![]() |
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
লন্ডন, অগাস্ট ০৮ (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)- উত্তর লন্ডনের টোটেনহ্যামে ঘটে যাওয়া বিক্ষুব্ধ জনতার দাঙ্গা রোববার রাতে আরও কয়েকটি এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে। দক্ষিণ লন্ডনের ব্রিক্সটন, ক্রয়ডন, পূর্ব লন্ডনের ওয়ালথামস্টো, চিংফোর্ড, সেন্ট্রাল লন্ডনের অক্সফোর্ড সার্কাস, উত্তর লন্ডনের হ্যাকনি, এনফিলড্, পন্ডার্স এন্ড ও পালমার্স গ্রিনে রোববার রাতে দোকান পাট ভাংচুর ও মালামাল লুট হয়েছে। কিছু এলাকায় পুলিশের গাড়িতে ও দোকানপাটে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়।
শনিবার রাতে উত্তর লন্ডনের টোটেনহ্যামে জনতা-পুলিশ সংঘর্ষে ২৬ পুলিশ আহত হয় ও ৫৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। বৃহস্পতিবার রাতে পুলিশের গুলিতে নিহত কৃষ্ণাঙ্গ যুবক মার্ক ডুগাল এর মৃত্যুর প্রতিবাদে বিচারের দাবিতে কয়েকশ' জনতা টোটেনহ্যাম পুলিশ স্টেশনের সামনে বিক্ষোভ করে। বিক্ষুব্ধ জনতা পুলিশের কয়েকটি গাড়িতে ও একটি বাসে আগুন ধরিয়ে দেয়। এরপর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে তারা পুলিশ স্টেশনের নিকটবর্তী দোকানপাটের মালামাল লুট করে পেট্রল বোমা ও মলোটভ ককটেল নিক্ষেপ করে। রোববার রাতে আবার দাঙ্গার আশংকায় টোটেনহ্যাম এলাকায় বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়। কিন্তু লন্ডন মহানগরীর বিভিন্ন এলাকা থেকে বিচ্ছিন্ন ঘটনার খবর আসতে থাকে। সন্ধ্যায় তরুণরা বিভিন্ন এলাকা থেকে উত্তর লন্ডনে টোটেনহ্যামে থেকে ৬ মাইল দূরে এনফিলড্-এ সমবেত হয়। বিভিন্ন দলে বিভক্ত হয়ে তারা ভাংচুর ও লুটতরাজ চালায়। সে সময় মোতায়েনরত দাঙ্গা পুলিশের সাথে তারা সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। অন্ততপক্ষে এক ডজন দোকান পাটে ভাংচুর মালামাল লুট হয়।
লন্ডনের বিভিন্ন এলাকার এসব সহিংস ঘটনা পূর্ব পরিকল্পিত বলে পুলিশ মনে করছে। এজন্যে ফেইসবুক, টুইটারের মতো সোস্যাল মিডিয়া ও মোবাইল ফোন অনেকাংশে দায়ী বলে তারা মনে করছেন।
এদিকে দক্ষিণ লন্ডনের ব্রিক্সটনেও রোববার রাতে জনতা কয়েকটি দোকানে ভাংচুর করে লুঠতরাজ চালায়। ইলেক্ট্রনিকস জিনিসপত্র, কাপড়, মোবাইল ফোন ইত্যাদি লুট করে মিনিটের মধ্যে তারা পালিয়ে যায়। ফুটলকার নামের একটি জুতার দোকানে লুটতরাজকারীরা আগুন ধরিয়ে দেয়। টোটেনহ্যামের মতো ব্রিক্সটনেও ১৯৮১ সালে ভয়াবহ দাঙ্গা হয়। পুলিশসহ প্রায় তিনশতাধিক মানুষ মার্গারেট থেচারের শাসনামলের সেই দাঙ্গায় আহত হয়।
পুলিশ জানায় রোববার রাতে পূর্ব লন্ডনের চিংফোর্ডে একটি দোকানে লুটপাট বন্ধের সময় দুই জন পুলিশ কর্মকর্তা আহত হয়।
সেন্ট্রাল লন্ডনের ব্যস্ততম শপিং এলাকা অক্সফোর্ড সার্কাসে ৫০ জনের বেশি তরুণ একত্রিত হয়ে কয়েকটি দোকানে হামলা করে। এসময় পুলিশ এসে তাদের ছত্রভঙ্গ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
ইজলিংটনে একদল যুবক পুলিশের গাড়িতে হামলা চালিয়ে কাঁচ ভাংচুর করে। পন্ডার্স এলাকায় টেসকো সুপার মার্কেটে ভাংচুর করে মালামাল লুট করে দুষ্কৃতকারীরা।
লন্ডনের হ্যাকনির কিংসল্যান্ড লোডে শপিং সেন্টারেও কয়েকটি দোকানে ভাংচুর করে মালামাল লুট করে নিয়ে যায় দুষ্কৃতকারীরা।
মেট্রপলিটান পুলিশের কমান্ডার ক্রিস্টিন জোনস বলেন, আমরা একটি চ্যালেঞ্জ পরিস্থিতির সম্মুখীন। বিভিন্ন এলাকায় ছোটখাটো সহিংস ঘটনা ও লুটতরাজের ঘটনা ঘটছে। আমরা সারা লন্ডনে পুলিশের ইউনিট মোতায়েন করেছি এবং যেখানেই অপরাধের খবর পাচ্ছি সেখানে দ্রুত মুভ করছি।
ওদিকে টোটেনহ্যামে পুলিশের গুলিতে নিহত মার্ক ডুগালের পরিবারের সাথে তদন্তকারী ইন্ডিপেন্ডেন্ট পুলিশ কমপ্লেইন্ট কমিশনের কর্মকর্তারা সারাদিন আলোচনা করেছেন। তারা এর একটি নিরপেক্ষ সুষ্ঠু তদন্তের আশ্বাস দিয়েছেন মার্ক ডুগালের আত্মীয়স্বজনকে। কমিশনের কর্মকর্তা র্যাচেল সারফন্টাইন বলেন, মৃত্যুর তদন্ত কাজ দ্রুত সম্পন্ন করার বিষয়টিকেই প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম




0 comments:
Post a Comment