Total Pageviews

Feedjit Live

Sunday, November 27, 2011

সরকারের মাথা খারাপ হয়ে গেছে: খালেদা


  বিরোধী দলের রোড মার্চে জনগণের সাড়ায় সরকার দিশেহারা হয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া।

রোববার বিকালে খুলনা সার্কিট হাউজ মাঠে জনসভায় খালেদা বলেন, “রোড মার্চের গণজাগরণে সরকারের মাথা খারাপ হয়ে গেছে। প্রধানমন্ত্রী নিজের কাজ-কর্ম বাদ দিয়ে গাড়ির হিসাব কষতে কাগজ-কলম নিয়ে বসেছেন।”

তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি পুনর্বহাল ও সরকারের পদত্যাগ দাবিতে এ জনসভার মধ্য দিয়ে খুলনা অভিমুখে রোডমার্চের সমাপ্তি টানেন বিরোধী দলের নেতা।

এর আগে সাড়ে চার ঘণ্টা রোড মার্চ শেষে বিকাল ৪টার দিকে গাড়িবহর নিয়ে খুলনা সার্কিট হাউজের জনসভাস্থলে পৌঁছেন খালেদা জিয়া। বিকাল ৪টা ৪০ মিনিটে তিনি বক্তব্য শুরু করেন।

এখানে পৌনে এক ঘণ্টার বক্তব্যে তিনি সরকারের ব্যর্থতা, অপশাসন, দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা, টিপাইমুখ বাঁধ প্রকল্প, খুলনার রামপাল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্প, সরকার বিরোধী আন্দোলনসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেন।

সরকারের উদ্দেশে বিএনপি চেয়ারপার্সন বলেন, “ক্ষমতা চিরস্থায়ী করার জন্য তারা সংবিধান সংশোধন করেছেন। মিলন হত্যাকারী খুনি এরশাদকে পাশে নিয়ে বিরোধী দল বানাবেন, তা হতে দেওয়া হবে না।”

দল ক্ষমতায় গেলে ডা. মিলনসহ অন্যান্য হত্যার বিচার করার প্রতিশ্র“তি দেন তিনি।

মহানগর বিএনপির উদ্যোগে এই জনসভা হয়।

সরকারের সমালোচনা এবং শেখ হাসিনার প্রতি ইঙ্গিত করে খালেদা বলেন, “এই সরকার লুটপাট ছাড়া কোনো উন্নয়ন করেনি। আওয়ামী লীগ চিরস্থায়ীভাবে ক্ষমতা ধরে রাখতে চায়। এজন্য তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি বাতিল করেছে। ক্ষমতায় থাকতে না পারলে তারা দেশ থেকে চলে যাবে। কারণ সহায়-সম্পত্তি, ছেলে-মেয়ে সব কিছু তাদের বিদেশে।’’

বক্তৃতায় বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান বিরোধী দলীয় নেতা।

গত ৩০ জুন পঞ্চদশ সংবিধান সংশোধনীর মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল হয়। এর আগে তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি বিষয়ক সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল করে সর্বোচ্চ আদালত।

বিএনপি শুরু থেকেই তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলের বিরোধিতা করে আসছিল।

রামপালে কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্প নয়

খুলনার রামপালে ভারত থেকে কয়লা এনে বিদ্যুৎ প্রকল্প করার বিরোধিতা করে খালেদা জিয়া বলেন, “এই প্রকল্প হলে আমাদের সুন্দরবন শেষ হয়ে যাবে। সেখানকার জীব-বৈচিত্র, পশু-পাখি সব কিছু মরে যাবে। এর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। রামপালে কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্প হতে দেওয়া হবে না।”

খুলনার বিভিন্ন সমস্যার কথা উল্লেখ করে সাবেক প্রধানমন্ত্রী এই অঞ্চলের আইলা ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসন, সাতক্ষীরা ও খুলনার জলাবদ্ধাা দূর করার দাবি জানান।

তিনি বলেন, “বিএনপি ক্ষমতায় গেলে খুলনা অঞ্চলে অতীতের মতো আরো উন্নয়ন করবো।”

যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বিএনপিও চায়

স্বাধীনতা ও মানবতাবিরোধীদের বিচার বিএনপি চায়- এ মন্তব্য করে বিরোধীদলীয় নেতা বলেন, “তবে এখন যাদের আটক করে দলীয় লোকজনকে দিয়ে ট্রাইব্যুনালে বিচার হচ্ছে, তা গ্রহণযোগ্য নয়।”

এ সময় তিনি জামায়াত নেতাসহ সব রাজবন্দিদের মুক্তি দাবি করেন।

আওয়ামী লীগের অধীনে নির্বাচন নয়

বর্তমান সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার ঘোষণা দিয়ে খালেদা জিয়া বলেন, “ক্ষমতা চিরস্থায়ী করতে তারা সংবিধান সংশোধন করেছে। সংবিধান থেকে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ও আল্লাহর ওপর আস্থা-বিশ্বাস উঠিয়ে দিয়েছে। এখন আওয়ামী লীগ বলছে, তাদের অধীনে নির্বাচন করতে হবে। আমি বলে দিতে চাই- আওয়ামী লীগের অধীনে এদেশে আর কোনো নির্বাচন হবে না।”

সব দলের সঙ্গে আলোচনা করে নির্বাচন কমিশন গঠন করার দাবিও জানান তিনি।

টিপাইমুখ বাঁধ

খালেদা জিয়া সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, “এই বাঁধ হলে দেশের মহাসর্বানাশ হয়ে যাবে। এ বাঁধ নিয়ে সিলেট উত্তাল হয়ে উঠেছে। সরকার কোনো কথা বলছে না। আমরা সরকারকে বলবো, টিপাইমুখ বাঁধ নিয়ে শক্ত অবস্থান নিন। নইলে ক্ষমতা থেকে সরে দাঁড়ান।”

“ভারতের সঙ্গে আমাদের বন্ধুত্ব আছে, থাকবে। কিন্তু টিপাইমুখ বাঁধ নির্মাণ ও ভারতের দক্ষিণ পূর্বাঞ্চলে গ্যাস উত্তোলনে কোনো ভারি যন্ত্রাংশ বাংলাদেশ দিয়ে যেতে দেওয়া হবে না”, যোগ করেন তিনি।

মহানগর বিএপির সভাপতি কেন্দ্রীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক সাংসদ নজরুল ইসলাম মঞ্জু সভাপতিত্বে জনসভায় অন্যদের মধ্যে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির সভাপতি অলি আহমেদ, জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর এ কে এম নাজির আহমেদ, খেলাফত মজলিশের চেয়ারম্যান মওলানা মুহাম্মদ ইসহাক, ইসলামী ঐক্যজোটের মহাসচিব আবদুল লতিফ নেজামী, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির মহাসচিব শামীম আল মামুন, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির সভাপতি শফিউল আলম প্রধান, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, ন্যাপ চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানি প্রমুখ নেতারা বক্তব্য দেন।

এ ছাড়া বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মওদুদ আহমেদ, তরিকুল ইসলাম, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায় প্রমুখ নেতা বক্তব্য দেন।

সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে খালেদা জিয়া ঢাকার উদ্দেশে রওয়ানা দেন।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম

0 comments:

Post a Comment

Twitter Delicious Facebook Digg Stumbleupon Favorites More