Total Pageviews

Feedjit Live

Wednesday, November 16, 2011

আদালতে এফবিআই কর্মকর্তা ডেবরার সাক্ষ্য সিঙ্গাপুর সিটি ব্যাংকের অর্থ ভিসা কার্ডে খরচ করেন তারেক

  • এফবিআইয়ের কর্মকর্তা ডেবরা লাপ্রেভেট এফবিআইয়ের কর্মকর্তা ডেবরা লাপ্রেভেট
1 2
বিদেশে অবৈধভাবে অর্থ লেনদেনের মামলায় তারেক রহমান ও তাঁর ঘনিষ্ঠ বন্ধু গিয়াসউদ্দিন আল মামুনের বিরুদ্ধে আজ বুধবার সাক্ষ্য দিয়েছেন মার্কিন তদন্ত সংস্থা এফবিআইয়ের কর্মকর্তা ডেবরা লাপ্রেভেট। আদালতে সাক্ষীর কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে তিনি প্রথমেই জানান, তিনি রাজনৈতিকভাবে প্রভাবিত হয়ে নয় বরং স্বেচ্ছায় এ সাক্ষ্য দিচ্ছেন।
আদালতকে ডেবরা বলেন, বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে বাংলাদেশ সরকার এবং যুক্তরাষ্ট্র সরকারের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক সই হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে তত্কালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলের আগে বিদেশে অর্থপাচার ও অবৈধভাবে লেনদেনের বিষয়ে তদন্ত করার জন্য যুক্তরাষ্ট্র সরকারকে ২০০৮ সালে অনুরোধ করা হয়। এর ভিত্তিতে যুক্তরাষ্ট্র সরকার এফবিআইকে বিষয়টি তদন্ত করতে নির্দেশ দেয়।
ডেবরা আরও জানান, তদন্তকালে বাংলাদেশের কয়েকজন ব্যক্তির অবৈধ অর্থ লেনদেনের তথ্য পাওয়া যায়। এর মধ্যে দেখা যায়, গিয়াসউদ্দিন আল মামুন সিঙ্গাপুরের সিটি ব্যাংকে নিজের পাসপোর্ট ইস্যু করে একটি হিসাব খোলেন। আর মামুনের ওই হিসাবের লেনদেন বিষয়ে তদন্ত করার সময় তারেক রহমানের বিষয়ে তথ্য পাওয়া যায়। মামুন তাঁর হিসাব থেকে তারেকের হিসাবে টাকা পাঠান। সেখান থেকে তারেক দুটি ভিসা কার্ডের মাধ্যমে প্রায় ৪০ লাখ টাকা তুলে বিভিন্ন দেশ সফর করেন ও কেনাকাটা করেন। এ ছাড়া খাদিজা ইসলাম নামের এক ব্যক্তির হিসাব থেকে সাত লাখ ইউএস ডলার মামুনের ব্যাংক হিসাবে জমা হয়।
ঢাকার বিশেষ জজ-৩-এর বিচারক মোজাম্মেল হোসেনের আদালতে আজ বুধবার বেলা ১১টা থেকে দেড়টা পর্যন্ত এ বিচারকাজ অনুষ্ঠিত হয়। বাদীর পক্ষে মোশাররফ হোসেন, আনিসুল হক আর রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম মামলা পরিচালনা করেন। আদালত আগামী ৮ ডিসেম্বর মামলার পরবর্তী সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ধার্য করেছেন।
সাক্ষ্য দেওয়ার একপর্যায়ে ডেবরা জানান, এ বিষয়ে তদন্ত শেষে সাক্ষীর স্বাক্ষর-সংবলিত ২২৯ পৃষ্ঠার প্রতিবেদন যুক্তরাষ্ট্রের বাংলাদেশ দূতাবাসের মাধ্যমে অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়ে পাঠানো হয়। একই সঙ্গে সিঙ্গাপুরে অবস্থিত বাংলাদেশের দূতাবাসের মাধ্যমে ৩৮ পৃষ্ঠার তদন্ত প্রতিবেদনও অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়ে পাঠানো হয়। আর আজ ওই প্রতিবেদনগুলোর স্বাক্ষরিত ফটোকপি আদালতে দাখিল করা হয়।
এর আগে সকালে এজলাস বসার পরপরই মামুনের আইনজীবীরা ডেবরাকে সাক্ষী হিসেবে আদালতে আনতে দুদকের করা আবেদনের বিরোধিতা করেন এবং ডেবরার সাক্ষ্য দেওয়ার আইনগত বৈধতা রয়েছে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। আদালত বিষয়টি শুনানি শেষে নাকচ করে দেন। এ পর্যায়ে তারেক-মামুনের আইনজীবীরা আদালত বর্জন করে আদালত প্রাঙ্গণের মিছিল করেন।
২০০৯ সালের ২৬ অক্টোবর ক্যান্টনমেন্ট থানায় বিদেশে অর্থপাচারের অভিযোগে তারেক রহমান ও তাঁর বন্ধু গিয়াসউদ্দিন আল মামুনের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। গত বছরের ২ জুলাই তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়। তারেক রহমান তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে জামিন নিয়ে চিকিত্সার জন্য যুক্তরাজ্য যান। এখনো তিনি ওই দেশে আছেন। মামুন আছেন কারাগারে।
অভিযোগপত্রে বলা হয়, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার ছেলে তারেক রহমানের প্রভাব খাটিয়ে বিভিন্ন কোম্পানি ও সংস্থাকে কাজ পাইয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে তাঁর বন্ধু মামুন অবৈধভাবে অর্থ আদায় করেন। তারেক রহমান নিজেকে আড়াল করতে মামুনের মাধ্যমে ২০০৩ থেকে ২০০৭ সালের মধ্যে বাংলাদেশ থেকে বিভিন্ন পথে মোট ২০ কোটি ৪১ লাখ ২৫ হাজার টাকা সিঙ্গাপুরে পাচার করেন। তারেক রহমানের অবৈধভাবে অর্জিত অর্থই সিঙ্গাপুরের সিটি ব্যাংকে মামুনের হিসাবে রক্ষিত ছিল।

0 comments:

Post a Comment

Twitter Delicious Facebook Digg Stumbleupon Favorites More