামির অ্যাসোসিয়েশন ফর হিউম্যান রাইটসের সংগঠক খলিল এম জে আবু সামলা এবং বাংলাদেশের তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির আহ্বায়ক শেখ মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ।
অনুষ্ঠানের শুরুতে মঞ্চের পাশে নির্মিত শহীদ বেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে এবং সাম্রাজ্যবাদ ও গণতন্ত্রের লড়াইয়ে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। পরে সম্মেলনে অংশ নেওয়া প্রতিটি দেশের পক্ষ থেকে বেলুন উড়িয়ে সম্মেলনের উদ্বোধন ঘোষণা করা হয়। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন বাসদের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য বজলুর রশিদ।
সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বাসদের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মুবিনুল হায়দার চৌধুরী, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি মনজুরুল আহসান খান, সাধারণ সম্পাদক মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু, ভাষাসৈনিক আবদুল মতিন, কলামিস্ট সৈয়দ আবুল মকসুদ, আনু মুহাম্মদ প্রমুখ।
আয়োজকেরা জানান, আজ ও আগামীকাল নাট্যমঞ্চের কাজী বশির মিলনায়তন ও শিল্পকলা একাডেমী মিলনায়তনে বিষয়ভিত্তিক সেমিনার চলবে। আগামীকাল বিকেলে ঢাকা ঘোষণার মধ্য দিয়ে এই সম্মেলন শেষ হবে। prothom-alo
সম্মেলনে বলা হয়, বিশ্বের মানুষ শান্তি চায়। আর সেই শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে হলে সাম্রাজ্যবাদী আগ্রাসনের বিরুদ্ধে সম্মিলিতভাবে লড়াই করতে হবে। লড়াই করেই পৃথিবীটা গড়তে হবে।
গতকাল রোববার দিনব্যাপী এই সম্মেলন শুরু হয়। বিশ্বের ২৫টি দেশের দেড় শতাধিক নেতাসহ ১০ হাজারেরও বেশি মানুষ এই সম্মেলনে যোগ দিয়েছেন।
ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্টি ইম্পেরিয়ালিস্ট অ্যান্ড পিপলস সলিডারিটি কো-অর্ডিনেটিং কমিটির (আইএপিএসসিসি) সঙ্গে যৌথভাবে এই সম্মেলনের আয়োজন করছে বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ)। এর আগে ২০০৭ সালে ভারতের কলকাতায় প্রথম এবং ২০০৯ সালে লেবাননের বৈরুতে দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
ঢাকা মহানগর নাট্যমঞ্চ থেকে গতকাল সকালে শোভাযাত্রার মাধ্যমে এই সম্মেলন শুরু হয়। বিকেলে নাট্যমঞ্চের খোলা ময়দানে সুবিশাল একটি মঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় উদ্বোধনী অধিবেশন। মুহুর্মুহ করতালি ও স্লোগানের মাধ্যমে এ সময় নাট্যমঞ্চ এলাকা মুখরিত হয়ে ওঠে।
উদ্বোধনী সমাবেশে বাসদের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান বলেন, ‘সাম্রাজ্যবাদী বহুজাতিক কোম্পানি ও সাম্রাজ্যবাদের কাছে নতজানু শাসকগোষ্ঠীর কবল থেকে তেল-গ্যাস-কয়লাসহ প্রাকৃতিক ও খনিজ সম্পদ রক্ষার দাবিতে আমরা লড়াই করছি। আর যুক্তরাষ্ট্রে মানুষ লড়ছে বিশ্ব পুঁজিবাদী-সাম্রাজ্যবাদী অর্থনীতির প্রাণকেন্দ্র ওয়াল স্ট্রিট দখল করার ডাক দিয়ে। এই দুই আন্দোলনের লক্ষ্য একটাই—শোষণ থেকে মুক্তি, সাম্রাজ্যবাদের যুদ্ধ-লুটতরাজ-দখলদারি থেকে মুক্তি।
আইএপিএসসিসির সভাপতি যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল রামজে ক্লার্কের লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান যুক্তরাষ্ট্রের ওয়ার্কার্স ওয়ার্ল্ড পার্টির সম্পাদক-মণ্ডলীর সদস্য সারা ফ্লাউন্ডার্স। তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র মানবতা, শান্তি ও সভ্যতার শত্রু। দেশের অভ্যন্তরেই আমরা মার্কিন শাসিতদের সাম্রাজ্যবাদী নীতির বিরুদ্ধে লড়ছি।’
আইএপিএসসিসির সাধারণ সম্পাদক ও সোশ্যালিস্ট ইউনিটি সেন্টার অব ইন্ডিয়ার (কমিউনিস্ট) পলিটব্যুরোর সদস্য মানিক মুখার্জি বলেন, এমন একটি সময়ে এই সম্মেলন হচ্ছে, যখন তিউনিসিয়া থেকে মিসর, ওয়াল স্ট্রিট—সর্বত্র পুঁজিবাদ-সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে মানুষ বিক্ষুব্ধ।
মানিক মুখার্জি বলেন, ‘সাম্রাজ্যবাদী শক্তি যত দিন টিকে থাকবে, তত দিন শান্তি প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়। কাজেই বিশ্বশান্তি চাইলে সাম্রাজ্যবাদবিরোধী লড়াই শুরু করতে হবে। তবে সেটি কেবল মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ নয়, ভারতীয় সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধেও লড়তে হবে। প্রয়োজনে সারা বিশ্বে সাম্রাজ্যবাদবিরোধী শক্তির ঐক্য গড়ে তুলতে হবে।
সম্মেলনে নেপালের ঐক্যবদ্ধ কমিউনিস্ট পার্টির (মাওবাদী) চেয়ারম্যান পুষ্প কমল দহল প্রচণ্ডের উপস্থিত থাকার কথা থাকলেও দেশটির সংবিধান প্রণয়নের শেষ মুহূর্তের কাজের জন্য তিনি আসতে পারেননি। তাঁর লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান মাওবাদী আরেক নেতা এবং দেশটির সাবেক উপপ্রধানমন্ত্রী কৃষ্ণ বাহাদুর মাহারা। প্রচণ্ডের লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ‘আমি এই সম্মেলনে এই বার্তাই পৌঁছে দিতে চাই, শোষণ-নিপীড়নের বিরুদ্ধে যেকোনো আন্দোলনে আমরা এক কাতারে থাকতে অঙ্গীকারবদ্ধ।’
উদ্বোধনী অধিবেশনে আরও বক্তব্য দেন ভেনেজুয়েলার শ্রমিক নেত্রী মারিয়া মারসেলা মাসপেরো ফার্নান্দেজ, আরব ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর কমিউনিটি অ্যান্ড সলিডারিটির সভাপতি মান বাছুর, পাকিস্তানের কমিউনিস্ট পার্টির নেতা মোহাম্মদ ইকবাল, কোরিয়ান কমিটি ফর আফ্রো-এশিয়ান সলিডারিটির সাধারণ সম্পাদক রি ছং, ফিলিস্তিনের আলদামির অ্যাসোসিয়েশন ফর হিউম্যান রাইটসের সংগঠক খলিল এম জে আবু সামলা এবং বাংলাদেশের তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির আহ্বায়ক শেখ মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ।
অনুষ্ঠানের শুরুতে মঞ্চের পাশে নির্মিত শহীদ বেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে এবং সাম্রাজ্যবাদ ও গণতন্ত্রের লড়াইয়ে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। পরে সম্মেলনে অংশ নেওয়া প্রতিটি দেশের পক্ষ থেকে বেলুন উড়িয়ে সম্মেলনের উদ্বোধন ঘোষণা করা হয়। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন বাসদের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য বজলুর রশিদ।
সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বাসদের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মুবিনুল হায়দার চৌধুরী, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি মনজুরুল আহসান খান, সাধারণ সম্পাদক মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু, ভাষাসৈনিক আবদুল মতিন, কলামিস্ট সৈয়দ আবুল মকসুদ, আনু মুহাম্মদ প্রমুখ।
আয়োজকেরা জানান, আজ ও আগামীকাল নাট্যমঞ্চের কাজী বশির মিলনায়তন ও শিল্পকলা একাডেমী মিলনায়তনে বিষয়ভিত্তিক সেমিনার চলবে। আগামীকাল বিকেলে ঢাকা ঘোষণার মধ্য দিয়ে এই সম্মেলন শেষ হবে। prothom-alo
0 comments:
Post a Comment