বিশ্ব
রাজনীতির জন্য ২০১২ সাল বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। জাতিসংঘের পাঁচটি স্থায়ী সদস্য
রাষ্ট্রের মধ্যে চারটিতেই ক্ষমতাকেন্দ্রে বদলের হাওয়া বইছে। পরাশক্তির দেশে
নেতৃত্বের আসন্ন এই পরিবর্তনে বদলে যেতে পারে বিশ্ব রাজনীতি ও অর্থনীতি।
আগামী বছরের ৬ নভেম্বর যুক্তরাষ্ট্রে, ২২ এপ্রিল ও ৬ মে ফ্রান্সে এবং ৪ মে রাশিয়ায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এ ছাড়া চীনে আগামী বছরের অক্টোবরে অনুষ্ঠিত হবে ক্ষমতাসীন দলের পার্টি কংগ্রেস। ওই কংগ্রেসের মাধ্যমে চীনের প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রী পদে পরিবর্তনের পাশাপাশি বেইজিংয়ের ক্ষমতা কাঠামোতে আসবে এক ঝাঁক নতুন নেতৃত্ব।
পরিবর্তনের এই হাওয়ায় কার ভরাডুবি ঘটবে, কে হবেন নতুন নেতা, নতুনদের নীতি কেমন হবে, বিশ্ব রাজনীতি ও অর্থনীতিতে সম্ভাব্য এই পরিবর্তনের প্রভাব কী হবে—এসব নিয়ে চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ।
বিশ্লেষকদের মতে, আগামী বছর যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, রাশিয়া ও চীনের নেতৃত্ব তাঁদের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি নিয়ে ব্যস্ত থাকবেন। ফলে অর্থনৈতিক সংকট ও জলবায়ু পরিবর্তনের মতো গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক ইস্যুতে এই রাষ্ট্রগুলোর ভূমিকা হবে সংকীর্ণ। এতে করে আন্তর্জাতিক রাজনীতি, অর্থনীতি ও বৈশ্বিক স্থিতিশীলতার অগ্রগতিতে অচলাবস্থা দেখা দিতে পারে। এ কারণেই বিশ্লেষকেরা একে একটি উদ্বেগ হিসেবে বিবেচনা করছেন।
বিশ্লেষকদের মতে, ২০১২ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে সামনে রেখে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ব্যস্ত সময় কাটাবেন। ফলে তাঁর পক্ষে বাণিজ্য বা জলবায়ু বিষয়ে কোনো নতুন আন্তর্জাতিক চুক্তিতে অবতীর্ণ হওয়াটা কঠিন হয়ে পড়বে। তা ছাড়া এসব বিষয় নিয়ে তিনি প্রতিপক্ষের বিরোধিতার মুখেও পড়বেন।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান দলের সম্ভাব্য মনোনয়নপ্রত্যাশী মিট রমনে ইতিমধ্যে ঘোষণা দিয়েছেন, ক্ষমতায় গেলে এবং চীন তাদের মুদ্রানীতিতে পরিবর্তন না করলে, বেইজিংয়ের ব্যাপারে তিনি কঠোর হবেন।
বর্তমানে ওয়াশিংটন ও বেইজিংয়ের মধ্যে বিভিন্ন বিষয়ে মতপার্থক্য থাকলেও চীনের বর্তমান নেতৃত্বের ওপর ওবামার কিছুটা হলেও আস্থা আছে। তবে দেশটির বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ও প্রেসিডেন্ট ২০১২ সালের শেষ নাগাদ নতুনদের কাছে তাঁদের দায়িত্ব ছেড়ে দেবেন। শুধু তা-ই নয়, এই সময়ে চীনের প্রায় ৭০ শতাংশ নেতৃত্বে পরিবর্তন আসবে। চীনের ক্ষমতা কাঠামোতে আসন্ন এই পরিবর্তন পশ্চিমাদের ভাবিয়ে তুলেছে। কারণ, আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নতুন নেতৃত্ব যেমন পরিচিত নয়, তেমনি তাঁরা অধিক জাতীয়তাবাদী ও রক্ষণশীল বলেই পরিচিত।
রাশিয়ার ক্ষমতায়ও পরিবর্তন আসন্ন। সেখানে আসছে পুতিনবাদ। আগামী মার্চে দেশটিতে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ভ্লাদিমির পুতিন আবারও ক্রেমলিনে ফিরে আসার স্বপ্নে বিভোর। বর্তমান প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভ আগেই ঘোষণা দিয়েছেন, তিনি ওই নির্বাচনে প্রার্থী হচ্ছেন না। ফলে দেশটির ক্ষমতায় পরিবর্তন নিশ্চিত। রাশিয়ার ক্ষমতায় পরিবর্তন আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে বড় ধরনের প্রভাব ফেলবে বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।
মেদভেদেভের পররাষ্ট্রনীতি বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি তাঁর মনোভাব অপেক্ষাকৃত নমনীয়। ন্যাটোর নেতৃত্বাধীন লিবিয়া অভিযানের ব্যাপারে প্রেসিডেন্ট মেদভেদেভের বিরোধিতা ছিল অপেক্ষাকৃত নরম প্রকৃতির। তবে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পুতিন এ অভিযানের তীব্র বিরোধিতা করেছেন।
প্রেসিডেন্ট হিসেবে বিশ্ববাসীর কাছে মেদভেদেভ এটা পরিষ্কার করেছেন যে তিনি আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়তে আগ্রহী। তবে স্পষ্টত এ ব্যাপারে পুতিনের অবস্থান পুরোপুরি বিপরীত।
চলমান ইউরো সংকট সমাধানের ক্ষেত্রে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট নিকোলাস সারকোজি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন। আগামী বছরই দেশটিতে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। দেশের রাজনীতিতে সারকোজির অবস্থান খুব একটা সুবিধাজনক নয়। নির্বাচনে সারকোজির ভরাডুবি ঘটলে ইউরোপের রাজনীতি ও অর্থনীতিতেও তার প্রভাব পড়বে।
জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের আরেক স্থায়ী সদস্য ব্রিটেনের পার্লামেন্ট নির্বাচনের এখনো অনেক দেরি। তবে দেশটির বর্তমান ক্ষমতাসীন জোটের ঐক্য খুব একটা মজবুত নয়। সেখানেও অঘটন ঘটতে পারে যেকোনো সময়। সব মিলিয়ে সামনে বিশ্ব রাজনীতির জন্য অপেক্ষা করছে এক অনিশ্চয়তার বছর।—দ্য ইকনোমিস্ট অবলম্বনে। প্রথম আলো
আগামী বছরের ৬ নভেম্বর যুক্তরাষ্ট্রে, ২২ এপ্রিল ও ৬ মে ফ্রান্সে এবং ৪ মে রাশিয়ায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এ ছাড়া চীনে আগামী বছরের অক্টোবরে অনুষ্ঠিত হবে ক্ষমতাসীন দলের পার্টি কংগ্রেস। ওই কংগ্রেসের মাধ্যমে চীনের প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রী পদে পরিবর্তনের পাশাপাশি বেইজিংয়ের ক্ষমতা কাঠামোতে আসবে এক ঝাঁক নতুন নেতৃত্ব।
পরিবর্তনের এই হাওয়ায় কার ভরাডুবি ঘটবে, কে হবেন নতুন নেতা, নতুনদের নীতি কেমন হবে, বিশ্ব রাজনীতি ও অর্থনীতিতে সম্ভাব্য এই পরিবর্তনের প্রভাব কী হবে—এসব নিয়ে চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ।
বিশ্লেষকদের মতে, আগামী বছর যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, রাশিয়া ও চীনের নেতৃত্ব তাঁদের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি নিয়ে ব্যস্ত থাকবেন। ফলে অর্থনৈতিক সংকট ও জলবায়ু পরিবর্তনের মতো গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক ইস্যুতে এই রাষ্ট্রগুলোর ভূমিকা হবে সংকীর্ণ। এতে করে আন্তর্জাতিক রাজনীতি, অর্থনীতি ও বৈশ্বিক স্থিতিশীলতার অগ্রগতিতে অচলাবস্থা দেখা দিতে পারে। এ কারণেই বিশ্লেষকেরা একে একটি উদ্বেগ হিসেবে বিবেচনা করছেন।
বিশ্লেষকদের মতে, ২০১২ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে সামনে রেখে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ব্যস্ত সময় কাটাবেন। ফলে তাঁর পক্ষে বাণিজ্য বা জলবায়ু বিষয়ে কোনো নতুন আন্তর্জাতিক চুক্তিতে অবতীর্ণ হওয়াটা কঠিন হয়ে পড়বে। তা ছাড়া এসব বিষয় নিয়ে তিনি প্রতিপক্ষের বিরোধিতার মুখেও পড়বেন।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান দলের সম্ভাব্য মনোনয়নপ্রত্যাশী মিট রমনে ইতিমধ্যে ঘোষণা দিয়েছেন, ক্ষমতায় গেলে এবং চীন তাদের মুদ্রানীতিতে পরিবর্তন না করলে, বেইজিংয়ের ব্যাপারে তিনি কঠোর হবেন।
বর্তমানে ওয়াশিংটন ও বেইজিংয়ের মধ্যে বিভিন্ন বিষয়ে মতপার্থক্য থাকলেও চীনের বর্তমান নেতৃত্বের ওপর ওবামার কিছুটা হলেও আস্থা আছে। তবে দেশটির বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ও প্রেসিডেন্ট ২০১২ সালের শেষ নাগাদ নতুনদের কাছে তাঁদের দায়িত্ব ছেড়ে দেবেন। শুধু তা-ই নয়, এই সময়ে চীনের প্রায় ৭০ শতাংশ নেতৃত্বে পরিবর্তন আসবে। চীনের ক্ষমতা কাঠামোতে আসন্ন এই পরিবর্তন পশ্চিমাদের ভাবিয়ে তুলেছে। কারণ, আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নতুন নেতৃত্ব যেমন পরিচিত নয়, তেমনি তাঁরা অধিক জাতীয়তাবাদী ও রক্ষণশীল বলেই পরিচিত।
রাশিয়ার ক্ষমতায়ও পরিবর্তন আসন্ন। সেখানে আসছে পুতিনবাদ। আগামী মার্চে দেশটিতে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ভ্লাদিমির পুতিন আবারও ক্রেমলিনে ফিরে আসার স্বপ্নে বিভোর। বর্তমান প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভ আগেই ঘোষণা দিয়েছেন, তিনি ওই নির্বাচনে প্রার্থী হচ্ছেন না। ফলে দেশটির ক্ষমতায় পরিবর্তন নিশ্চিত। রাশিয়ার ক্ষমতায় পরিবর্তন আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে বড় ধরনের প্রভাব ফেলবে বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।
মেদভেদেভের পররাষ্ট্রনীতি বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি তাঁর মনোভাব অপেক্ষাকৃত নমনীয়। ন্যাটোর নেতৃত্বাধীন লিবিয়া অভিযানের ব্যাপারে প্রেসিডেন্ট মেদভেদেভের বিরোধিতা ছিল অপেক্ষাকৃত নরম প্রকৃতির। তবে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পুতিন এ অভিযানের তীব্র বিরোধিতা করেছেন।
প্রেসিডেন্ট হিসেবে বিশ্ববাসীর কাছে মেদভেদেভ এটা পরিষ্কার করেছেন যে তিনি আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়তে আগ্রহী। তবে স্পষ্টত এ ব্যাপারে পুতিনের অবস্থান পুরোপুরি বিপরীত।
চলমান ইউরো সংকট সমাধানের ক্ষেত্রে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট নিকোলাস সারকোজি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন। আগামী বছরই দেশটিতে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। দেশের রাজনীতিতে সারকোজির অবস্থান খুব একটা সুবিধাজনক নয়। নির্বাচনে সারকোজির ভরাডুবি ঘটলে ইউরোপের রাজনীতি ও অর্থনীতিতেও তার প্রভাব পড়বে।
জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের আরেক স্থায়ী সদস্য ব্রিটেনের পার্লামেন্ট নির্বাচনের এখনো অনেক দেরি। তবে দেশটির বর্তমান ক্ষমতাসীন জোটের ঐক্য খুব একটা মজবুত নয়। সেখানেও অঘটন ঘটতে পারে যেকোনো সময়। সব মিলিয়ে সামনে বিশ্ব রাজনীতির জন্য অপেক্ষা করছে এক অনিশ্চয়তার বছর।—দ্য ইকনোমিস্ট অবলম্বনে। প্রথম আলো
0 comments:
Post a Comment